মমতার মুখে ‘অশনিসংকেত’ পুলিশের দায়িত্ব পালন নিয়ে শঙ্কা

‘ভরসার’ পুলিশও কি তবে বিজেপির দখলে? মমতার মুখে ‘অশনিসংকেত’ ‘ভরসার’ পুলিশের দায়িত্ব পালন নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন তিনি।

বাংলাকে প্রায় দুর্গ বানিয়ে আট দফা ভোট সম্পূর্ণ কেন্দ্রীয় বাহিনীর নজরদারিতে করানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন কমিশন। এমনকী প্রথমে কমিশনের তরফে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল, বুথের ১০০ মিটারের মধ্যে রাজ্য পুলিশকে রাখাই হবে না। “রাজ্য পুলিশে ভরসা নেই, বাংলার পুলিশ তৃণমূলের দলদাসে পরিণত হয়েছে” বিজেপির এই অভিযোগ নতুন নয়। ভোটের আগে নির্বাচন কমিশনের কাছে এ নিয়ে বারবার অভিযোগ করেছে গেরুয়া শিবির। আর সেই সূত্রেই বাংলাকে প্রায় দুর্গ বানিয়ে আট দফা ভোট সম্পূর্ণ কেন্দ্রীয় বাহিনীর নজরদারিতে করানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন কমিশন। এমনকী প্রথমে কমিশনের তরফে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল, বুথের ১০০ মিটারের মধ্যে রাজ্য পুলিশকে রাখাই হবে না। পরে সেই অবস্থান পালটে পুলিশকে বুথের বাইরে রাখার সিদ্ধান্ত নেয় কমিশন।

কিন্তু তৃণমূলের ‘কাছের’ বলে পরিচিত পুলিশকে নিয়েই এবার অশনিসংকেত তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের গলায়। অনেক পুলিশ বিজেপির হয়ে ‘কাজ’ করবে বলেও এদিন অভিযোগ করেন মমতা। বাঁকুড়ার কোতুলপুরের সভা থেকে মমতা বলেন, ‘অনেক পুলিশ বিজেপির হয়ে কাজ করবে। অনেক দিল্লির পুলিশ আসবে।’ এমনকী দলীয় কর্মীদের উদ্দেশে তাঁর পরামর্শ, ‘ভোটের দিন বিরিয়ানি, চা খাবেন না কেউ দিলে। ওতে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে দেবে। লোভ করে এই এক মাস অন্য কিছু খাওয়া যাবে না।’ দলীয় কর্মীদের উদ্দেশে এই পরামর্শ আগেও দিয়েছেন মমতা। কিন্তু এদিন যেভাবে মমতার মুখে পুলিশকে নিয়ে আশঙ্কা উঠে এসেছে, তা বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।

বর্তমানে রাজ্যের পুলিশ-প্রশাসনের কমিশনের অধীনে রয়েছে। এমন সময়ে মমতার মুখে ‘অনেক পুলিশ বিজেপির হয়ে কাজ করবে’ দাবি রীতিমতো আলোড়ন ফেলেছে। এমনকী সাম্প্রতিক কালে মমতা-‘ঘনিষ্ঠ’ বহু পুলিশ অফিসারকেই তাঁদের বর্তমান পদ থেকে সরিয়ে দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। তাতে রাজ্য পুলিশের ডিজি’ও রয়েছেন। এছাড়াও বিজেপির অভিযোগক্রমে একাধিক আইপিএস, থানার ওসি’রাও রয়েছেন সেই তালিকায়। ফলে মমতা এখন পুলিশ দিয়ে বিজেপি বৈতরণী পার করতে পারেন বলেও মত অনেকের।

এর আগে জঙ্গলমহলের মা-বোনেদের হাতা-খুন্তি নিয়ে প্রস্তুত থাকার পরামর্শ দিয়েছিলেন মমতা। বলেছেন, ‘ঘরের দুয়ারে সাপ লুকিয়ে থাকে, বাঘ লুকিয়ে থাকে। সাপকে ঢুকতে দেওয়া যাবে না, বাঘকেও ঢুকতে দেওয়া যাবে না।’ ‘লুঠেরা’ বাহিনীর প্রসঙ্গ উল্লেখ করে বলেছিলেন, ‘মা-বোনেরা আপনাদের বলব, আপনারা ঘরেও কাজ করেন, বাইরের কাজও করেন। লুঠেরা বাহিনী এলে হাতা-খুন্তি নিয়ে তেড়ে যাবেন। তবে, আমরা বদলার বদলে বদলা চাই না, আমার দাঙ্গা চাই না। কিন্তু নিজেদের সবকিছু লুঠ করতে দেবেন না।’ রাজনৈতিক মহলে প্রশ্ন, তবে কি এবার পুলিশকেও সেই ‘বাহিনীর’ অন্তর্গতই করে দিলেন তৃণমূল নেত্রী?

সংবাদ সূত্রঃ নিউজ এইটিন