চট্টগ্রামে বঙ্গবন্ধুর নামে বড় স্থাপনার স্বপ্ন ছিলো বাবার: নওফেল

কর্ণফুলী নদীর তলদেশে নির্মাণাধীন টানেলটি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নামে নামকরণের প্রস্তাব দিয়েছিলেন শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল।

২০১৯ সালের ২১ জানুয়ারি একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর গঠিত মন্ত্রীসভার প্রথম বৈঠকে এ প্রস্তাব দেন তিনি।

তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ ও ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ নওফেলের এ প্রস্তাব সমর্থন করেন। সেতুর পরিবর্তে কর্ণফুলী নদীর তলদেশে টানেল নির্মাণের জন্য দীর্ঘদিন আন্দোলন করে আসা সাবেক সিটি মেয়র চট্টলবীর এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরীর সন্তান নওফেলের প্রস্তাবের পর টানেলের নাম বঙ্গবন্ধুর নামে করার জন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

বঙ্গবন্ধুর নামে কর্ণফুলী নদীর তলদেশে নির্মাণাধীন টানেলের নামকরণের প্রস্তাব নিয়ে সোমবার (২১ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় বাংলানিউজের সঙ্গে কথা বলেন শিক্ষা উপমন্ত্রী এবং চট্টগ্রাম-৯ আসনের সংসদ সদস্য মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল।

নওফেল বাংলানিউজকে বলেন, চট্টগ্রামে বঙ্গবন্ধুর নামে, বঙ্গবন্ধু পরিবারের কারও নামে বড় কোনো স্থাপনা না থাকায় বাবার আক্ষেপ ছিলো। তিনি টুঙ্গিপাড়ার মেজবানে, বিভিন্ন সময়ে আমাদের কাছে এটা নিয়ে আক্ষেপ করতেন।

কর্ণফুলী টানেলের প্রথম টিউবের খননকাজ সম্পন্ন‘বাবা বলতেন- চট্টগ্রামে বড় কিছু হলে সেটা বঙ্গবন্ধুর নামে হওয়া উচিত। আমি তো থাকবো না। তরুণ প্রজন্মের কাছে বঙ্গবন্ধুকে তুলে ধরতে বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশের ক্যাপাসিটি জানান দেয়, এমন বড় প্রকল্প তার নামে হলে আমার ভালো লাগতো। ’

নওফেল বলেন, টানেলের জন্য আমার বাবা আন্দোলন করেছেন। পদ্মাসেতুর পর টানেল বাংলাদেশের সেকেন্ড বিগেস্ট প্রকল্প। তাই আমি চিন্তা করেছি- এটা বঙ্গবন্ধুর নামে হলে বাবার স্বপ্ন পূরণ হবে। চট্টগ্রামে বঙ্গবন্ধুর নামে বড় একটি স্থাপনা হবে।

‘প্রথম মন্ত্রীসভায় আমি টানেলের নাম বঙ্গবন্ধুর নামে করার প্রস্তাব দেই। তথ্যমন্ত্রী এবং ভূমিমন্ত্রী তাতে সমর্থন দেন। বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই প্রস্তাব গ্রহণ করেন। এভাবেই কর্ণফুলী টানেল বঙ্গবন্ধুর নামে নামকরণ করা হয়। ’

চীনের সাংহাই শহরের আদলে বন্দরনগর চট্টগ্রাম শহরকে ‘ওয়ান সিটি, টু টাউন’ মডেলে গড়ে তুলতে নগরের পতেঙ্গা ও দক্ষিণ চট্টগ্রামের আনোয়ারার মধ্যে সংযোগ স্থাপনে কর্ণফুলী নদীর তলদেশে প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে টানেল নির্মাণের উদ্যোগ নেয় সরকার। ইতিমধ্যে এই প্রকল্পের ৬১ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে।

চীনের সহায়তায় দুই টিউবের এই টানেল নির্মাণকাজ শেষ হলে ৪ লেন দিয়ে ঘণ্টায় ৮০ কিলোমিটার গতিতে গাড়ি চলাচল করতে পারবে। কর্ণফুলী নদীর পূর্বপ্রান্তের প্রস্তাবিত শিল্প এলাকার উন্নয়ন ত্বরান্বিত হবে এবং পশ্চিম প্রান্তে অবস্থিত চট্টগ্রাম শহর, চট্টগ্রাম বন্দর ও বিমানবন্দরের সঙ্গে উন্নত ও সহজ যোগাযোগ ব্যবস্থা স্থাপিত হবে।

এতে ভ্রমণ সময় ও খরচ হ্রাস পাবে এবং পূর্বপ্রান্তের শিল্পকারখানার কাঁচামাল, প্রস্তুতকৃত মালামাল চট্টগ্রাম বন্দর, বিমানবন্দর ও দেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে পরিবহন প্রক্রিয়া সহজ হবে। কর্ণফুলী নদীর পূর্ব প্রান্তের সঙ্গে সহজ যোগাযোগ ব্যবস্থা স্থাপনের ফলে পূর্বপ্রান্তে পর্যটনশিল্প বিকশিত হবে।