ফিটনেস পরীক্ষায় সর্বোচ্চ স্কোর সাকিবের

দীর্ঘ এক বছর ক্রিকেটের বাইরে থাকলেও ফিটনেস নিয়ে যে ভালোই কাজ করেছেন সাকিব আল হাসান, তা বোঝা গেল বিপ টেস্টের ফলাফলে। বঙ্গবন্ধু টি-টোয়েন্টি কাপের আগে ফিটনেস পরীক্ষায় সর্বোচ্চ স্কোর করেছেন এই বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার।

বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) ট্রেনার তুষার কান্তি হাওলাদার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি অবশ্য সাকিবের বিপ টেস্টে প্রাপ্ত স্কোর জানাতে অপারগতা প্রকাশ করেন। তবে বোর্ডের একটি বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে, এক বছর পর ফিরে আসা সাকিব ১৩.৭ পয়েন্ট তুলেছেন, যা তিনদিন ধরে চলমান ফিটনেস টেস্টে সর্বোচ্চ স্কোর।

গত সোমবার (৯ নভেম্বর) থেকে শুরু হয়েছে ক্রিকেটারদের ফিটনেস টেস্ট। বিসিবি প্রেসিডেন্টস কাপে খেলা ক্রিকেটার ও হাই-পারফরম্যান্স (এইচপি) দলের ক্রিকেটারসহ মোট ১১৩ জন ক্রিকেটারকে এই ফিটনেস টেস্টে রাখা হয়।

নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে ফেরা সাকিবের বিপ টেস্ট প্রথমদিনেই হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ট্রেনারের সঙ্গে পরামর্শ করে সূচি পিছিয়ে নেন তিনি। ফিটনেস টেস্টের তৃতীয় দিনে আজ বুধিবার সকাল ১০টায় মিরপুর ইনডোরে বিপ টেস্টে অংশ নেন সাকিব। আর তাতেই বাজিমাত করলেন তিনি।

পাঁচ দলের বঙ্গবন্ধু টি-টোয়েন্টি উপলক্ষ্যে গত দুই দিনে বিসিবি’র নেয়া দুই ফিটনেস টেস্টের প্রথমদিন নিহাদুজ্জামান তোলেন সর্বোচ্চ ১৩.৪ পয়েন্ট। দ্বিতীয় দিন পেসার মেহেদী হাসান তোলেন ১৩.৬। সাকিবের আগে এটাই ছিল সর্বোচ্চ। বিপ টেস্টে পাশের জন্য বেঞ্চ মার্ক ধরা হয়েছিল ১১।

এর আগে প্রথমদিন আবদুর রাজ্জাক, মোহাম্মদ আশরাফুল, শাহরিয়ার নাফিসরা ১১-এর ওপর স্কোর পেয়েছেন। তবে বিপ টেস্টে ফেল করেছেন স্পিন অলরাউন্ডার নাসির হোসেন ও সোহাগ গাজী। ফিটনেস টেস্টে যারা পাশ করতে পারেননি তাদেরকে কোনোরকম ছাড় দেওয়া হবে না বলে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীন নান্নু।

আগামী ১২ নভেম্বর অনুষ্ঠিত হবে বঙ্গবন্ধু টি-টোয়েন্টি কাপের প্লেয়ার ড্রাফট। ফিটনেস টেস্টে উত্তীর্ণ ক্রিকেটার, জাতীয় দল, এইচপির খেলোয়াড় মিলিয়ে প্রায় শতাধিক ক্রিকেটার থাকছেন এই ড্রাফটে।

সাকিব আল হাসান বামহাতি মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান এবং বামহাতি অর্থোডক্স স্পিনার। তিনি ২৮ অক্টোবর ২০১৯ পর্যন্ত বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের টেস্ট ও টি২০ আন্তর্জাতিক সংস্করণে অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করছেন। বাংলাদেশের হয়ে খেলা সর্বশ্রেষ্ঠ ক্রিকেটার হিসেবে বিবেচিত সাকিবকে বিশ্বের অন্যতম সেরা অল-রাউন্ডার বলে গণ্য করা হয়। ১০ বছর ধরে শীর্ষ অল-রাউন্ডারের রেকর্ডের অধিকারী সাকিব এখনো একদিনের আন্তর্জাতিক ও টেস্ট ফরম্যাটে সর্বোচ্চ র‍্যাংকিং ধরে রেখেছেন।

২০০৬ সালের আগস্ট মাসে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে একদিনের আন্তর্জাতিক ম্যাচে তার অভিষেক হয়। সাকিব বাংলাদেশ ক্রীড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠান (বিকেএসপি)-এর একজন প্রাক্তন শিক্ষার্থী। সাকিব ২০১৫ সালের জানুয়ারিতে আইসিসির খেলোয়াড়দের র‍্যাংকিং অনুসারে টেস্ট, ওডিআই ও টি২০ প্রত্যেক ক্রিকেট সংস্করণে প্রথম ও একমাত্র ক্রিকেটার হিসেবে এক নম্বর অল-রাউন্ডার হওয়ার গৌরব অর্জন করেন।

তিনি প্রথম বাংলাদেশী ক্রিকেটার হিসেবে একদিনের ক্রিকেটে ৪,০০০ করার গৌরব অর্জন করেন এবং ২০১৭ সালের ১৩ই জানুয়ারি টেস্টে সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত রান (২১৭) সংগ্রাহক হন।

তিনি টি২০তে বাংলাদেশের দ্বিতীয় ব্যাটসম্যান হিসেবে ১০০০ রান পূর্ণ করেন ৷ এছাড়া দ্বিতীয় অলরাউন্ডার হিসেবে টি২০তে ১০০০ রান ও ৫০ উইকেট লাভ করেন। ২০১৯ সালের জুনে তিনি দ্রুততম খেলোয়াড় হিসেবে মাত্র ১৯৯ ম্যাচে ৫,০০০ রান ও ২৫০ উইকেট নেওয়ার কৃতিত্ব অর্জন করেন।