শাহী ঈদগাহে ‘ইত্তেফাক’ সিনেমার শুটিং, ক্ষমা চাইল ‘কানন ফিল্মস’

গত ২৮ নভেম্বর সিলেট নগরীর শাহী ঈদগাহে ‘ইত্তেফাক’ নামক সিনেমার একটি দৃশ্যের শুটিং হওয়া নিয়ে বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়। এ প্রেক্ষিতে সিনেমাটির নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ‘কানন ফিল্মস’ দুঃখ প্রকাশ করে ধর্মপ্রাণ সিলেটবাসীর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করেছে। মঙ্গলবার বিকালে গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে শুটিংয়ের বিষয় নিয়ে তাদের বক্তব্য উপস্থাপন করে কানন ফিল্মস।

যোগাযোগ করা হলে সংবাদ বিজ্ঞপ্তি প্রেরণের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ‘ইত্তেফাক’ সিনেমার পরিচালক ও প্রযোজক রায়হান রাফি। সিনেমার পরিচালক ও প্রযোজক রায়হান রাফি স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, শাহী ঈদগাহে যে দৃশ্য ধারণ করা হয়, সেটি ছিল নামাজের। ঈদগাহ ইসলাম ধর্মের একটি পূণ্যময় স্থান।

একজন তরুণ অন্ধকার থেকে আলোর পথে, ইসলাম ধর্মের পথে ফিরে আসাকে তুলে ধরতেই মূলত পূণ্যময় এই স্থানকে বেছে নেয়া হয়। এখানে দুই রাকাত নামাজের একটি দৃশ্য ধারণ করা হয়। এভাবে একজন মানুষ অন্ধকার থেকে আলোর পথে ফিরে আসায় পূর্ণাঙ্গতা ও ধর্মীয় মাধুর্যতা দেখানো হয়েছে। কোনভাবেই সেখানে নাচ-গান বা সিনেমার অন্য কোন দৃশ্য ধারণ করা হয়নি। এর প্রশ্নই আসে না। আমরাও মুসলিম এবং ধর্মপ্রাণ মুসলমান। ঈদগাহের মত একটি পূণ্যময় ইবাদতখানার মর্যাদা রক্ষায় আমরা আন্তরিক। সেখানে এমন কিছু হোক যাতে ঈদগাহের পবিত্রতা নষ্ট হয়, তা আমরা করার স্পর্ধা দেখাবো না।

বিজ্ঞপ্তিতে আরো বলা হয়, এই ঘটনাকে প্রচার করা হয়েছে অন্যভাবে। কোনও কোনও পত্রিকা ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বলা হয়েছে, শুটিংয়ের সময় সেখানে নাচ-গানের দৃশ্য ধারণ করা হয়েছে। যা প্রকৃত ঘটনার সম্পূর্ণ বিপরীত। এ রকম প্রচারণার কারণে সিলেটের ধর্মপ্রাণ মুসলমানের মনে আঘাত লেগেছে। তারা ক্ষুব্ধ হয়েছেন। আমরাও মনে করি, যেভাবে বলা হয়েছে, সেভাবে ঈদগাহকে ব্যবহার করা হলে, ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের মনে আঘাত লাগারই কথা। তারা ক্ষুব্ধই হবেন। কিন্তু আসল ঘটনা তা নয় বলে আমরা মর্মাহত হয়েছি। নামাজের দৃশ্য মসজিদ বা ঈদগাহে হলে সেটিই প্রকৃত মর্ম উপস্থাপন করবে- এমনটি মনে করেই মূলত ঈদগাহে শুধু ৩ মিনিটের নামাজের একটি দৃশ্য ধারণ করা হয়। এমন কি আমরা ঈদগাহের পবিত্রতা রক্ষার স্বার্থে জুতা খুলেও প্রবেশ করেছি।

কানন ফিল্মস আরও বলে, নামাজের দৃশ্য ধারণের শুটিংয়ের জন্য ঈদগাহ ব্যবহার করায় শাহজালাল-শাহপরাণ (র)-এর স্মৃতিবিজড়িত সিলেটের ধর্মপ্রাণ মুসলিম সমাজ আমাদের উপর ক্ষুব্ধ হলে বা ধর্মীয়ভাবে আঘাত পেলে আমরা আন্তরিকভাবে দুঃখিত, মর্মাহত এবং ক্ষমাপ্রার্থী। আমরা মনে করি, এ রকম একটি ধর্মীয় স্থাপনার পবিত্রতা রক্ষায় সব সময় সবার সচেষ্ট থাকা উচিত। আমাদের কারণে পূণ্যভূমি সিলেটে কোন রকম বিরূপ পরিস্থিতির সৃষ্টি হোক তা আমাদের কাম্য নয়। এ নিয়ে যাতে সেরকম কোন পরিস্থিতির সৃষ্টি না হয় এ জন্য সবার সদয় ও সুদৃষ্টি কামনা করছি।