কাশবনই টেনে নেয় প্রেমিক যুগলকে

ডেটিং স্পট আফতাবনগর। প্রেমিক-প্রেমিকাদের টানছে মায়ার জালে। কাশবনে ঘেরা এ স্পটে এখন ছুটছে প্রেমিক-প্রেমিকরা। কাশবনের মাঝে লুকিয়ে প্রেম করতে এখানে আসেন যুগলরা। করেন ভাব বিনিময়। ভালোবাসার আদান-প্রদান। নিরিবিলি পরিবেশ ও নির্ভেজাল জায়গা হওয়ায় অনেক প্রেমিক যুগলের পছন্দের তালিকায় এখন আফতাবনগর ডেটিং স্পট।

গত বুধবার বিকালে সেখানে গিয়ে দেখা যায় অন্যরকম এক পরিবেশ। তিতুমীর কলেজের বাংলা বিভাগের ইমরান ও রাণী নামের জুটি এসেছেন এই প্রেমকাননে। নদীর ওপারে উত্তরমুখী সরু সড়ক ঘেষা কাশবনের ঝোঁপে গায়ে গা লাগিয়ে কথায় ব্যস্ত দুজন। লাজুক স্বরে তারা বলেন, আমরা একজন অন্যজনকে প্রাণের চেয়েও ভালোবাসি। একে অপরকে এক মুহূর্ত না দেখলে কথার পাহাড় জমে যায়। তাই, ডেট ঠিক করে প্রায়ই এই কাশবনে আসি। এর দশ গজ দূরে গভীর প্রেমে মগ্ন রামপুরার একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রেমিকজুটি গাজীপুরের আসলাম মোল্লা ও সাবিহা আকতার। কাছে যেতেই হতচকিত হয়ে আসলাম মোল্লা বলেন, প্রায়ই ক্লাসে সাবিহার সঙ্গে এটা-সেটা নিয়ে আমার ঝগড়া হয়। তবে এখানে বসে দুজনে কথা বললে ঝগড়া মিটে যায়। আবারো আমরা বন্ধু হয়ে যাই।

রাজধানীর রামপুরা থেকে প্রায় ১ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত আফতাবনগরের দৃষ্টিনন্দন ডেটিং স্পটে দেখা যায়, চারদিকে শুধুই কাশবন। এ কাশবনের সামনেই রয়েছে সুন্দর একটি পুকুর। তার পাশ দিয়ে এঁকেবেঁকে চলে গেছে একাধিক সরু পথ। আর সেই পথ ধরেই প্রেমিক যুগলরা হারিয়ে যাচ্ছে কাশবনের গহীনে। আফতাব নগরের ডেটিং স্পটে বেলা ২টা থেকে আসতে শুরু করে প্রেমিক যুগলরা।

স্কুল-কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাই মূলত এ স্পটে আসে বেশি। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তাদের ভিড়ও বাড়তে থাকে। প্রতিদিনের মতো ডেটিং করতে এসেছিলেন রামপুরার রবিন ও ইয়াসমিন নামের এক যুগল। রবিন প্রেমিকার হাত ধরে হাঁটার পথে বলেন, ৩ বছর ধরে আমরা প্রেম করছি। একে অপরকে খুব ভালো জানি। প্রায় দিনই আমরা কাশবনের এই নিরিবিলিতে ডেটিংয়ে চলে আসি। এখানে নিয়মিত ডেটিংয়ে আসেন তাদেরই বন্ধু সুমন ও রাবেয়া জুটিও।

তারা বলেন, কাশবনের এ স্পটটি নিরাপদ ও দৃষ্টিনন্দন। এ এলাকাটি সবার জন্য ডেটিং স্পট হিসেবেই পরিচিত বলে জানান তারা। আফতাবনগরের এই ডেটিং স্পটে এক বছর ধরে প্রেমিক যুগলদের কাছে চা বিক্রি করেন আবদুল আওয়াল। তিনি বলেন, প্রতিদিন অনেক জুটিই এখানে বেড়াতে আসেন। বেলা ২টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত এখানে প্রেমিকজুটিদের ভিড় থাকে। সোলায়মান নামের একজন মুড়ি-চানাচুর বিক্রেতা বলেন, যতই দিন যাচ্ছে ততই কাশবনে যুবক-যুবতীদের আনাগোনা বেড়েই চলছে। প্রতিদিন এখানে প্রায় ২০০ রিকশা যাত্রী নিয়ে আসা-যাওয়া করে। এখানকার স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, রাজধানীর বাইরে এমন সুন্দর বিনোদন কেন্দ্র হওয়ায় যুবক-যুবতীরা আড্ডা দিতে আসে।
– মানবজমিন

বাংলাদেশ সময়: ১২২৫ ঘণ্টা, ০৩ অক্টোবর ২০১৭
লেটেস্টবিডিনিউজ.কম/এসএফ