চেকপোস্টে হয়রানির শিকার চিকিৎসকের, আটকালো গাড়ি, এসআই প্রত্যাহার

সরকারি গাড়ি নিয়ে এক চিকিৎসক পেশাগত দায়িত্ব পালনের জন্য বের হয়েছিলেন। বের হওয়ার পর অভিযোগ উঠেছে পুলিশের চেকপোস্টে হয়রানির শিকার হয়েছেন।

পরিচয় জানার পরও ওই চিকিৎসকের গাড়ি চেকপোস্টে ৩০ মিনিট আটকে রাখেন পুলিশের এক উপপরিদর্শক (এসআই)। পরে বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে (ইউএনও) জানালে গাড়ি ছেড়ে দেওয়া হয়। এ ঘটনা ঘটে গতকাল সোমবার সকালে মানিকগঞ্জের সিংগাইর বাসস্ট্যান্ড এলাকায়। জানা গেছে পরে পুলিশের অভিযুক্ত এসআই শহিদুল আলমকে থানা থেকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।

সিংগাইর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. ফারহানা কবির জানান, সকালে তিনি সরকারি গাড়ি নিয়ে স্থানীয় ফোর্ডনগর কমিউনিটি ক্লিনিকে যাচ্ছিলেন। এসময় সিংগাইর বাসস্ট্যান্ড এলাকায় চেকপোস্টে পুলিশ সদস্যরা তার গাড়িটি আটকে দেন। তিনি পরিচয় ও দায়িত্ব সম্পর্কে অবহিত করার পরও তার গাড়িটি ছাড়া হচ্ছিল না।

তিনি জানান, এসময় উপস্থিত পুলিশের এসআই শহিদুল আলমকে চিকিৎসকের সঙ্গে থাকা স্বাস্থ্য পরিদর্শক গাড়িটি ছেড়ে দেওয়ার অনুরোধ জানালেও বিনা কারণে ৩০ মিনিট আটকে রাখেন। আশপাশের লোকজন জড়ো হলে তিনি খুবই অপমানিতবোধ করেন। পরে বাধ্য হয়ে সিংগাইর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) রুনা লায়লাকে টেলিফোনে ঘটনাটি জানালে তার নির্দেশে গাড়িটি ছেড়ে দেয় পুলিশ।

ডা. ফারহানা কবির আরও জানান, সরকারি কাজে যাওয়ার পথে চেকপোস্টে পুলিশের এমন হয়রানিমূলক আচরণ কাম্য নয়। বিষয়টি জেলা সিভিল সার্জনকে জানানো হয়েছে। সিংগাইর ইউএনও রুনা লায়লা জানান, সকাল সাড়ে ১০টার দিকে সিংগাইর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. ফারহানা কবির তাকে বিষয়টি জানান। তিনি তাৎক্ষণিক মোবাইল ফোনে কর্তব্যরত পুলিশ কর্মকর্তাকে গাড়ি ছেড়ে দেওয়ার নির্দেশ দেন। আধাঘণ্টা আটকা থাকার পর ওই স্বাস্থ্য কর্মকর্তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়।

এদিকে ঘটনার পর ওই এসআইকে থানা থেকে প্রত্যাহার করে পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়েছে বলে জানা গেছে। তবে সিংগাইর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম মোল্লার কাছে প্রত্যাহারের বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি এড়িয়ে যান। সিংগাইর থানার এসআই শহীদুল আলাম জানান, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে সিংগাইর বাসস্ট্যান্ড এলাকায় রাস্তায় বাঁশ ফেলে তল্লাশি করা হচ্ছিল। এসময় ওই চিকিৎসকের সঙ্গে ভুল বুঝাবুঝি হয়েছিল।

মানিকগঞ্জের সিভিল সার্জন ডা. আনোয়ারুল আমিন আখন্দ জানান, চিকিৎসকের সঙ্গে খারাপ আচরণের বিষয়টি জেলার পুলিশ সুপারকে মৌখিকভাবে জানানো হয়েছে। অভিযুক্ত কর্মকর্তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিবেন বলে পুলিশ সুপার তাকে জানিয়েছেন। মানিকগঞ্জ পুলিশ সুপার রিফাত রহমান শামীম বলেন, ‘করোনার সংক্রমণ রোধে সকলেই একযোগে কাজ করছি। সিংগাইরে চিকিৎসকের সঙ্গে কর্তব্যরত পুলিশ সদস্যদের একটু ভুল বুঝাবুঝি হয়েছিল। বিষয়টি সমাধান হয়েছে।’