চরভদ্রাসনের বসতবাড়িতে বিরল প্রজাতির বিষধর রাসেল ভাইপার

চরভদ্রাসনে দেখা মিলছে একের পর এক বিষধর সাপ রাসেল ভাইপারের। গত বুধবার রাত ৮টার দিকে সদর ইউনিয়নের বালিয়া ডাঙ্গী গ্রামের বাসিন্দা হোসাইন মোহাম্মদ সিদ্দিকের (৫৪) বসত বাড়িতে দেখা মিলে প্রায় পাঁচ ফুট দৈর্ঘ্যের একটি রাসেল ভাইপার সাপ।

গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে সরজমিনে গেলে মোহাম্মদ সিদ্দিকের বড় ছেলে ইমন (২১) জানান, তার বাব-মা চিকিৎসার জন্য ঢাকায় অবস্থান করছেন। ইমনের বোন সুমাইয়া ঐ রাতে প্রথমে বাবার শোবার ঘরের সামনে সাপটি দেখেতে পেয়ে তার ভাই ইমনকে ডাকেন। ইমন টর্চলাইটের আলোতে সাপটিকে ঘরে ঢুকতে দেখে ঘরের দরজায় তালা দিয়ে দেন। গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে স্থানীয়দের সহযোগিতায় ঘর থেকে সাপটিকে বের করা হয়। ঘরের ভেতর ফ্রিজের পাশ থেকে সাপটিকে প্রথমে জীবিত উদ্ধারের চেষ্টা চালান তারা। কিন্তু সাপের ভয়ংকর ক্ষিপ্রতা দেখে ট্যাটা বিধিয়ে সাপটিকে বাইরে বের করে আনেন। আঘাত পেয়ে সাপটি মারা যাওয়ায় মাটিচাপা দেওয়া হয়েছে বলে জানান ইমন। ইমন সরকারি রাজেন্দ্র কলেজে অনার্স তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ও তার বোন ফরিদপুর সারদা সুন্দরী কলেজে এইচএসসি দ্বিতীয় বর্ষে অধ্যয়নরত আছেন। গত কয়েক দিন হলো তাদের বাড়ির পেছনে বর্ষার পানি ঢুকেছে। ধারণা করা হচ্ছে চরাঞ্চল থেকে বর্ষার পানিতে ভেসে এসব বিষধর সাপ লোকালয়ে প্রবেশ করছে।

উল্লেখ্য, ২০১৬ সালে উপজেলার নদী তীরবর্তী ও চরাঞ্চলে এই সাপের দেখা মিলে। ২০১৭-২০২০ সাল পর্যন্ত বিরল প্রজাতির এই বিষধর রাসেল ভাইপারের দংশনে উপজেলায় বেশ কয়েকজন কৃষকের মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। আগে চরাঞ্চলে এই সাপ দেখা গেলেও বর্তমানে এই বিষধর রাসেল ভাইপার সাপ লোকালয়ে প্রবেশ করায় স্থানীয়দের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. হাফিজুর রহমান বলেন, কয়েক বছর আগে রাসেল ভাইপার সাপের উপদ্রব ছিল বেশি। সে তুলনায় এ বছর একটু কম বলে ধারণা করা হচ্ছে। এছাড়া, এই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আগে অ্যান্টিভেনম ছিল না। এখানে আমি দায়িত্ব গ্রহণের পর অ্যান্টিভেনম এনে রাখা হয়েছে। ডাক্তারদের এ ব্যাপারে প্রশিক্ষণও দেওয়া হয়েছে।

উপজেলা চেয়ারম্যান (ভারপ্রাপ্ত) মোতালেব হোসেন বলেন, ২০১৭-২০১৮ সাল থেকে রাসেল ভাইপার সাপের উপদ্রব দেখা দেয়। কৃষিকাজ করতে গিয়ে অনেকে এই সাপের কামড়ে মারা যান। পরে অনাবাদী জমিগুলো চাষ করার ফলে এ বছর এর উপদ্রব অনেকটা কম দেখা যাচ্ছে। কিন্তু চলতি বর্ষা মৌসুমে চরাঞ্চল থেকে এই সাপ লোকালয়ে আসে।