অবৈধ বিট কয়েনের ব্যবসা করে হয়ে গেলেন ফ্ল্যাট-প্লট-সুপার শপের মালিক

প্রতিষ্ঠানের নাম “বেসিক বিজ মার্কেটিং” কিন্তু এই প্রতিষ্ঠানের নামের আড়ালে চলা অবৈধ ‘বিট কয়েন’ ব্যবসার মূল হোতাসহ ১২ জনকে গত রোববার আটক করেছে র‌্যাব। বাংলাদেশে অবৈধ ‘বিট কয়েন’ ব্যবসার মূলহোতার নাম ইসমাইল হোসেন সুমন ওরফে কয়েন সুমন (৩২)।

আটককৃতদের অন্যরা হলেন আবুল বাশার রুবেল (২৮), আরমান পিয়াস (৩১), রায়হান আলম সিদ্দিকি (২৮), মো. জোবায়ের (১৮), মেহেদী হাসান রাহাত (২৪), মেহেদী হাসান (১৯), রাকিবুল হাসান (২৩), রাকিবুল ইসলাম (২২), সোলাইমান ইসলাম (২১), মো. জাকারিয়া (১৮) ও আরাফাত হোসেন (২২)।

গতকাল সোমবার বিকেল সোয়া ৫টায় র‌্যাব সদর দপ্তরের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন কারওয়ান বাজার র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান।

তিনি বলেন, “গতকাল রোববার দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে রাজধানীর উত্তর বাড্ডা এলাকার বেসিক বিজ মার্কেটিং নামক প্রতিষ্ঠানে অভিযান পরিচালনা করে র‌্যাব-১-এর একটি দল। সেখান থেকে বাংলাদেশে অবৈধ বিট কয়েন ব্যবসার মূলহোতা ও অনলাইনে প্রতারণার অভিযোগে ইসমাইল হোসেন সুমন ওরফে কয়েন সুমনসহ ১২ জন আটক করা হয়।”

কমান্ডার খন্দকার আল মঈন আরো বলেন, “ইসমাইল হোসেন সুমন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সমাজবিজ্ঞানে মাস্টার্স পাস করেন। ২০১৩ সালে ছোট্ট একটি দোকানে বাচ্চাদের খেলনা ও কাপড়ের ব্যবসা শুরু করেন। সেখান থেকেই তিনি শুরু করেন বিট কয়েনের ব্যবসা। গড়ে তোলেন বেসিক বিজ মার্কেটিং নামক অনলাইন আউটসোর্সিং প্রতিষ্ঠান। আর এর আড়ালে অবৈধ বিট কয়েন ও অনলাইনে বিভিন্ন প্রতারণার ফাঁদ তৈরি করে দীর্ঘ দিন ধরে ব্যবসা করে আসছিলেন সুমন।”

তিনি আরো বলেন, “শুরুতে একটি ছোট অফিস থাকলেও তা বড় হয়, বাড্ডায় ৩টি ফ্লোরে ৩২ জন কর্মচারী নিয়ে ব্যবসা পরিচালনা করে আসছিলেন তিনি। প্রতিষ্ঠানটি ৩টি শিফটে ২৪ ঘণ্টা খোলা থাকে। ভার্চুয়াল ওয়ালেটের মাধ্যমে অবৈধ ও প্রতারণামূলক ব্যবসা বিট কয়েনের মাধ্যমে সুমন বিপুল অর্থ সম্পদের মালিক হয়েছেন। ঢাকায় রয়েছে ২টি ফ্ল্যাট, প্লট, সুপার শপের ব্যবসা। এ ছাড়া একাধিক ভার্চুয়াল ওয়ালেটে এক বছরে তিনি বিট কয়েনের মাধ্যমে অবৈধভাবে ১২ থেকে ১৫ লাখ ডলার লেনদেন করেছেন।”

খন্দকার আল মঈন বলেন, “আটক ইসমাইল হোসেন সুমন বিভিন্ন দেশি-বিদেশি ই-মার্কেটিং সাইটে আকর্ষণীয় মূল্যে বিজ্ঞাপন প্রদান করতেন। পরবর্তীতে প্রতারণার মাধ্যমে অর্থ আত্মসাৎ করতেন। কেউ যদি তার পণ্য ক্রয় করতে ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করতো, তা হ্যাক করে টাকা আত্মসাৎ করতো সুমন।”

এ ছাড়া গ্রেপ্তার অপর ১১ জন সুমনের সহযোগী। তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলেও জানান র‌্যাবের এই কর্মকর্তা।