কিশোরগঞ্জে সৌদি প্রবাসীর স্ত্রীকে গলাকেটে হত্যা

কিশোরগঞ্জের কটিয়াদীতে সাবিনা আক্তার নামে এক নারীকে গলাকেটে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। বুধবার সকালে কটিয়াদী পৌরসভার কমরভোগ এলাকার বাড়ি থেকে পুলিশ তার লাশ উদ্ধার করে। সাবিনা আক্তার ছিলেন সৌদি প্রবাসী দীন ইসলামের স্ত্রী।

জানা গেছে, মঙ্গলবার রাত অনুমান সাড়ে ১১টার দিকে মা-বাবার বসত ঘরের সংযুক্ত বারান্দার ছোট্ট কক্ষে সাবিনা আক্তার ঘুমিয়ে পড়েন। সকালে সাবিনার বাবা নামাজ পড়তে ঘর থেকে বের হয়ে দেখে মেয়ের কক্ষের দরজা খোলা। মেয়ে সাধারণত সকাল ৮-৯টা পর্যন্ত ঘুমায়। কিন্তু ভোরে ঘরের দরজা খোলা দেখে তার বাবা ফুল মিয়া সাবিনা সাবিনা বলে ডাকতে ডাকতে তার কক্ষে প্রবেশ করে। মেয়ে উপুড় হয়ে শুয়ে আছে ভেবে তার পায়ে ধরে টান দিতেই রক্তাক্ত বিছানায় মেয়ের নিথর দেহ পড়ে থাকতে দেখে চিৎকার শুরু করেন। তার চিৎকারে আশে পাশের লোকজন ছুটে আসে।

নিহত সাবিনা আক্তারের পিতা ফুল মিয়া জানান, তার চার মেয়ের মধ্যে সাবিনা সবার ছোট। অন্য মেয়েদের একটু দূরে দূরে বিয়ে দিয়েছেন। ছোট মেয়ে সাবিনাকে তার বড় ভাইয়ের ছেলে সৌদি প্রবাসী দ্বীন ইসলামের সাথে ৩বছর পূর্বে বিয়ে দেন। বড় ভাই ও তার ঘর একই আঙিনায়। গতকাল সাবিনা আমার বসত ঘরের বারান্দার ছোট কক্ষে ঘুমিয়ে ছিল। তার মেয়েকে কে বা কারা হত্যা করেছে তা খুজে বের করে দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তি দাবী করেন।

নিহতের মা মদিনা বেগম বলেন, বিয়ের পর তার স্বামী বিদেশ চলে যায়। তিনি মেয়েকে স্বাবলম্বি করার জন্য সেলাই কাজের প্রশিক্ষণ নিতে বলেন। মেয়েও আগ্রহ নিয়ে সেলাই কাজ শিখে। ইদানিং সে বাড়ির আশে পাশের ছোট বাচ্চা ছেলে মেয়েদের জামা কাপড় সেলাইয়ের কাজ শুরু করে। মঙ্গলবার রাতেও সে কিছু সেলাই কাজ করে রাত ১১টার দিকে আমাকে সাথে নিয়ে টয়লেট সেরে তার কক্ষে গিয়ে দরজা বন্ধ করে ঘুমিয়ে থাকে।

তবে কে বা কারা কিভাবে দরজা খুলেছে তা বুঝে উঠতে পারছেন না তিনি । কিন্তু তিনি ধারণা করছেন টয়লেটে যাওয়ার পর কেউ ধারালো অস্ত্র নিয়ে চুপিসারে তার কক্ষে লুকিয়েছিল। সবাই ঘুমিয়ে পড়লে গভীর রাতে মেয়েকে হত্যা করে তার ব্যবহৃত দেড় ভরি ওজনের গলা, নাক, কানের স্বর্ণালংকার ও মোবাইল ফোন নিয়ে যায়।

কটিয়াদী মডেল থানার ওসি জানান, নিহতের মোবাইল ফোনের সর্বশেষ কল লিস্টের তথ্য উদঘাটন করলে হয়তো প্রকৃত রহস্য বের হয়ে আসবে। নিহত সাবিনা নিজেই দরজা খুলেছিল না কি কোন দুর্বৃত্ত পূর্বে থেকে পরিকল্পিত ভাবে এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে তা খতিয়ে দেখে প্রকৃত অপরাধীকে সনাক্ত ও গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।