নাতিকে ধানক্ষেতে নিয়ে গলা কাটেন কথিত নানী

বগুড়ায় ধানক্ষেতে গলাকাটা অবস্থায় উদ্ধারকৃত শিশু সিয়ামের (৭) হত্যাকারীকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। চাঞ্চল্যকর এ হত্যাকাণ্ডের দুই ঘণ্টার মাথায় গতকাল মঙ্গলবার শাহাজাহানপুর থানা পুলিশ ও জেলা গোয়েন্দা পুলিশ অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছে।

গ্রেফতার হওয়া মালতি বেগম (৫২) শাহাজাহানপুর থানার পলিপালাশ গ্রামের মুসলিম উদ্দিনের স্ত্রী। মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৭টায় জেলার পুলিশ সুপার আলী আশরাফ ভুঞা নিজ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে জানান, মালতি বেগম সম্পর্কে নিহত সিয়ামের নানি।

তিনি জানান, ঘটনার দুই সপ্তাহ আগে সারিয়াকান্দিতে সিয়ামের খালার বাড়িতে তার মা সাবিনার সঙ্গে অভিযুক্তের পরিচয় হয়। এরপর তারা একসঙ্গে তেতলাগাড়িতে নিজ বাড়িতে যায়। সেখানে সাবিনার ভাই মমিনের জমজ বাচ্চাদের দত্তক মালতি নিতে চান। তাদের মাঝে এ নিয়ে মনোমালিন্যে হয়। এতে মালতি ক্ষিপ্ত হয়ে এক পর্যায়ে সাবিনার ছেলে সিয়ামের ক্ষতি করার পরিকল্পা করেন।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, গত মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে মালতি বেগম সিয়ামকে বাড়ি থেকে খাবারের লোভ দেখিয়ে নিয়ে যায়। রাস্তায় সিয়ামের মা ও মামী তাদের দেখলেও সম্পর্কে আত্মীয় হওয়ায় তাদের সন্দেহ হয়নি। মালতি একপর্যায়ে সিয়ামকে একটি দোকান থেকে খাবার কিনে দিয়ে তেতলাগাড়ি গ্রাম থেকে দুই কিলোমিটার উত্তরে শাহাজাহানপুর থানার পানিহালী এলাকার একটি ধান খেতে সিয়ামকে হাসুয়া দিয়ে জবাই করে। পরে মালতি নিহতের দেহ পাশের একটি ড্রেনে ফেলে হাসুয়া ধান ক্ষেতে রেখে পালিয়ে যান।

পুলিশ সুপার বলেন, ‘আমাদের কাছে মনে হয়েছে, মালতি বাচ্চা দত্তক নেওয়ার কাজ করত। সাবিনার ভাইয়ের বাচ্চাদের দত্তক না পেয়ে সে হত্যাকাণ্ডটি ঘটিয়েছে।’

ঘটনার পরে পুরো এলাকায় মাইকিং করা হলে সাবিনা ও তার ভাইয়ের বউ ছাড়াও আরও দুজন সাক্ষী পাওয়া যায় যারা মালতির সঙ্গে সিয়ামকে ধানক্ষেতে নিয়ে যেতে দেখে। পরে মালতির বাড়িতে গিয়ে রক্তমাখা বোরকা ধোঁয়া অবস্থায় পুলিশ হাতেনাতে গ্রেফতার করে। পরে তিনি (মালতি) প্রাথমিকভাবে সব কিছু স্বীকার করে।

সংবাদ সম্মেলনে জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আলী হায়দার চৌধুরী (প্রশাসন), আব্দুর রশিদ (অপরাধ), মোতাহার হোসেন (বিশেষ শাখা), ফয়সাল মাহমুদসহ (সদর সার্কেল) শাহাজাহানপুর থানার ওসি আব্দুল্লাপ আল মামুন ও ডিবির ওসি আব্দুর রাজ্জাক উপস্থিত ছিলেন।