দেশে ১০৫.৭ শতাংশ অতিরিক্ত কর্মসংস্থান তৈরি করেছে এসএমই উদ্যোক্তারা

পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউট (পিআরআই) এবং আইডিএলসি ফাইন্যান্স লিমিটেডের সম্মিলিতভাবে আইডিএলসি ফাইন্যান্সের ৭৮২ এসএমই উদ্যোক্তাদের ওপর একটি গবেষণা করেছে। এটির মূল প্রতিপাদ্য বিষয় ছিল ‘কর্মসংস্থান তৈরিতে ক্ষুদ্র ও মাঝারী ব্যবসায়ীদের ভূমিকা।’ গবেষণার ফলাফলে বলা হয়, ক্ষুদ্র ও মাঝারী শিল্পগুলো পাঁচ বছরের ব্যবধানে গড়ে ১০৫.৭ শতাংশের বেশি নতুন চাকরির সুযোগ তৈরিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানিয়েছে আইডিএলসি।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ২৪ নভেম্বর অলাইনে অনুষ্ঠিত প্রেস কনফারেন্সে পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের অন্যতম শীর্ষ গবেষক ড. বজলুল হক খন্দকার গবেষণার এমন ফলাফল তুলে ধরেন। প্রেস কনফারেন্সে উপস্থিত ছিলেন আইডিএলসি ফাইন্যান্স লিমিটেডের সিইও ও এমডি আরিফ খান, পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর ড. আহসান এইচ মনসুরসহ আইডিএলসি ফাইন্যান্স লিমিটেড এবং পিআরআইয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ। অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যক্ষ ড. সায়েমা হক বিদিশা।

লিঙ্গভেদে কর্মসংস্থান তৈরিতে অবদান (মহিলা ও পুরুষ উদ্যোক্তা), ব্যবসায়ের প্রকারভেদে (উৎপাদন, সেবা, বাণিজ্য ও কৃষি ব্যবসা) কর্মসংস্থানের তুলনামূলক বিশ্লেষণ, চাকরির ধরন (শ্রমিক, দক্ষকর্মী, বিক্রয়কর্মী, এবং নির্বাহীকর্মী), ঋণের পরিমাণ (১০ লক্ষের নিচে, ১০ -২৫ লক্ষ, ২৫-৫০ লক্ষ, ৫০-৭৫ লক্ষ) এবং প্রতিষ্ঠানের ভৌগলিক অঞ্চলগুলো নিয়ে কর্মসংস্থান তৈরিতে ভূমিকা বিস্তারিত পর্যালোচনা করা হয় গবেষণায়।

গবেষণায় দেখা যায়, পুরুষ উদ্যোক্তাদের চেয়ে মহিলা মালিকানাধীন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানসমূহ উল্লেখযোগ্যভাবে (১৪৬.২ শতাংশ) বেশি কর্মসংস্থান সৃষ্টি করেছে। গবেষণায় আরো দেখা যায় ব্যবসায়ের ধরনের মধ্যে সেবা মূলক প্রতিষ্ঠান সবচেয়ে বেশি কর্মসংস্থান তৈরি করতে সক্ষম হয়েছে যা বিগত ৫ বছরে ১৭৪.২% বেশি । উৎপাদনমুখী প্রতিষ্ঠানের কর্মসংস্থান তৈরিও চোখে পরার মতো; যা গত ৫ বছরে ১৩১% বেড়েছে। মোট ১০৫.৭ শতাংশ অতিরিক্ত কর্মসংস্থান তৈরি করেছে এসএমই উদ্যোক্তারা।

চাকরির ধরনের মধ্যে সর্বাধিক বৃদ্ধির হার লক্ষ্য করা যায় বেতনভুক্ত চাকরির ক্ষেত্রে। ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের শুরুর সময় থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত সামগ্রিকভাবে ১৩৪ শতাংশ বৃদ্ধি লক্ষ্য করা যায়। একটি ইতিবাচক লক্ষণীয় পর্যবেক্ষণ হলো, এসএমই ব্যবসায়ীরা তাদের পারিবারিক কর্মীদের ওপর নির্ভরশীলতা থেকে প্রাতিষ্ঠানিক বেতনভুক্ত কর্মসংস্থানের দিকে ঝুঁকছে।

এই বিশ্লেষণের ওপর আরো আলোকপাত করে পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর আহসান এইচ মনসুর বলেন, কভিড-১৯ পরবর্তী সময়ে অর্থনীতিতে কর্মসংস্থান ফিরিয়ে আনতে, এসএমই ইতিবাচক ভূমিকা রাখতে সক্ষম। আমরা আশাবাদী যে আইডিএলসির মতো অন্যান্য আর্থিক প্রতিষ্ঠানও এসএমই অর্থায়ন, প্রশিক্ষণ এবং পরামর্শ সেবায় এগিয়ে আসবে।

আইডিএলসির সিইও ও এমডি আরিফ খান বলেন, আইডিএলসিতে আমরা এসএমই ব্যবসার অর্থায়নের পাশাপাশি নারী উদ্যোক্তাদের অর্থায়ন নিয়েও একনিষ্ঠভাবে কাজ করে থাকি। যার একটি ইতিবাচক ফলাফল আমরা এই গবেষণার মাধ্যমে জানতে পেরেছি। এই গবেষণাপত্রটি আরো প্রমাণ করে যে, এসএমই ব্যবসায় অর্থায়ন শুধুমাত্র লাভজনকই নয়, বরং সামগ্রিক আর্থসামাজিক প্রেক্ষাপটেও এর গুরত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে।