চিকিৎসার নামে রোগীদের অমানবিক নির্যাতন করা হতো

অবৈধভাবে কুমিল্লার আদর্শ সদর উপজেলার দূর্গাপুর ইউনিয়নের মধ্যপাড়া এলাকার একটি বাড়িতে গড়ে তোলা হয় কথিত মানসিক হাসপাতাল। এই মানসিক হাসপাতালের সরকারি অনুমোদন ছিল না।এখানে আসা রোগীদের শিকল দিয়ে বেঁধে রাখা হতো।

তাদের ওপর চালানো হতো অমানবিক নির্যাতন। এমনকি তীব্র শীতের মধ্যেও রোগীদের শিকল পরিহিত অবস্থায় পুকুরে নেমে গোসল করতে বাধ্য করা হতো। সম্প্রতি এই হাসপাতালের খবর আসে কুমিল্লা জেলা প্রশাসন ও স্বাস্থ্য বিভাগের কাছে। পরে রোববার বিকেলে সেখানে অভিযান চালানো হয়।

এ সময় অমুমোদন ছাড়া ওই বাড়িতে চিকিৎসার নামে মানসিক রোগীদের আটকে রাখার ঘটনায় বাড়ির মালিককে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। এছাড়া আটক রোগীদের পরিবারের কাছে হস্তান্তরের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

সোমবার সকালে জেলা সিভিল সার্জন ডা. মো. নিয়াতুজ্জামান এসব তথ্য জানিয়েছেন। তিনি বলেন, এলাকাবাসীর অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে জেলা প্রশাসন ও জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের যৌথ ভ্রাম্যমাণ আদালত ওই বাড়িতে অভিযান চালায়।

বাড়ির মালিকের বিরুদ্ধে সরকারি কোন অমুমোদন ছাড়াই হাসপাতাল খুলে মানসিক চিকিৎসার নামে রোগীদের শারীরিক নির্যাতন করা, নোংরা ও গন্ধময় পরিবেশে রোগীদের শিকল বেঁধে রাখা, তীব্র শীতের মধ্যেও রোগীদের শিকল পরিহিত অবস্থায় পুকুরে নেমে গোসল করতে বাধ্য করানোসহ নানা রোমহর্ষক অভিযোগ পাওয়া গিয়েছিল।

তিনি আরও বলেন, অভিযানের সময় প্রতিটি অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে। এছাড়া সুস্থ রোগীদেরও অসুস্থ হিসেবে আটক রেখে নিম্নমানের খাবার সরবরাহ, অননুমোদিত ওষুধ রাখাসহ বিভিন্ন অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে। পরে জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মাজহারুল ইসলাম ভ্রাম্যমাণ আদালতে ওই বাড়ি ও কথিত হাসপাতালের মালিক ফরিদ উদ্দিনকে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করেন।

এ সময় জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়ের মেডিকেল অফিসার ডা. সৌমেন রায়সহ পুলিশের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। ডা. নিয়াতুজ্জামান বলেন, এখন আধুনিক যুগ। চাইলে একজন মানুষ খুব সহজে বিশ্বের যেকোনো প্রান্তের খবর নিতে পারেন। এ যুগেও এসব ঘটনা দুঃখজনক। এক্ষেত্রে রোগীর অভিভাবকদের আরও সচেতন হতে হবে। এসব অপচিকিৎসার বিরুদ্ধে সামাজিক সচেতনতা গড়ে তুলতে হবে।