শিশুদের ‘নোবেল’ জিতল বাংলাদেশের সাদাত রহমান

১৯০১ খ্রিষ্টাব্দে নোবেল পুরস্কার প্রবর্তিত হয়। ঐ বছর থেকে সারা পৃথিবীর বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে সফল এবং অনন্যসাধারণ গবেষণা ও উদ্ভাবন এবং মানবকল্যাণমূলক তুলনারহিত কর্মকাণ্ডের জন্য এই পুরস্কার প্রদান করা হচ্ছে। মোট ছয়টি বিষয়ে পুরস্কার প্রদান করা হয়। বিষয়গুলো হলো: পদার্থবিজ্ঞান, রসায়ন, চিকিৎসা শাস্ত্র, অর্থনীতি, সাহিত্য এবং শান্তি।

শিশুদের নোবেলখ্যাত আন্তর্জাতিক শিশু শান্তি পুরস্কার পেয়েছে বাংলাদেশের নড়াইল জেলার কিশোর সাদাত রহমান (১৭)। শুক্রবার নেদারল্যান্ডের হেগে এক অনুষ্ঠানে মানবাধিকার কর্মী ও নোবেলজয়ী মালালা ইউসুফজাই সাদাত রহমানের নাম ঘোষণা করে তার হাতে বিজয়ীর পুরস্কার তুলে দেন।

অনলাইনে শিশু নির্যাতন বন্ধে সচেতনতামূলক অ্যাপ ‘সাইবার টিন’ বানানোর স্বীকৃতি হিসেবে তাকে এ পুরস্কার দেওয়া হয়েছে।

শিশুদের অধিকার ও নিরাপত্তার বিষয়ে অবদানের জন্য নেদারল্যান্ডস ভিত্তিক সংগঠন ‘কিডস-রাইটস’ প্রতিবছর এ পুরস্কার দিয়ে থাকে।

সংগঠনটির ওয়েবসাইট থেকে জানা যায়, এ বছর ৪২টি দেশের ১৪২ জন প্রতিযোগীর মধ্যে এক্সপার্ট কমিটি সাদাতকে নির্বাচন করেছে। গত বছর এ পুরস্কার পেয়েছিলেন সুইডেনের কিশোরী পরিবেশকর্মী গ্রেটা থুনবার্গ।

১৭ বছর বয়সী সাদাত নড়াইল আবদুল হাই সিটি কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র। সাদাত রহমান ও তার দল সাইবার বুলিং ও সাইবার ক্রাইম থেকে শিশু-কিশোরদের রক্ষায় নানা কার্যক্রম পরিচালনা করছে। সাদাত সম্পর্কে কিডস রাইটসের ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে, সাদাত একজন ‘তরুণ চেঞ্জমেকার’ ও সমাজসংস্কারক।

সাইবার বুলিংয়ের শিকার হয়ে এক কিশোরীর (১৫) আত্মহত্যার পর কাজে নামে সাদাত। সে তার বন্ধুদের সহায়তায় ‘নড়াইল ভলেন্টিয়ারস’ নামের একটি সামাজিক সংগঠন শুরু করে। এই সংগঠন বেসরকারি সংস্থা একশনএইডের ‘ইয়ুথ ইনোভেশন চ্যালেঞ্জ-২০১৯’-এ বিজয়ী হয়ে তহবিল পায়।

এই তহবিলের মাধ্যমে তারা ‘সাইবার টিনস’ মোবাইল অ্যাপ তৈরি করে। এই অ্যাপের মাধ্যমে কিশোর-কিশোরীরা জানতে পারে কীভাবে ইন্টারনেট দুনিয়ায় সুরক্ষিত থাকতে পারে। প্রায় ১ হাজার ৮০০ কিশোর-কিশোরী এই অ্যাপ ব্যবহার করছে। এই অ্যাপের মাধ্যেম ৬০টির বেশি অভিযোগের মীমাংসা হয়েছে এবং ৮ জন সাইবার অপরাধীর শাস্তি নিশ্চিত হয়েছে।