প্রধানমন্ত্রী অর্থনৈতিক কূটনীতি জোরদার করতে বললেন

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের অর্থনৈতিক স্বনির্ভরতা অর্জনের জন্য ব্যবসা-বাণিজ্য প্রসারে অর্থনৈতিক কূটনীতি জোরদার করতে কূটনীতিকদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। শেখ হাসিনা বলেন, তিনি (বঙ্গবন্ধু) যে পররাষ্ট্র নীতিটি আমাদের দিয়ে গেছেন “সকলের সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারো সাথে বৈরিতা নয়”। সরকার গঠন করার পর থেকে আমি কিন্তু সেই নীতি নিয়েই চলছি। আমরা সকলের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রেখে, বাংলাদেশের মানুষের আর্থ-সমাজিক উন্নয়নের দিকে দৃষ্টি দিচ্ছি।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ শুক্রবার জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বাংলা ভাষণ দান স্মরণে ভার্চুয়াল আলোচনা সভা এবং ফরেন সার্ভিস একাডেমির নবনির্মিত ভবন উদ্বোধন অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী এই সভায় যুক্ত হোন তার সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজকের বিশ্বে আমাদের কূটনৈতিক মিশনের দায়িত্বও বদলে গেছে। এখন এটি রাজনৈতিক কূটনীতি নয়, বরং অর্থনৈতিক কূটনীতি।‘ সেখানে সকলের সহযোগিতা একান্তভাবে দরকার। আমরা যাই কিছুই করতে চাই না কেন সবকিছুতে সকলের সহযোগিতা আমাদের প্রয়োজন।

শেখ হাসিনা বলেন, করোনাভাইরাসের এই সময়েও আর্থিক কার্যক্রম সীমিত আকারে অব্যাহত রাখা হয়েছে, আমাদের জিডিপি যেটা টার্গেট ছিল ৮ দশমিক ২ শতাংশের ওপরে যাব, সেটা আমাদের পক্ষে সম্ভব হয়নি। আমরা এবার ৫ দশমিক ২৪ শতাংশের মত অর্জন করতে পেরেছি। কিন্তু আমরা আশা করি, আগামীতে আমাদের প্রবৃদ্ধি আমরা আরো বেশি অর্জন করতে সক্ষম হব। আর সেদিকে লক্ষ্য রেখেই আমরা কাজ করে যাচ্ছি। মুজিববর্ষে জতির পিতার স্বপ্নের ‘ক্ষুধামুক্ত, দারিদ্র্যমুক্ত বাংলাদেশ’ গড়ে তোলার সংকল্পের কথা জানিয়ে বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেন, প্রায় ৪০ শতাংশ দরিদ্র জনগোষ্ঠী ছিল, এই দারিদ্র্যের হার আমরা কমিয়ে ২০ দশমিক ৫ শতাংশে এনেছি। আমরা আরো কমাতে চাই। বাংলাদেশের প্রত্যেকটা মানুষকে একটা সুন্দর জীবন আমরা উপহার দিতে চাই। তাই সকলের সহযোগিতা আমাদের কাম্য। পাশাপাশি কাউকে কোনো ধরনের সহযোগিতা যদি করতে হয়, আমরা সেটা করতেও প্রস্তুত। বাংলাদেশ সবসময়ই চায় সারাবিশ্বে একটা শান্তি বজায় থাকুক।

শেখ হাসিনা বলেন, পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে যেখানে নানাধরণে সংঘর্ষ আছে সেখানে জাতিসংঘের শান্তি রক্ষা বাহিনীর অধিনে আমাদের সশস্ত্র বাহিনী, পুলিশ বাহিনী প্রত্যেকে বিশেষ ভূমিকা রেখে যাচ্ছে। অনেক সৈনিক জীবনও দিয়ে গেছেন। শুধু একটা কথাই বলবো, বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য বাংলাদেশ সবসময়ই প্রস্তুত।

কূটনীতিকদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজকের বিশ্বে কূটনৈতিক মিশনের দায়িত্বও পরিবর্তন হয়েছে। এখন শুধু রাজনৈতিক কূটনীতি না, অর্থনৈতিক কূটনীতি। এখন কূটনীতিটা অর্থনৈতিক কূটনীতিতে চলে গেছে। ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসার ঘটানো। সকলের সঙ্গে মিশে কীভাবে অর্থনৈতিক স্বাবলম্বিতা অর্জন করা যায়। উন্নয়ন করা যায়। একে অপরকে কীভাবে সহযোগিতা করার মাধ্যমে কীভাবে বিশ্বে শান্তি আনা যায় সেভাবে আমাদের কূটনীতিটা চালাতে হবে।