না ফেরার দেশে কিংবদন্তি ফুটবলার ম্যারাডোনা

না ফেরার দেশে চলে গেলেন ফুটবল কিংবদন্তি দিয়েগো ম্যারাডোনা। বুধবার (২৫ নভেম্বর) হঠাৎ হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন তিনি।মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৬০ বছর।

নভেম্বরের শুরুতে আর্জেন্টিনার সাবেক অ্যাটাকিং মিডফিল্ডার এবং কোচের ব্রেনের সফল অস্ত্রোপাচার হয়েছিল। সে সময় অতিরিক্ত অ্যালকোহলের ওপর নির্ভরশীল হওয়ায় ম্যারাডোনা শারীরিকভাবে অসুস্থ হয়েছিলেন বলে জানানো হয়।

বিশ্ব ফুটবল ইতিহাসের সর্বকালের সেরা ফুটবলার হিসেবে বিবেচিত ম্যারাডোনার নেতৃত্বে ১৯৮৬ সালে বিশ্বকাপ জেতে আর্জেন্টিনা। টুর্নামেন্টে তার জাদুময় পারফরম্যান্স মন ভরিয়ে দিয়েছিল ফুটবল প্রেমীদের।

ক্লাব পর্যায়ে তিনি বার্সেলোনা অধ্যায় শেষে যোগ দেন নাপোলিতে। এখানেও নিজের একক নৈপুণ্যে ইতালিয়ান ক্লাবটিকে দু’টি লিগ শিরোপা জেতান ম্যারাডোনা। আর্জেন্টিনার জার্সিতে ৯১ ম্যাচে ৩৪ গোল করেছেন তিনি। খেলেছেন ৪টি বিশ্বকাপে।

ম্যারাডোনার নেতৃত্বে ১৯৯০ সালের ইতালি বিশ্বকাপেও ফাইনালে খেলে আর্জেন্টিনা। তবে সেবার তারা হেরে যায় পশ্চিম জার্মানির কাছে। পরে ১৯৯৪ সালের যু্ক্তরাষ্ট্র বিশ্বকাপে ড্রাগ টেস্টে পজিটিভ হওয়ায় তাকে নিষিদ্ধ করা হয়। এফেড্রিন নামক ড্রাগ নিয়ে ম্যারাডোনা খেলতে নেমেছিলেন, এমন দাবি করা হয়।

ক্যারিয়ারের দ্বিতীয়ার্ধে, তিনি কোকেইন আসক্তির সঙ্গে লড়াই করতে থাকেন এবং ১৯৯১ সালে ড্রাগ টেস্টে পজিটিভ হওয়ায় ১৫ মাস নিষিদ্ধ হন। ম্যারাডোনা পেশাদারি ফুটবল থেকে অবসর নেন ১৯৯৭ সালে, তার ৩৭তম জন্মদিনে। আর্জেন্টাইন জায়ান্ট বোকা জুনিয়র্সে নিজের দ্বিতীয় স্পেলে থাকার সময় বুটজোড়াকে চিরতরে অবসর পাঠান তিনি।

এরপর কোচিং ক্যারিয়ার শুরু করেন ম্যারাডোনা। খেলোয়াড়ি জীবনের সময়ও সংক্ষিপ্ত সময়য়ের জন্য নিজ দেশের দু’টি ক্লাবের কোচ ছিলেন তিনি। ছিয়াশির মহানায়ক আর্জেন্টিনা জাতীয় ফুটবল দলের প্রধান কোচ হিসেবে নিয়োগ পান ২০০৮ সালে। তার অধীনে ২০১০ সালে বিশ্বকাপ খেলে আলবিসেলেস্তেরা। তবে সেবার আর্জেন্টিনা ঘরে ফেরে কোয়ার্টার ফাইনাল থেকে, জার্মানির বিপক্ষে হেরে।

নিজ দেশ ছাড়াও ম্যারাডোনা কোচ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন সংযুক্ত আরব আমিরাত এবং মেক্সিকোর দু’টি ফুটবল ক্লাবের। মৃত্যুর আগে তিনি নিযু্ক্ত ছিলেন আর্জেন্টিনার শীর্ষ ফুটবল লিগের ক্লাব জিমনেসিয়া ওয়াই এগগ্রিমার কোচ হিসেবে।