সরকারি হাসপাতালে ৩০ মার্চ থেকে শুরু বৈকালিক চেম্বার

সরকারি হাসপাতালেই ব্যক্তিগত রোগী দেখার সুযোগ সরকার করে দিচ্ছে। এ নিয়ে পাইলট প্রকল্প হিসেবে ইন্সটিটিউশনাল প্র্যাকটিস বা প্রাতিষ্ঠানিক স্বাস্থ্যসেবা আগামী ৩০ মার্চ থেকে শুরু হবে বলে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেক জানিয়েছেন।

সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসকদের প্রাইভেট প্র্যাকটিসের বিষয়ে ‘সরকারি চিকিৎসকদের বৈকালিক স্বাস্থ্যসেবা’ শীর্ষক সভায় সোমবার (২৭ মার্চ) দুপুরে সচিবালয়ে এসব কথা বলেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেক। তিনি জানান, প্রথমে ১০টি জেলা হাসপাতালে এবং ২০টি উপজেলা হাসপাতালে শুরু হবে প্র্যাকটিস। সপ্তাহে দুইদিন বিকেল ৩টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত চলবে।

জাহিদ মালেক বলেন, \’সরকারি হাসপাতালে সকাল ৮টা থেকে দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত চিকিৎসকরা বিনামূল্যে রোগী দেখেন। এতে বিকেলে বহু মানুষ চিকিৎসা নিতে না পেরে বাইরে প্রাইভেট প্রতিষ্ঠানে দেখান। প্রাইভেট প্রতিষ্ঠানের ‘ফি’ বেশি হওয়ায় দেশের মানুষের চিকিৎসা ব্যয় বহুগুণ বৃদ্ধি পায়। এজন্য সরকারের এই সিদ্ধান্ত। \’

মন্ত্রী আরও জানান, হাসপাতালে প্র্যাকটিসের জন্য চিকিৎসকরা ফি পাবেন। অধ্যাপক নেবেন ৪০০ টাকা আর তার সাথে সহযোগী ২ জন পাবে পঞ্চাশ টাকা করে। সহযোগী অধ্যাপক বা সিনিয়র কনসালটেন্টরা পাবেন ৩০০ টাকা, সহকারী অধ্যাপক বা জুনিয়র কনসালটেন্ট বা সমপর্যায়ের চিকিৎসকগণ পাবেন ২০০ টাকা করে যাদের সহযোগী ২ জন পাবেন ৫০ টাকা করে।

সরকারি চিকিৎসকদের সপ্তাহে কয়দিন করে ডিউটি থাকবে সে প্রসঙ্গে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানান, একজন চিকিৎসককে সপ্তাহে মাত্র ২দিন অতিরিক্ত ৩ ঘণ্টা করে সেবা দিতে হবে। তবে, এই সেবা যাতে মানুষ সপ্তাহে অন্তত ৬ দিন নিশ্চিত করে পায় সেটি নিশ্চিত করতে হবে।

জাহিদ মালেক বলেন, প্র্যাকটিসের সময় ছোট আকারের অপারেশনের ব্যবস্থা থাকবে। সব ধরনের টেস্টের ব্যবস্থাও করা হবে। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা এসময় রোগীদের চিকিৎসা সেবা দেবেন। তিনি আরো বলেন, নির্বাচনের আগেই সারাদেশের সব হাসপাতালে প্রাইভেট প্র্যাকটিস শুরু হবে।

মন্ত্রী জানান, মানুষের চিকিৎসা ব্যয় কেন বৃদ্ধি পাচ্ছে সেসব বিষয় নিয়ে দফায় দফায় আলোচনা করা হয়েছে। দেশের সব বিভাগে গিয়ে জেলা, উপজেলা হাসপাতালে সেবার মান যাচাই করা হয়েছে। এসব বিষয় নিয়ে দেশের চিকিৎসক নেতা কর্মীদের সংগঠন বাংলাদেশ মেডিকেল এসোসিয়েশন (বিএমএ), স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ (স্বাচিপ) সহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন পর্যায়ে দফায় দফায় কথা হয়েছে।

স্বাস্থ্যমন্ত্রীর সভাপতিত্বে সভায় আরও বক্তব্য রাখেন, স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের সচিব মো. আজিজুর রহমান, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম, স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. মো. টিটো মিঞা, বাংলাদেশ মেডিকেল এসোসিয়েশন (বিএমএ)’র মহাসচিব ডা. এহতেশামুল হক চৌধুরী, স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ (স্বাচিপ) সভাপতি অধ্যাপক ডা. জামাল উদ্দিন চৌধুরী, মহাসচিব অধ্যাপক ডা. কামরুল হাসান মিলন, ঢাকা মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ, সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষাসহ অন্যান্য ব্যক্তিবর্গ।

Scroll to Top