হামলা, মামলা, কারফিউ, সেনা মোতায়েনের পর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন দমাতে এলাকায় এলাকায় ‘ব্লক রেইড’ চলছিল জুলাইয়ের শেষাংশে। ২৬ জুলাই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের তিন সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম, আসিফ মাহমুদ ও আবু বাকের মজুমদারকে হাসপাতাল থেকে নিজেদের হেফাজতে নেয় গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ। পরদিন ২৭ জুলাই আরও দুই সমন্বয়ক সারজিস আলম ও হাসনাত আব্দুল্লাহকেও নিয়ে যায় ডিবি।
এ বিষয়ে তৎকালীন ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা শাখার প্রধান হারুন অর রশীদ তখন জানান, সমন্বয়কারীদের পরিবার নিরাপত্তা সংকটে ভুগছিল। তাই তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে ডিবিতে আনা হয়েছে। অন্যদিকে সহিংসতায় তাদের সংশ্লিষ্টতা খতিয়ে দেখতেই সমন্বয়কদের আনা হয়েছে বলে জানান তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।
এদিন জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতালে হতাহতদের দেখতে যান তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ সময় তিনি প্রশ্ন তোলেন, অর্থনীতি পঙ্গু করে দেশকে আবারও ভিক্ষুকের জাতিতে পরিণত করতেই কী, দেশ অস্থিতিশীল করার ষড়যন্ত্র হচ্ছে? সরকারের মন্ত্রীরাও এদিন উসকানিমূলক বক্তব্য দেয়া অব্যাহত রাখেন।
পাল্টা বক্তব্যও আসে বিরোধীপক্ষ থেকে। ক্ষমতায় টিকে থাকতে সরকার ইন্টারনেট সংযোগ বন্ধ, কারফিউ জারিসহ দমন-পীড়ন চালাচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
এদিন সংবাদ সম্মেলনে তৎকালীন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘বাংলাদেশকে নিরাপদ করতে হলে বিএনপি ও জামায়াতকে দেশের রাজনীতি থেকে বিতাড়িত করতে হবে।’
আন্দোলন ঘিরে ২৭ জুলাই পর্যন্ত ১১ দিনে ৯ হাজার ১২১ জন গ্রেফতার করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, যার মধ্যে শুধু রাজধানীতেই গ্রেফতার হন ২ হাজার ৫৩৬ জন। আর নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ২১০ জনে। এদিন ১৪টি বিদেশি মিশন সরকারের প্রতি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে জবাবদিহি নিশ্চিত করার আহ্বান জানায়।







