কক্সবাজারে অপহরণের পাঁচ দিনেও উদ্ধার হয়নি দুই কৃষক

কক্সবাজারের টেকনাফের শীর্ষ রোহিঙ্গা ডাকাত আব্দুল হাকিম বাহিনীর হাতে অপহরণের শিকার হওয়া দুই স্থানীয় কৃষকের এখনো কোনও খোঁজ পাওয়া যায়নি। তবে, তাদের উদ্ধার করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী জোর-তৎপরতা চালাচ্ছে।

এদিকে, অপহরণের পাঁচদিন হলেও তারা উদ্ধার না হওয়ায় এলাকাবাসীদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। একই সঙ্গে তাদের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। এ নিয়ে শুক্রবার তারা কক্সবাজার-টেকনাফ মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন।

জানা যায়, ইতিমধ্যেই পুলিশ গত চারদিন ধরে একাধিক দলে বিভক্ত হয়ে বিরামহীনভাবে গভীর পাহাড়ে অভিযান চালাচ্ছে। কিন্তু রোহিঙ্গা ডাকাত বাহিনীর হাতে অপহৃত স্থানীয় দুই কৃষকের কোনও খোঁজ এখনও পায়নি তারা।

পুলিশ, র‌্যাবসহ সরকারি বিভিন্ন সংস্থা অতীতে বিভিন্ন সময়ে কুখ্যাত হাকিম ডাকাতকে ধরার জন্য নানা কৌশলে অভিযান পরিচালনা করলেও ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে গেছে এই শীর্ষ ডাকাত সর্দার।

রোহিঙ্গা ডাকাত আবদুল হাকিমের নেতৃত্ব সশস্ত্র রোহিঙ্গারা গত বুধবার (২৯ এপ্রিল) রাতে টেকনাফ হোয়াইক্যং ইউনিয়নের মিনাবাজার এলাকার ধানক্ষেত থেকে স্থানীয় ৬ জন কৃষককে অপহরণ করে পার্শ্ববর্তী গহীন পাহাড়ে নিয়ে যায়। অপহরণের কয়েক ঘণ্টা পর চালসহ খাদ্যসামগ্রী মুক্তিপণের বিনিময়ে অপহরণের শিকার ৬ জনের মধ্যে কৃষক আবুল হাশেম এবং তার দুই ছেলে জামাল উদ্দীন ও রিয়াজ উদ্দীনকে মুক্তি দেয়। অপর তিনজনকে নিয়ে গহীন পাহাড়ে ঢুকে কখনও তিন লাখ আবার কখনও ২০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে আসছে ডাকাতরা।
ডাকাতদের হাতে অপহৃত তিনজনের মধ্যে আক্তার উল্লাহ নামে একজনের গুলিবিদ্ধ মৃতদেহ গত শুক্রবার ভোরে হোয়াইক্যংয়ে অবস্থিত রোহিঙ্গা ক্যাম্প সংলগ্ন পাহাড় থেকে উদ্ধার করে পুলিশ।

আক্তার উল্লাহকে হত্যার পর ডাকাতেরা তার স্বজনদের মোবাইল করে খবর পাঠায়। সে সূত্রে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে নিয়ে তার গুলিবিদ্ধ মরদেহ উদ্ধার করে হোয়াইক্যং পুলিশ ফাঁড়ির একদল পুলিশ। এখনও বিশাল অংকের টাকা মুক্তিপণ দাবি করে ডাকাতেরা আটকে রেখেছে কৃষক মোহাম্মদ শাহেদ (২৫) ও মোহাম্মদ ইদ্রিসকে (২৭)।

অপহৃত শাহেদের মোবাইল ফোন থেকে তার পরিবারের কাছে ২০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয় দুইদিন আগে। অন্যথায় তাদেরও মেরে ফেলার হুমকি দেয় ডাকাতেরা।

এ ব্যাপারে টেকনাফ মডেল থানার ওসি প্রদীপ কুমার দাশ আজ দুপুরে অভিযান স্থল থেকে বলেন, হোয়াইক্যং এলাকার বিশাল পাহাড়ের চারপাশ পুলিশের আটটি টিম ঘেরাও করে সাঁড়াশি অভিযান চালাচ্ছে। ডাকাতদের কিছু আলামতও পাওয়া গেছে। তিনি সকলকে ধৈর্য ধারণ করার অনুরোধ জানিয়ে উদ্ধারের বিষয়ে আশাবাদ ব্যক্ত করেন। তিনি অপহৃতরা উদ্ধার না হওয়া এবং সশস্ত্র ডাকাতেরা গ্রেফতার না হওয়া পর্যন্ত পুলিশের অভিযান অব্যাহত থাকবে বলেও জানান।