মিরসরাইয়ে এক হাজার কোটি টাকা বাজেটে হবে বিশ্বমানের হাসপাতাল

চট্টগ্রামের মিরসরাই উপজেলায় বিশ্বমানের হাসপাতাল নির্মাণের ঘোষণা দিয়েছেন মিরসরাই সমিতি সংযুক্ত আরব আমিরাতের সভাপতি ফখরুল ইসলাম খাঁন সিআইপি। হাসপাতাল নির্মাণের জন্য তিনি এক হাজার কোটি টাকা বাজেট ঘোষণা করেছেন।

সম্প্রতি হাসপাতাল নির্মাণের লক্ষ্যে সংযুক্ত আরব আমিরাতে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। কবি মোহাম্মদ মুসার সভাপতিত্বে ও ব্যংকার মোহাম্মদ জাফর উদ্দিন ভূঁইয়ার উপস্থাপনায় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন ফখরুল ইসলাম খাঁন সিআইপি।

প্রধান বক্তা ছিলেন আবুধাবি শেখ খলিফা বাংলাদেশ ইসলামিয়া স্কুল এন্ড কলেজের ভাইস প্রিন্সিপাল কাজী আব্দুর রহিম। বিশেষ অতিথি ছিলেন ডাঃ শেখ শামসুর রহমান পিএইচডি, আরব আমিরাতের নাগরিক শেখ নাসের, উপদেষ্টা মোহাম্মদ আক্তার উদ্দিন পারভেজ, সাংবাদিক মনিরউদ্দিন মান্না, কবি আরাফাতুই ইসলাম চৌধুরী, লেখক রাজু আহম্মেদ, ইঞ্জিনিয়ার সোহেল আহম্মদ, দীপক চন্দ্র দাস, ইসলামি চিন্তাবিদ ইমরান হোসাইন, ইমাম হোসেন , বোরহান উদ্দীন, কামাল উদ্দিন সহ প্রমুখ।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে ফখরুল ইসলাম খাঁন বলেন, আমার পিতা মরহুম হাজী শাহ আলম ও আমার মমতাময়ী মা সুখিনা বেগমের একটি হাসপাতালের দীর্ঘদিনের স্বপ্ন ছিল। সে স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে যাচ্ছি। মিরসরাইয়ে বিশ্বমানের এফ.আই.কে হাসপাতাল নির্মাণ করা হবে।

এখানে বিশ্বমানের স্পেশালিস্ট, সম্পূর্ণ নতুন আঙ্গিকে সুবিশাল পরিসরে এফ.আই. কে হাসপাতালের জন্য বিশ্ব মানের দুইটি অ্যাম্বুলেন্স ক্রয় করেছি । দেশ বিদেশের স্বনামধন্য ডাক্তারদের চিকিৎসা সেবার সব সুযোগ-সুবিধা নিয়ে গড়ে উঠবে অত্যাধুনিক এই হাসপাতাল। বিদেশমুখী রোগীদের দেশের চিকিৎসায় আস্থা ফিরে আনা, শহর ও গ্রামীণ জনপদের চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করণের উদ্দেশ্যেই এ নান্দনিক হাসপাতালে কার্যক্রম শুরু হবে।

জানা গেছে, গ্রামীণ জনপদের রাজধানী খ্যাত বারইয়ারহাট পৌরসভার প্রাণকেন্দ্র ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পাশে দৃষ্টিনন্দন অবকাঠামোয় গড়ে ওঠা এফ আই কে হাসপাতাল এক যুগান্তকারী চিকিৎসা সেবার আমূল পরিবর্তনের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হবে। এফ.আই.কে হাসপাতালের সাথে অন্য সাধারণ হাসপাতালগুলোর সঙ্গে কোনো মিল থাকবে না। এখানে থাকবে না কোনো দালালের দৌরাত্ম, থাকবে না কোনো প্রকার বিশৃঙ্খলা। শুধু তাই নয় বিশেষায়িত এই হাসপাতালে গেলে যে কারও মন ভালো হয়ে যাবে এর নান্দনিক অবকাঠামো দেখে।

চিকিৎসাসেবার জন্যও এখানে থাকবে অনেক আয়োজন। থাকবে আধুনিক প্রযুক্তির সব চিকিৎসা সরঞ্জাম। সেবা দিতে সবসময় প্রস্তুত থাকবে দক্ষ চিকিৎসক, নার্স ও মেডিক্যাল টেকনোলজিস্টরা। প্রয়োজনে দেশি-বিদেশি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের পরামর্শও নিতে পারবেন চিকিৎসা রোগীরা।

এখানে থাকবে দরিদ্র রোগীদের বিশেষ সুযোগ-সুবিধা। সুবিধাবঞ্চিতদের বিনামূল্যে চিকিৎসাসেবার সুযোগ রয়েছে। থাকবে সড়ক দুর্ঘটনায় আহতদের দ্রুত চিকিৎসার বিশেষ ব্যবস্থা। এ ছাড়া প্রতিবন্ধী আর মা ও নারীদের সেবায় আগ্রাধিকার দেয়া হবে। রোগীদের অতিথি ভবন, প্রশাসনিক ভবন শিশুদের জন্য প্রজাপতি পার্ক অনেকগুলো ভবন সংযুক্ত থাকবে এই অত্যাধুনিক হাসপাতালকে ঘিরে।

মেডিসিন, নিউরোমেডিসিন, স্ত্রী রোগ ও প্রসূতি, জেনারেল অ্যান্ড ল্যাপারোস্কপিক সার্জারি, শিশুরোগ, চক্ষু বিভাগ, নাক কান গলা বিভাগ, মাইক্রোবায়োলজি, চর্ম, অ্যালার্জি ও ভিডি রোগ, হাড় ও আঘাতজনিত রোগ, হৃদরোগ, গেস্টোএন্টারলজি ও হেপাটলজি, লিভার রোগ, ইউরোলজি, ডায়টারি, প্যাথলজি।

ফখরুল ইসলাম খাঁন সিআইপি বলেন, আমি মা ও বাবার ইচ্ছেতে মানব সেবায় নিজেকে নিবেদিত করেছি। দেশে চিকিৎসাসেবার নৈরাজ্য দেখে আমার মন কেঁদে ওঠে। চিকিৎসা সেবার অপ্রতুলতায় অনেক প্রাণ অকালে ঝরে যাচ্ছে। গ্রামীণ জনপদে চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করণে আমার এই উদ্যোগ কিঞ্চিৎ মানবতার উপকার সাধন করতে পারলে নিজেকে ধন্য মনে করবো। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও বীর মুক্তিযোদ্ধা, সাবেক সফল মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন মহোদয় সহ বর্তমান সরকারের সকল এমপি, মন্ত্রী ও প্রশাসনের সকল ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার সার্বিক সহযোগিতা কামনা করছি।