যুগে যুগে লাম্পট্যকে যেমন জায়েজ করে নিয়েছে পুরুষ

তপন মাহমুদ লিমন :যুগে যুগে লাম্পট্যকে যেমন জায়েজ করে নিয়েছে পুরুষ, তেমনি ‘শরীরের পবিত্রতাকে’ নারীর প্রধান সম্বল হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে! আমি এই ছোট্ট জীবনে বহু পুরুষকে তার বহুগামীতার গল্প অনায়াসে, মজা নিয়ে করতে শুনেছি, দেখিছি। আবার এসব পুরুষদেরই বহুগামীতার জন্য নারীদের কাঠগোড়ায় দাঁড় করাতে দেখেছি। নারীদের দ্বারা শারীরিক নিপীড়নের শিকার কখনও যে কোন পুরুষ হয় না, তা কিন্তু নয়! তারা এটাকে কখনও বলবে না। বা বললেও মজা করেই বলে। এটাকে সে পুরুষতান্ত্রিক বৈশিষ্টের মধ্যে ফেলে দিয়েছে।তাই, শরীর নিয়ে পুরুষের ছুঁতমার্গ নেই। সে নিজের বেলায় এটা আরোপ করেনি। বরং সে নিজে যতই বহুগামী হোক, নারীর বেলায় সে প্রতিবারই খুঁজে নেয় ’সতী নারী’। বিভিন্ন ধর্মেও এর পক্ষে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ আসকারা আছে, বৈধতা আছে। তবে, তার পরও ধর্মে কিন্তু ব্যাভিচারের জায়গা নেই। জোর জবস্তির জায়গা নেই। এরকম প্রচলিত কোন আইনেও নেই, বা কোন সামাজিক বিধানে। কিন্তু সমাজের অনুশীলনে যুগের পর যুগ এটা আছে।

দ্বিতীয়ত পুরুষতন্ত্র নিজেই এক্ষেত্রে বেশ আত্মঘাতী। এ ব্যবস্থা একজন পুরুষকে, সাথে যখন যোগ হয় পুঁজিবাদী শোষণ-অনায্যতা ও রাষ্ট্রীয় নিপীড়ন, খুব সহজেই পারভার্ট করে ফেলে যদি সে খুব সচেতন ও শক্ত না হন। ফলে, নারীকে মানুষ হিসেবে, স্বাভাবিকভাবে দেখার চোখ সে হারিয়ে ফেলে। সে মানসিকভাবে বিকল হয়ে যায়।

তৃতীয়ত, আমাদের সমাজ যেহেতু পুরুষতান্ত্রিক, সে কারণে নারীরাও পুরষতন্ত্র থেকে দূরে থাকতে পারে না। খুব অল্প সংখ্যক এই তন্ত্রের বেড়াজাল ছিন্ন করতে পারলেও, আমাদের সমাজেনর সংখ্যাগরিষ্ঠ নারী পুরুষের সাথে সমান তালে পুরষতান্ত্রিক বৈশিষ্ট ধারণ করে। ফলে তারাও এই বিষয় গুলোকে পুরুষের চোখেই দেখে। ফলে সমাজে নারীর প্রতি নিপীড়নের কোন শক্ত প্রতিবাদ হয় না। তারা ধরেই আছে পুরুষই সেরা, শক্তিশালী। যত যাই, হোক পুরুষের আশ্রয়েই সে থাকতে চায়। ফলে, অনেক ক্ষেত্রে, অর্থনৈতিকভাবে সম্বল নারীরাও কার্যত পুরুষতন্ত্রের ঘেরাটপে বন্দী হয়ে মানসিকভাবে সামলম্বী হতে পারে না।

ধর্ষণ বিষয়ক আলোচনায় এ প্রস্ঙ্গগুলো না আনলে এর টেকসই সমাধান হবে না। আরো অনেক কারণ আছে। ধীরে ধীরে লিখবো।