‘বাবা মারা যাওয়ার পর সংসারের সব দায়িত্ব ছিল রুপা আপার কাঁধে’

চলন্ত বাসে ঢাকার আইডিয়াল ল’ কলেজের ছাত্রী রুপা প্রামানিককে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের পর হত্যার ঘটনায় বাকরুদ্ধ পরিবারের সদস্যরা। শোকে অসুস্থ মা হাসপাতালে ভর্তি। বড় বোন রুপাকে হারিয়ে বার বার অজ্ঞান হয়ে পড়ছেন তার দুই বোন। শোকে স্তব্ধ সিরাজগঞ্জের তারাশ উপজেলার আসানবাড়ি গ্রাম।

নিহত রুপার স্বপ্ন ছিল আইনজীবী হয়ে মানুষের সেবা করার। ঢাকা আইডিয়াল ল’ কলেজে পড়তেন রুপা। সংসার চালাতে লেখাপড়ার পাশাপাশি চাকরি করতেন এক বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে।

তার ছোট বোন বলেন, ‘আমাদের এই বড় বোন আমাদের অবলম্বন। বাবা মারা যাওয়ার পর সংসারের সব দায়িত্ব রুপা আপার কাঁধে ছিল।’
এদিকে ৩০ আগস্ট বুধবার বড় ভাই হাফিজুর রহমান লাশ তাদের গ্রামের বাড়ি নিয়ে যাওয়ার জন্য আদালতে আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে কলেজছাত্রী রূপা প্রামানিকের লাশ কবর থেকে ৩১ আগস্ট তোলার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। একই সময় মামলার অপর ২ আসামির জবানবন্দী গ্রহণ করা হয়েছে।

এর আগে পুলিশ ২৮ আগস্ট সোমবার রাতে বগুড়া থেকে ময়মনসিংহগামী ছোঁয়া পরিবহন বাসটি মধুপুর অতিক্রম করার সময় আটক করে এবং বাসের চালক, সুপারভাইজার ও হেলপারসহ পাঁচ জনকে গ্রেফতার করে। থানায় নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে তারা রুপাকে ধর্ষণ ও হত্যার কথা স্বীকার করে।

এদিকে রুপাকে ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনায় জড়িত বাসশ্রমিকদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ও রুপা হত্যা মামলাটি দ্রুত বিচার ট্রাইবুনালে স্থানান্তরের দাবিতে মানববন্ধন করেছে বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন। বিকেলে টাঙ্গাইল শহীদ মিনার চত্বরে ও সিরাজগঞ্জের তাড়াস উপজেলা প্রেসক্লাবের সামনে বিভিন্ন নারী অধিকার সংগঠন, দৈনিক পত্রিকার পাঠক ফোরাম সংগঠন, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রী ও সচেতন নাগরিক সমাজ মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে।

প্রসঙ্গত, টাঙ্গাইলের মধুপুরে এক কলেজছাত্রীর লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্ত শেষে বেওয়ারিশ হিসেবে দাফন করার পর স্বজনদের খুঁজে পেয়ে তদন্ত করতে গিয়ে পুলিশ জানতে পেরেছে যে, চলন্ত বাসে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের পর ওই তরুণীকে হত্যা করা হয়। ২৫ আগস্ট শুক্রবার রাতে ছোঁয়া পরিবহনের একটি বাসে করে সিরাজগঞ্জ থেকে ময়মনসিংহ যাওয়ার পথে রুপা প্রামাণিক (২৫) নামে ওই তরুণী সংঘবদ্ধ ধর্ষণ ও হত্যার শিকার হন বলে জানান মধুপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম।

বাংলাদেশ সময়: ১০০৭ ঘণ্টা, ৩১ আগস্ট, ২০১৭
লেটেস্টবিডিনিউজ.কম/পিকে