মিল্কভিটার জিএমের বাসা থেকে সোয়া কোটি টাকা নিয়ে পালাল গৃহকর্মী

বাংলাদেশ সমবায় ইউনিয়ন লিমিটেডের (মিল্কভিটা) মহাব্যবস্থাপক (জিএম) মো. শামছুল আলমের বেইলী রোডের বাসার লকার থেকে ১ কোটি ৩৫ লাখ টাকা নিয়ে পালিয়েছে তার গৃহকর্মী তসলিমা। চুরির ঘটনায় ১৩ সেপ্টেম্বর জিএম শামছুল আলম বাদী হয়ে রমনা থানায় একটি মামলা করেন। এ ঘটনায় তাসলিমাসহ জড়িত চারজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তাদের কাছ থেকে নগদ ২৮ লাখ টাকাসহ ১০ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র উদ্ধার করা হয়েছে। এত টাকা ব্যাংকে না রেখে বাসায় থাকার বিষয়ে প্রশ্ন উঠেছে জনমনে। অবশ্য পুলিশের কাছে সবিস্তারে জানিয়েছেন শামছুল আলম। তিনি বলেন, বিষয়টি সমঝোতার চেষ্টা চলছে।

সূত্র জানায়, রাজধানীর বেইলী রোডে সপরিবারে থাকেন জিএম শামছুল আলম। মিরপুরে একটি জমি কেনার জন্য কয়েক মাস আগে বাসার লকারে ১ কোটি ৩৫ লাখ টাকা রেখেছিলেন। অর্থ রাখার সময় গৃহকর্মী তাসলিমা তা দেখেন। লকারের চাবি চুরি করে ১ মে সকাল থেকে বিভিন্ন সময় সব টাকা চুরি করে আত্মীয়স্বজনের মাধ্যমে সরিয়ে ফেলেন তিনি। তাৎক্ষণিকভাবে বিষয়টি আঁচ করতে পারেননি জিএম। ৪ আগস্ট সস্ত্রীক বাইরে গিয়েছিলেন। বাসায় ফিরে লকার খুলতে গিয়ে নির্দিষ্ট স্থানে চাবি না পেলে তাসলিমাকে সন্দেহ করেন। ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদে চাপের মুখে পরদিন চাবি সরিয়ে রাখার বিষয়টি স্বীকার করেন ওই গৃহকর্মী। পরে লকার খুলে তারা দেখতে পান সেখানে কোনো টাকা নেই। এর পর ৩১ আগস্ট সকালে বাসার ময়লা ফেলার কথা বলে গ্রামের বাড়ি (টাঙ্গাইলের নাগরপুর বেকড়া) পালিয়ে যান তাসলিমা। জিএম শামছুল আলম ও গৃহকর্মী তাসলিমার বাড়ি পাশাপাশি গ্রামে।

সূত্র জানায়, তাসলিমাকে র্খোজাখুঁজির একপর্যায়ে জিএম শামছুল আলম জানতে পারেন, লকার থেকে চুরি করা সব টাকা সোহাগ নামে একজনের মাধ্যমে গ্রামের আমিনুরের বাসায় লুকিয়ে রেখেছেন গৃহকর্মী। পরে টাকা ভাগাভাগি নিয়ে দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়েন তারা। এক কান-দুকান হয়ে বিষয়টি জানতে পারেন স্থানীয় প্রভাবশালী জজ কামাল, সুজন ও শাহীনসহ অচেনা এক ব্যক্তি। তারা আমিনুরকে হুমকি-ধমকি দিয়ে কোটি টাকার কিছু অংশ হাতিয়ে নেন। ১৩ সেপ্টেম্বর শামছুল আলম থানায় মামলা করার পর অভিযানে নামে পুলিশ। ১৪ সেপ্টেম্বর থেকে গত মঙ্গলবার পর্যন্ত টাঙ্গাইলসহ বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে তাসলিমা ও তার স্বজন সোহাগ, ফুলবানু, শেফালীকে আটক করা হয়। তাদের বাড়ি থেকে উদ্ধার করা হয় ১০ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র ও নগদ ২৭ লাখ ৭৫ হাজার টাকা।

এ প্রসঙ্গে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা রমনা থানার এসআই এসএম খাইরুল বাশার বলেন, মামলার বাদী জানিয়েছেন, মিরপুর এলাকায় ৩ কাঠার একটি জমি কেনার জন্য তারা কয়েকজন মিলে সঞ্চিত টাকা বাদীর কাছে গচ্ছিত রাখেন। পরে গৃহকর্মী তাসলিমা তার পরিচতজনদের নিয়ে কৌশলে সব টাকা সরিয়ে ফেলেন। এর পর তা ভাগাভাগি করে নেন। এ পর্যন্ত ঘটনায় জড়িত মূল অভিযুক্ত গৃহকর্মী ও তার মাসহ চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। উদ্ধার করা হয়েছে কিছু অর্থ। জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তারকৃতরা তাদের দোষ স্বীকার করেছেন। চুরি হওয়া বাকি টাকা উদ্ধার এবং অভিযুক্ত অন্যদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে বলেও এসআই খাইরুল বাশার জানান।

মিল্কভিটার জিএম (পিটিএম) শামছুল আলম বলেন, চোর ধরা পড়েছে। কিছু টাকা উদ্ধারও হয়েছে। কাজের লোক তো, ওটা নিয়া আমাদের আপস-মীমাংসা চলছে। এ ব্যাপারে সপ্তাহখানেক পর বিস্তারিত জানাতে পারব।খবর আমাদের সময়।

বাংলাদেশ সময়: ১০৫৫ ঘণ্টা, ২৬ সেপ্টেম্বর  ২০১৭

লেটেস্টবিডিনিউজ.কম/কেএসপি