ফের তিস্তার পানি বিপৎসীমার ২০ সেন্টিমিটার উপরে

একে রয়েছে মহামারী করোনার প্রভাব তার উপর আবার যোগ হলো তাস্তার পানির প্রভাব। ভারতের গজল ডোবার সবকয়টি গেট খুলে দেওয়ায় আবারও লালমনিরহাটে ব্যারাজ পয়েন্টে তিস্তার পানি বিপৎসীমার ২০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ধরলার পানি শিমুলবাড়ি পয়েন্টে বিপৎসীমার ৩ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তিস্তা ও ধরলার পানি ক্রমেই বৃদ্ধি পাওয়ায় লালমনিরহাটের ৫টি উপজেলার তিস্তা, ধরলার ৬৩টি চরাঞ্চল গুলোতে আবারও বন্যা দেখা দিয়েছে। পানি বৃদ্ধির সাথে সাথে তিস্তা ধরলায় নতুন করে দেখা দিয়ে তীব্র ভাঙ্গন।

মঙ্গলবার দুপুর ১২টায় দেশের সর্ববৃহৎ তিস্তা ব্যারাজের ডালিয়া পয়েন্টে তিস্তার পানি বিপৎসীমার ২০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এর আগে সকাল ৬টায় বিপৎসীমার ১৫ সেন্টিমিটার উপর, সকাল ৯টায় বিপৎসীমার ১৮ সেন্টিমিটার উপর প্রবাহিত হয়। অপরদিকে ধরলার পানি বিপৎসীমার ৩ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

তিস্তা ব্যারাজ রক্ষার্থে ৪৪টি গেট খুলে দিয়ে পানির প্রবাহ নিয়ন্ত্রণ করছেন পানি উন্নয়ন বোর্ড। তিস্তার পানি প্রবাহ রেকর্ড করা হয় ৫২ দশমিক ৮০ সেন্টিমিটার। যা বিপৎসীমার ২০ সেন্টিমিটার (স্বাভাবিক ৫২ দশমিক ৬০ সেন্টিমিটার) উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

জানা গেছে, গত ৭ দিন আগে তিস্তার ভয়াবহ বন্যার পর চতুর্থ দফায় আবারও তিস্তা-ধরলা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে লোকালয়ে প্রবেশ করছে। তিস্তা ধরলার চরাঞ্চল গুলোতে লোকজন পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। উজানের পানি ও ভারী বর্ষণের কারণে দেখা দিয়েছে আবারও বন্যা।

তিস্তার পানি বৃদ্ধির কারণে তিস্তা অববাহিকায় ৭ দিন পর আবারও বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যানগণ জানিয়েছেন।

সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় দফা বন্যার এক সপ্তাহের বিরতির পর পরই জেলায় চতুর্থ দফা বন্যা দেখা দেয়। এ সময় অন্তত ৫০ হাজার পরিবার বন্যা কবলিত হয়। ৩০ বছরের রেকর্ড ভেঙ্গে তিস্তা নদীর পানি বিপৎসীমার ৫৫ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। তখন প্রায় এক লাখ মানুষ বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এবার যে হারে পানি বৃদ্ধি হচ্ছে তাতে এ দফার বন্যায় নতুন করে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির আশংকা করা হচ্ছে।

গড্ডিমারী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আতিয়ার রহমান জানান, পানি নেমে যাওয়া ৭ দিন না পেরোতেই মঙ্গলবার সকাল থেকে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় নদী অববাহিকার পরিবারগুলো ফের পানিবন্দি হয়ে পড়ছে।

হাতীবান্ধা উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা ফেরদৌস আহম্মেদ জানান, তিস্তায় পানিবন্দি পরিবার গুলোর জন্য আবারও ত্রাণ সহযোগিতা দেওয়া হবে।

পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)’র দোয়ানী ডালিয়া’র নির্বাহী প্রকৌশলী রবিউল ইসলাম জানান, উজানের ঢলের কারণে তিস্তা নদীর পানি সকাল থেকে বৃদ্ধি পাওয়ায় চর ও উপকূল এলাকার মানুষজন পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। পানি আরও বাড়তে পারে বলে তিনি জানান।