শিশু শ্রমিকের সংখ্যা বেড়েছে ফুলবাড়ীতে

করোনার প্রভাবে নাজেহাল পুরো বিশ্ব। আর এদিকে গত নয় মাস ধরে করোনা মহামারিতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় বিপাকে পড়েছে কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার হতদরিদ্র পরিবারের শিশু শিক্ষার্থীরা। আর এই হতদরিদ্র পরিবারের উপার্জন কমে যাওয়ায় অভিভাবকরা সন্তানদের বাজারে শ্রমের পাঠিয়ে দিচ্ছেন।

পরিবারের পাশাপাশি কম পারিশ্রমিকে শিশুদের নানা শ্রমে নিয়োজিত করেছেন এক শ্রেণির সুযোগ সন্ধানী ব্যবসায়ী ও প্রতিষ্ঠানের মালিকরা। উপজেলার দ্বিতীয় শ্রেণীর শিক্ষার্থী জানায়, বাবা কোনো রকমে দিন মজুরের কাজ করে সংসার চালায়। বাবার আয় কমে যাওয়ায় কালিরহাট বাজারে চায়ের দোকানে দৈনিক একশ টাকা মজুরিতে কাজ করছি।

গত ১৫ দিন ধরে এই কাজ করছি। এখানে মালিক দুই বেলা খেতেও দেয়। উপার্জনের টাকা বাবার হাতে তুলে দেই। স্কুল খুলে দিলে এই কাজ আর করবো না, তখন স্কুলে যাবো। পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী জানায়, বাবা মানুষের বাড়িতে দিনমজুরি খাটে। আয় কমে গেছে। তাই সংসারের অভাব পূরণ করতে পরিবার তাকে বাদাম বিক্রি করতে দিয়েছে।

দৈনিক দেড়শ থেকে দুইশ টাকা আয় হয়। স্কুল খুলে দিলে স্কুলে যাবার কথা জানায় সেও। অপরদিকে উপজেলার বালারহাট বাজারে বাঁশের তৈরি কুলা বিক্রি করছেন পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী এক শিক্ষার্থী। বালারহাট বাজরে বাবার সঙ্গে মাছ বিক্রি করছে দ্বিতীয় শ্রেণীর এক শিক্ষার্থী। তার পাশেই অন্য দোকানে মাছ বিক্রি করছে তৃতীয় শ্রেণির আরেক শিক্ষার্থী।

ফুলবাড়ী জছিমিয়া সরকারি মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষক আমিনুল ইসলাম জানান, করোনাকালে কাজের ক্ষেত্র সংকোচিত হয়ে পড়ায় নিম্ন আয়ের মানুষের সংসারে টানাপোড়ন লেগেছে। এ জন্য সংসার চালাতে হিমশিম খাওয়া পরিবার গুলোর অভিভাবকরা তাদের স্কুল পড়ুয়া সন্তানদের বাড়তি আয়ের আশায় শিশু শ্রমে নিয়োজিত করছে।

যদি এই সব শিশুদের বিভিন্ন পেশা থেকে ফিরিয়ে আনতে হয় তাহলে শিক্ষকসহ ও অভিভাবকদেরও বিশেষ ভূমিকা রাখতে হবে। আর পরিবার সচেতন না হলে প্রাথমিক পর্যায়ে ঝরে পড়া শিক্ষার্থীর সংখ্যা বাড়বে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো.তৌহিদুর রহমান এ প্রসঙ্গে জানান, বিষয়টি শিক্ষা বিভাগের কর্মকর্তাদের মাধ্যমে মনিটরিং করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।