বিইআরসির কারণে এলপিজি শিল্প ধ্বংসের মুখে: আজম জে চৌধুরী

এলপিজি অপারেটরদের সংগঠনের লোয়াবের প্রেসিডেন্ট আজম জে চৌধুরী বলেছেন যে, বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের (বিইআরসি) কারণে এলপিজি (লিকুইড পেট্রোলিয়াম গ্যাস) শিল্প ধ্বংসের মুখে।

আজ মঙ্গলবার (১৫ জুন) দুপুরে রাজধানীর ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলের বল রুমে লোয়াব আয়োজিত ‘এলপি গ্যাসের মূল্যহার এবং এলপি গ্যাস শিল্প, বাজার ও ভোক্তাসাধারণের ওপর ঘোষিত মুল্যহারে প্রভাব’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন তিনি।

আজম জে চৌধুরী বলেন, ৩০ হাজার কোটি টাকার এলপিজি শিল্প ধ্বংস হতে চলেছে। প্রতি বছরে আমরা ৫০ হাজার কিউবিক মিটার গ্যাস বিক্রি করছি। এর সুবিধা সারা বাংলাদেশে মানুষ প্রতিটা ক্ষেত্রেই গ্রহণ করছে। সেটা বন্ধ হতে চলেছে। একটি পক্ষ রয়েছে যাদের ভাবটা এমন, দেশপ্রেম শুধু তাদের আছে আমাদের নেই! আমাদের দেশপ্রেম না থাকলে এই ইন্ডাস্ট্রি বর্তমান অবস্থায় আসতে পারতো না।

লোয়াব প্রেসিডেন্ট বলেন, বর্তমান এলপিজি খাতে মোট ৩০ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ করা হয়েছে, যা জিডিপির প্রায় ৭ শতাংশ। বাংলাদেশে এমন কোনো শিল্প আমি দেখিনি যা পাঁচ বছরে জিডিপির ৬/৭ শতাংশ হতে পারে। এলপিজি ইন্ডাস্ট্রির ফলে আমরা প্রতি বছর ৫০ হাজার কিউবিক মিটার গ্যাস সাশ্রয় করছি। এই ৫০ হাজার কিউবিক মিটার গ্যাস বর্তমানে প্রডাক্টিভ সেক্টরে ব্যবহার হচ্ছে, যা সার বিদ্যুৎ এবং অন্যান্য উৎপাদন খাতে ব্যবহার করা হয়। যে কোনো দেশে এলপিজি সেক্টরের বৃদ্ধি হলে এর পাশাপাশি অন্যান্য শিল্প বৃদ্ধি হয়।

তিনি বলেন, আপনারা সবাই জানেন, আমরা যে মূল্যে এলপিজি গ্যাস বিক্রি করছিলাম আমরা তাতে লোকসানে ছিলাম। ২০১৬ সালে কনজ্যুমার অ্যাসোসিয়েশনের একটি মামলার কারণে বিইআরসি মূল্য নির্ধারণ করা শুরু করে। যখন এলপিজি গ্যাসের বাল্ক প্রাইস ছিল পনেরশো টাকা, সেই প্রেক্ষাপটে এই মামলা দায়ের করা হয়। বর্তমানে সেই প্রেক্ষাপট পরিবর্তন হয়ে গিয়েছ। এলপিজি গ্যাসের দাম নির্ধারণ বিষয়ে আমরা বিইআরসির সঙ্গে বারবার কথা বলেছি, তাদের কাছে গিয়েছি। কিন্তু এই বিষয়ে তাদের কোনো দক্ষতা, যোগ্যতা কোনো কিছুই নেই। দুঃখের বিষয় তারা এমন একটি মূল্য নির্ধারণ করেছে, যা বর্তমান বাস্তব মূল্যের চেয়ে অনেক কম।

এলপিজি গ্যাসের মূল্য নির্ধারণের বিষয়ে তিনি বলেন, আমরা ডিস্ট্রিবিউটরদের খরচ দিয়েছি ৫০ টাকা, তারা সেই খরচ ধরেছে ২৪ টাকা। অন্যদিকে বিপিসির ডিস্ট্রিবিউটরদের খরচ ৫০ টাকা ধরা হয়েছে। এটা খুবই হাস্যকর ব্যাপার নয় কি? সরকারি প্রতিষ্ঠান ডিস্ট্রিবিউটরদের খরচ এক ধরনের আর বেসরকারি প্রতিষ্ঠান আরেক ধরনের। তাদের এলপিজি গ্যাসের মূল্য নির্ধারণ একপেশে। এগুলোর ফলে তারা একটা বৈষম্য সৃষ্টি করছে। এই মানুষগুলো ইন্ডাস্ট্রিকে ধ্বংস করতে চলেছে।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন তানজিম চৌধুরী, জাকারিয়া জালাল, শামসুল হকসহ লোয়াবের অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।