ঈদের আগে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে আদা-রসুনের দাম

আর মাত্র কয়েকদিন পরই মুসলমান ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম বড় উৎসব পবিত্র ঈদুল আজহা বা কোরবানির ঈদ পালিত হবে। ঈদ সামনে রেখে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে আদা ও রসুনের দাম। তবে ঈদ দোরগোড়ায় চলে আসলেও কোনো প্রভাব পড়েনি গরম মসলার দামে।

মহামারি করোনাভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে সরকার ঘোষিত বিধিনিষেধের কারণে মসলার বিক্রিতে ভাটা পড়েছে। ফলে এবারের ঈদের আগে গরম মসলার বাজার বেশ ‘ঠান্ডা’। ফলে ঈদের আগে গরম মসলার দাম না বেড়ে উল্টো কমেছে।

পাইকারি ব্যবসায়ীরা বলছেন, স্বাভাবিক সময়ে গরম মসলা যে পরিমাণ বিক্রি হয়, কোরবানির ঈদের আগের এক মাস তার থেকে ২০-৩০ শতাংশ বেশি বিক্রি হয়। তবে এবার ঈদ কেন্দ্রিক কোনো বিক্রি নেই। এমনকি স্বাভাবিক সময়ে যে মসলা বিক্রি হয়, এখন বিক্রি তার ২০-৩০ শতাংশ মতো আছে। অর্থাৎ স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় বিক্রি ৭০ শতাংশের মতো কমে গেছে।

বিক্রি কমে যাওয়ার কারণ হিসেবে তারা বলছেন, এখন করোনাভাইরাসের প্রকোপ গ্রাম অঞ্চলে বড় আকারে ছড়িয়ে পড়েছে। করোনার সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে সরকার বিধিনিষেধ আরোপ করেছে। যে কারণে দোকান খুব বেশি সময় খোলা রাখা যাচ্ছে না। আবার ঢাকার বাহিরের ক্রেতারা ঢাকায় আসতে পারছেন না। সবমিলিয়ে বিক্রি কমে গেছে। আর বিক্রি কমার কারণে দামও কমেছে।

গরম মসলার দাম কমলেও আদা ও রসুনের দাম লাফিয়ে লাফিয়ে বেড়েছে। সপ্তাহের ব্যবধানে চীনা আদার দাম কেজিতে ৬০ টাকা এবং রসুনের দাম ৪০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। খুচরা পর্যায়ে চীনা আদার কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৮০ থেকে ২০০ টাকা, যা এক সপ্তাহ আগে ছিল ১৩০ থেকে ১৪০ টাকার মধ্যে। আর চীনা রসুন বিক্রি হচ্ছে ১৬০ থেকে ১৮০ টাকা কেজি। এক সপ্তাহ আগে এই রসুনের দাম ছিল ১৩০ থেকে ১৪০ টাকার মধ্যে।

চীনা আদা ও রসুনের দাম বাড়ার বিষয়ে কারওয়ান বাজারের এক ব্যবসায়ী বলেন, ‘এখন চীনা আদা ও রসুনের আমদানি কম। দেশি আদা-রসুন বাজারে কম রয়েছে। আবার সামনে ঈদ হওয়ার কারণে সম্প্রতি কিছু ক্রেতা আদা-রসুন বাড়তি পরিমাণে কিনেছেন। এ সবকিছু মিলেই আদা ও রসুনের দাম বেড়েছে। ঈদের আগে আদা-রসুনের দাম কমার সম্ভাবনা কম। বরং পরিস্থিতি যা তাতে মনে হচ্ছে সামনে দাম আরও বাড়তে পারে।’

এদিকে মসলার বাজারে খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, খুচরা পর্যায়ে শুকনা মরিচের কেজি বিক্রি হচ্ছে ২০০ থেকে ২৪০ টাকা। হলুদের কেজি বক্রি হচ্ছে ২২০ থেকে ২৮০ টাকায়। এ দুটি পণ্যের দাম সম্প্রতি বাড়া বা কমার ঘটনা ঘটেনি।

তবে সপ্তাহখানেক আগে ৪০০ থেকে ৪২০ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া ভারতীয় জিরার দাম কমে ৩৫০ থেকে ৩৮০ টাকার মধ্যে বিক্রি হচ্ছে। দারুচিনির কেজি বক্রি হচ্ছে ৪০০ থেকে ৪২০ টাকার মধ্যে, যা এক সপ্তাহ আগে ছিল ৪৫০ থেকে ৪৭০ টাকা।

দাম কমার এ তালিকায় রয়েছে এলাচ এবং লবঙ্গ। এক সপ্তাহ আগে ৩০০০ থেকে ৩২০০ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া এলাচের দাম কমে ২৬০০ থেকে ২৮০০ টাকায় নেমে এসেছে। আর লবঙ্গের কেজি বিক্রি হচ্ছে ১০৫০ থেকে ১১০০ টাকার মধ্যে, যা এক সপ্তাহ আগে ছিল ১২০০ থেকে ১৩০০ টাকা।

খুচরা বাজারের মতো পাইকারি বাজারেও গরম মসলার দাম কমেছে। পাইকারিতে ভারতীয় জিরার কেজি বিক্রি হচ্ছে ২৭০ থেকে ২৮০ টাকা, যা আগে ছিল ৩০০ থেকে ৩২০ টাকা। চারুচিনির কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩১০ থেকে ৩৬০ টাকা, যা আগে ছিল ৩৮০ থেকে ৪০০ টাকা। এলাচের কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৭৫০ থেকে ২৪৫০ টাকার মধ্যে, যা আগে ছিল ২২০০ থেকে ২৭০০ টাকা। আর লবঙ্গের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৯০০ থেকে ৯৪০ টাকা, যা আগে ছিল ১০৫০ থেকে ১১০০ টাকা।