পোশাক শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি চূড়ান্ত হবে আজ

পোশাক শিল্পের শ্রমিক এবং কর্মচারীদের মাসিক ন্যূনতম মজুরি চূড়ান্ত হচ্ছে। আজ রোববার (২৬ নভেম্বর) মজুরি নির্ধারণে সরকার গঠিত নিম্নতম মজুরি বোর্ডের শেষ সভায় চুড়ান্ত মজুরি ঘোষণা দেওয়ার কথা রয়েছে। ঘোষিত মজুরির খসড়া সুপারিশের ওপর মালিক, শ্রমিকসহ বিভিন্ন পক্ষের মতামতের ভিত্তিতে মজুরি চূড়ান্ত করার নিয়ম রয়েছে। বিভিন্ন পক্ষ থেকে খসড়া মজুরি পুনর্মূল্যায়নের অনুরোধও এসেছে মজুরি বোর্ডে।

দেশের তৈরি পোশাক কারখানার শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি আজ রবিবার চূড়ান্ত করা হবে। এ ব্যাপারে মজুরি বোর্ডের শেষ বৈঠক শ্রম মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত হবে। বৈঠকের পর চূড়ান্ত গেজেট প্রকাশ করা হবে। নিম্নতম মজুরি বোর্ড গত ৭ নভেম্বর গার্মেন্টস শ্রমিকদের জন্য সাড়ে ১২ হাজার টাকা ন্যূনতম মজুরি ঘোষণা করে।

আজ অনুষ্ঠেয় মজুরি বোর্ডের সপ্তম এবং সমাপ্ত বৈঠক শেষে চূড়ান্ত মজুরি ঘোষণা করা হবে। শ্রম মন্ত্রণালয়ে বৈঠক শেষে চূড়ান্ত ঘোষণা দেবেন শ্রমপ্রতিমন্ত্রী বেগম মন্নুজান সুফিয়ান। আগামী দুই তিন দিনের মধ্যেই এ সংক্রান্ত গেজেট প্রকাশ করা হবে। আগামী ১ ডিসেম্বর থেকে নতুন মজুরি কাঠামো কার্যকর হবে।

মজুরি বোর্ডে শ্রমিক পক্ষের প্রতিনিধি সিরাজুল ইসলাম রনী গণমাধ্যমকে বলেন, গত বৈঠকে সুপারিশ করা সাড়ে ১২ হাজার টাকার ন্যূনতম মজুরিতে পরিবর্তন আসার সুযোগ নেই। তবে পঞ্চম গ্রেড বাদে বাকি গ্রেডগুলোর মজুরি কিছু বাড়তে পারে। এ বিষয়ে মজুরি বোর্ডের সদস্যদের মধ্যে আলোচনা হয়েছে। তিনি বলেন, মাত্র ৫০ হাজার শ্রমিকের জন্য নূন্যতম সাড়ে ১২ হাজার টাকা। পোশাক খাতের ৪০ লাখ শ্রমিকের বাকিদের বিষয়ে খুব আলোচনা নেই। অথচ চতুর্থ থেকে প্রথম গ্রেডে শ্রমিকের সংখ্যাই বেশি। এ সব গ্রেডের মূল মজুরি বাড়ানোর বিষয়ে প্রস্তাব দেবেন তিনি।

গতকাল ইন্ডাস্ট্রিঅল গ্লোবাল কাউন্সিলের পক্ষ থেকে মজুরি বোর্ডের চেয়ারম্যান বরাবরে চিঠি দেওয়া হয়। বিশ্বব্যাপী ৫ কোটি শ্রমিকের প্রতিনিধিত্ব করে এই সংগঠন। চিঠিতে সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক এটলি হোয়ে বলেন, ‌‘শ্রমিকরা ২৩ হাজার টাকা ন্যূনতম মজুরি দাবি করছে। দু:খজনকভাবে যদি তাদের এ দাবি মানা না হয় তার অর্থ দাঁড়াবে কেবল মালিক পক্ষের প্রস্তাবই বিবেচনায় নিয়েছে মজুরি বোর্ড।’

এ নিয়ে ঘোষিত মজুরি পুন:মূল্যায়নের জন্য বিভিন্ন পক্ষ থেকে ১৯৪টি চিঠি এসেছে নিম্নতম মজুরি বোর্ডে। এসব চিঠির মধ্যে ১৬৮টি এসেছে বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠনের পক্ষ থেকে। এসব সংগঠন ২৩ থেকে ২৫ হাজার টাকা ন্যূনতম মজুরির সুপারিশ করেছে। অন্যদিকে ২৩টি কারখানার মালিকদের পক্ষ থেকে দেওয়া চিঠিতে ন্যূনতম মজুরি কমিয়ে ১০ হাজার টাকা নির্ধারণের সুপারশি করা হয়।

কোনো কোনো প্রতিষ্ঠান মালিক পক্ষের দেওয়া প্রথম প্রস্তাব ১০ হাজার ৪০০ টাকায় ফিরে যাওয়ার সুপারিশ করেছে। এর বাইরে নিরপেক্ষ সংস্থা হিসেবে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ–টিআইবি এবং বাংলাদেশ লিগাল এইড অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্রাস্ট–ব্লাস্ট চিঠি দেয়।

নিম্নতম মজুরি বোর্ডের সচিব রাইসা আফরোজ বলেন, আজ রোববারও মজুরি বোর্ডের বৈঠক শুরুর আগ পর্যন্ত সুপারিশ জমা নেওয়া এবং বিবেচনার জন্য বোর্ডে উপস্থাপন করা হবে।

Scroll to Top