চবিতে পুলিশ ও প্রক্টরিয়াল বডির সামনে সংঘর্ষ: আহত ৩০

হঠাৎ করেই রণক্ষেত্রে পরিণত হয় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) ক্যাম্পাস। বগিভিত্তিক দুটি গ্রুপ সিএফসি ও সিক্সটি নাইনের সংঘর্ষে দিনভর উত্তপ্ত থেকে সন্ধ্যায় রূপ নেয় তুমুল সংঘর্ষে। এতে তিনজন পুলিশসহ উভয় গ্রুপের অন্তত ৩০ জন গুরুতর আহত বলে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টার।

গত শুক্রবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) বিকাল সাড়ে চারটার দিকে পূর্বের ঘটনার জের ধরে শাহ জালাল হল ও শাহ আমানত হলের মধ্যবর্তী স্থানে শুরু হয় এ সংঘর্ষ। চলে রাত অবধি। এতে আহতদের কারোই নাম পরিচয় জানা যায়নি।

পুলিশ ও প্রক্টরের সামনে ৫ ঘণ্টা ধরে চলেছে এই সংঘর্ষ। কোনোভাবেই নিয়ন্ত্রণে নিতে পারছিলো না পরিস্থিতি। এছাড়া দুপুরে শাহজালাল ও শাহআমানত হল সংঘর্ষে জড়ায়। পরে সন্ধ্যায় শহীদ আব্দুর রব হল সংঘর্ষে জড়ায়। শাহজালাল হলে সিক্সটি নাইন, শাহ আমানত হলে ও শহীদ আব্দুর রব হলে সিএফসি অবস্থান করে। পরে রাত সাড়ে ৯ টার দিকে প্রক্টরিয়াল বডি পুলিশের সহায়তায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনে হল দুটিতে তল্লাশি শুরু করে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর নুরুল আজিম সিকদার গণমাধ্যমকে বলেন, ‘পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে এসেছে। আমরা হলে তল্লাশি করে কিছু দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করেছি।’

এর আগে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টেশনসংলগ্ন এলাকায় চায়ের দোকানে চেয়ারে বসাকে কেন্দ্র করে বগিভিত্তিক সিএফসি গ্রুপের এক কর্মীকে মারধর করেন সিক্সটি নাইন গ্রুপের কর্মীরা। এ ঘটনার জেরে সেদিন রাতেও সংঘর্ষে জড়িয়েছিল ছাত্রলীগের এই দুই পক্ষ। বারবার সংঘর্ষে জড়ানোর প্রশ্নে তারা একে অপরকে দোষারোপ করছে।

সিএফসির নেতা ও শাখা ছাত্রলীগের গত কমিটির সহসভাপতি মির্জা খবির সাদাফ গণমাধ্যমকে বলেন, ‘গতকালকের সংঘর্ষের পর আজকে আবার সিক্সটি নাইনের কর্মীরা আমাদের এক কর্মীকে ধাওয়া করে।’

সিক্সটি নাইন গ্রুপের নেতা ও ছাত্রলীগের আগের কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাইদুল ইসলাম সাইদ গণমাধ্যমকে বলেন, ‘আজকে হঠাৎ করেই তারা শাহজালাল হলের দিকে ঢিল ছুঁড়তে শুরু করে। ছাত্রলীগের কমিটি না থাকার ফলে জবাবদিহিতা নেই, বিধায় এই সংঘর্ষগুলো হচ্ছে। আর প্রশাসনও ঝামেলাগুলো ছোটো থাকতে সমাধান করতে না পারায় এরকমটা হচ্ছে।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসা কেন্দ্রের কর্মকর্তা মোহাম্মদ আবু তৈয়ব গণমাধ্যমকে বলেন, ‘এখনো পর্যন্ত ১৩ জন আমাদের কাছে চিকিৎসা নিতে এসেছে। এর মধ্যে ৪ জনকে কুপিয়ে জখম করায় তাদের অবস্থা বেশ গুরুতর। তাদের চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।’

এর আগে বৃহস্পতিবার দুপুরে শাটল ট্রেনের বগিভিত্তিক গ্রুপ বিজয়ের সঙ্গে সিক্সটি নাইনের কর্মীদের সংঘর্ষে ৮ জন আহত হয়েছিল। সবমিলিয়ে দুদিনে তিন সংঘর্ষে বগিভিত্তিক তিন পক্ষের জনা ত্রিশেক নেতাকর্মী আহত হয়েছে।