বেকার অনিল কাপুরের খরচ চালাতেন স্ত্রী!

বলিউডের এভারগ্রিন অভিনেতা বলা হয়ে থাকে অনিল কাপুরকে। জনপ্রিয় এই অভিনেতা আশির দশক থেকে অভিনয় করছেন। এই সময়ে এসেও তিনি নিয়মিত দাপটের সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছেন। শুধু তাই-ই নয়, ৬২ বছর পেরিয়েও তার চেহারার মাধুর্য কমেনি এতটুকু!

তুমুল জনপ্রিয় এই অভিনেতার আজকের অবস্থানের পেছনে রয়েছে অনেক কষ্ট আর হতাশার গল্প। আশির দশকের প্রথম দিকে যখন মুম্বাই ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ খুঁজছেন তরুণ অনিল, তখন কেবল হতাশাই মিলছিলো। সেই সময়ে তার ভরসা হয়ে থাকেন প্রেমিকা তথা বর্তমান স্ত্রী সুনীতা কাপুর। যিনি ওই সময়ে বলিউডের অন্যতম জনপ্রিয় মডেল ছিলেন।

১৯৮০ সালের কথা। অনিল কাপুরের সঙ্গে বন্ধুদের মাধ্যমেই আলাপ হয়েছিল সুনীতার। বন্ধুর থেকেই সুনীতার ফোন নম্বর নিলেন অনিল। আর তার পর শুরু হল কথা। মাত্র কয়েক সপ্তাহ কথা হয়েছে দু’জনের। এ বার দু’জনকে একা দেখা করতেই হবে। সেই থেকে বন্ধুত্ব।

কিছু দিন পর বন্ধুত্ব গড়ায় প্রেমে। অনিল কাপুরের তখন অভাবের জীবন। প্রতিনিয়ত বাসে যাতায়াত করতেন। যখন ট্যাক্সিতে আসতেন, ভাড়া মেটাতেন সুনীতা। প্রচুর উপহারও দিতেন। কখনও বা হাত খরচও দিতেন। কিন্তু কাজের খোঁজে ছুটতে থাকা উঠতি নায়ক অনিল তখন তেমন কিছুই দিতে পারতেন না সুনীতাকে।

অনিল কাপুর জানিয়েছেন, তিনি বাড়ি থেকে নিজের খরচ নেয়া বন্ধ করে দিয়েছিলেন। যার কারণে মুম্বাইতে থাকতে তার অনেক কষ্ট করতে হয়। সে সময় অনিলের খরচ চালাতেন সুনীতা। অনিল কাজ না পেয়ে মন খারাপ করে থাকতেন। কিন্তু উৎসাহ দিতেন সুনীতা। অনিলের পাশে থাকার জন্য প্রচুর কাজও ছেড়েছেন তিনি। শুটিংও বাতিল করেছেন।

সুনীতার বাবা ছিলেন ব্যাংকের বড় অফিসার। সুনীতা জনপ্রিয় মডেল। অন্যদিকে কয়েকটি সিনেমায় পার্শ্ব চরিত্রে অভিনয় করার পর ১৯৮৩ সালে ‘উও সাত দিন’ সিনেমায় মূল চরিত্রে সুযোগ পান অনিল। আলোচনায় আসেন নায়ক। বিয়ে করতে চান সুনীতাকে। কিন্তু সুনীতার পরিবারের আপত্তি ছিলো তাতে। তাই বিয়েটা হয়নি সেই বছর।

পরের বছর ১৯৮৪ সালে ‘মশাল’ সিনেমায় অভিনয় করে তুমুল জনপ্রিয়তা পেয়ে যান অনিল কাপুর। রাতারাতি তিনি বলিউডের সেনসেশন বনে যান। এরপর সুনীতার পরিবার রাজি হয়। যদিও তখন অনিল দুই বার বিয়ের তারিখ পিছিয়ে নেন।

পাঁচ বছর সম্পর্কের পর ১৯৮৪ সালের ১৯ মে বিয়ে করেন অনিল কাপুর ও সুনীতা কাপুর। এরপর থেকে অনিলের পুরো স্টাইলের দায়িত্ব পালন করছেন সুনীতা। এতো বছর পেরিয়ে এসেও অনিল কাপুরের এমন এভারগ্রিন থাকার পেছনে সুনীতার অবদানই বেশি।

নব্বই দশকে মাধুরী দীক্ষিত ও শিল্পা শিরোদকরের সঙ্গে অনিলের প্রেমের গুঞ্জন ছড়ায়। কিন্তু পাত্তা দেননি সুনীতা। স্বামীর ওপর বিশ্বাস রেখেছেন। অনিল বলেছিলেন, ‘দুই মিনিটের ভাল লাগা না সারা জীবনের জন্য আনন্দে থাকা, কোনটা বেছে নেবে মানুষ? সুনীতাকেই আমি ভালবাসি।’

সফল দাম্পত্য জীবনে অনিল ও সুনীতা তাদের সন্তানদেরও মানুষ করেছেন ভালোভাবে। মেয়ে সোনম কাপুর এখন বলিউডের প্রতিষ্ঠিত নায়িকা। এছাড়া আরেক মেয়ে রিয়া ও ছেলে হর্ষবর্ধনকেও দিয়েছেন সুন্দর ভবিষ্যৎ।

Scroll to Top