সিলেটে রায়হান হত্যা: পার্থক্য নেই দ্বিতীয় ময়নাতদন্তেও

সিলেটের বর্তমানে সবচেয়ে আলোচিত ঘটনা হচ্ছে রায়হান হত্যা। সিলেটের বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়িতে নির্যাতনে নিহত রায়হানের দ্বিতীয় ময়না তদন্ত প্রতিবেদন পিবিআইর কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার (২২ অক্টোবর) দ্বিতীয় দফার ময়নাতদন্ত রিপোর্ট মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পিবিআইর পরিদর্শক মহিদুল ইসলামের হস্তগত হয়।

ওসমানী মেডিক্যাল কলেজের ফরেনসিক বিভাগের প্রধান সহকারী অধ্যাপক ডা. শামসুল ইসলাম বলেন, রায়হানকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় আগের ময়নাতদন্ত রিপোর্টের সঙ্গে দ্বিতীয়টার সামঞ্জস্য রয়েছে। আঘাতগুলোও একই। লাঠি দিয়ে আঘাত করার বিষয়টিও একই। কেবল কবর থেকে তোলায় হালকা মাংস খসে গেছে। তাছাড়া গুরুত্বপূর্ণ কিছু বিষয় আছে, সেগুলো আদালত ছাড়া বলা যাবে না।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক মুহিদুল ইসলাম বলেন, আমরা কেবল নিয়ম ফলো করার জন্য ময়নাতদন্ত করিয়েছি। আরো গভীরে জানা যাবে ভিসেরা রিপোর্ট এলে।

তিনি বলেন, গত ১৫ অক্টোবর প্রথম দফা ময়নাতদন্ত রিপোর্টের সঙ্গে দ্বিতীয় দফার রিপোর্টের মিল রয়েছে। এছাড়া মামলায় নতুন করে অনেকের নাম এলেও আর কাউকে গ্রেফতার দেখানো হয়নি।

এরআগে বৃহস্পতিবার (১৫ অক্টোবর) সিলেট জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের অনুমতি সাপেক্ষে দুই নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে আখালিয়া নবাবী মসজিদ সংলগ্ন কবরস্থান থেকে রায়হানের মরদেহ তোলা হয়। ময়নাতদন্ত শেষে এদিন বিকেলে মরদেহ ফের দাফন করা হয়।

রোববার (১১ অক্টোবর) ভোররাতে পুলিশ ফাঁড়িতে নির্যাতন করে ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পর তার মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় নিহতের স্ত্রী বাদী হয়ে কোতোয়ালি থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। এরপর আকবরসহ চার পুলিশকে বরখাস্ত ও তিনজনকে প্রত্যাহার করা হয়। ঘটনার পর থেকে আকবর পলাতক।

মামলাটি পুলিশ সদর দফতরের নির্দেশ তদন্ত করছে পিবিআই। তদন্তভার পাওয়ার পর পিবিআইর টিম ঘটনাস্থল বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়ি, নগরের কাস্টঘর, নিহতের বাড়ি পরিদর্শন করে। সর্বোপরি মরদেহ কবর থেকে তুলে পুনঃময়নাতদন্ত করে। নির্যাতনে নিহত রায়হান উদ্দিনের ১১১ আঘাতের চিহ্ন উঠে এসেছে ফরেনসিক রিপোর্টে। লাঠি দিয়ে করা এসব আঘাতের ৯৭টি লীলাফোলা আঘাত ও ১৪টি ছেলা জখমের চিহ্ন। আর অতিরিক্ত আঘাতের কারণে দেহের ভেতর রগ ফেটে গিয়ে রক্তক্ষণে রোববার সকাল ৭টা ৫০ মিনিটে রায়হানের মৃত্যু হয়।

এ ঘটনায় গত সোমবার (১৯ অক্টোবর) তিন পুলিশ সদস্য ১৬৪ ধারায় আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছেন। এরপর পুলিশ লাইনে বরখাস্ত থাকা কনস্টেবল টিটুকে গ্রেফতার দেখিয়ে পাঁচদিনের রিমান্ডে নেয় পিবিআই।