লো ব্লাড প্রেসার থেকে রেহাই পাওয়ার পথগুলি জেনে নিন

ব্লাড প্রেসার হঠাৎ কমে যাওয়ার বিভিন্ন কারণ থাকতে পারে। যদি কারও ব্লাড প্রেসার ১০০ বা তার কম হয়, তাহলে বুঝতে হবে তার প্রেসার লো। যারা এ সমস্যায় ভুগছেন তাদের প্রেসার হঠাৎ করে লো হয়ে গেলে অজ্ঞান পর্যন্ত হতে পারেন। এজন্য সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে।

ব্লাড প্রেসার কী?

শরীরে একটি পাম্পিং সিস্টেমের মতো কাজ করে হৃদপিণ্ড। শরীরের বিভিন্ন জায়গায় রক্তকে পাঠিয়ে দেয়। রক্ত বিভিন্ন কোষে অক্সিজেন ও অন্যান্য নিউট্রিশন সরবরাহ করে আর দূষিত পদার্থ, কার্বন ডাই অক্সাইড বের করে আনে।

রক্ত যখন একটি ধমনী বা শিরার মধ্য দিয়ে যায়, তখন সেই পার্শ্ব দেওয়ালগুলোতে চাপ সৃষ্টি করে রক্তপ্রবাহ। একেই বলা হয় ব্লাড প্রেসার। এই প্রেসার তৈরি করে হার্ট বা হৃদপিণ্ড।

বিশেষজ্ঞদের মতে, নারীদের মধ্যে ব্লাড প্রেসার লো হওয়ার প্রবণতা বেশি। অনেক নারী তো বুঝতেই পারেন না তিনি লো ব্লাড প্রেসারের সমস্যায় ভুগছেন।

লো ব্লাড প্রেসারের লক্ষণ কী কী?

১. মাথা ঘোরা
২. মাথা ঝিমঝিম করা
৩ সর্বদা দুর্বল লাগা
৪. মাথা ঘুরে পড়ে যাওয়া
৫. চোখে আঁধার দেখা

লো প্রেসার হওয়ার ঝুঁকি কাদের বেশি?

১. গর্ভবতীদের ক্ষেত্রে ব্লাড প্রেসার বাড়লেও সন্তান জন্মের পর প্রেসার নরমালে ফিরে আসা স্বাভাবিক।
২. হার্টের কিছু কিছু সমস্যায় ব্লাড প্রেসার কমে যায় অস্বাভাবিকভাবে। যাকে হাইপোটেনশন বলা হয়।
৩. আবার হাইপোথাইরয়েডিসম রোগীদের মধ্যেও এটি হতে পারে।
৪. শরীর থেকে হঠাৎ অনেকটা পানি বেরিয়ে গেলে বা ডিহাইড্রেশেনের কারণেও ব্লাড প্রেসার কমে যেতে পারে।
৫. কোনো দুর্ঘটনা বা অপারেশনের কারণে শরীর থেকে অনেকটা রক্ত বেরিয়ে গেলে রক্তচাপ পড়ে যায়।
৬. রক্তে কোনো ইনফেকশন প্রবেশ করলে ব্লাড প্রসার মারাত্মক হারে কমে যায়। যা প্রাণঘাতী হতে পারে।
৭. কোনো কোনো অ্যালার্জির কারণেও ব্লাড প্রেসার হঠাৎ কমে যায়।
৮. ভিটামিন বি ১২, ফোলেট, আয়রন ঘাটতি ঘটলে লো প্রেসার হতে পারে।

হঠাৎ ব্লাড প্রেসার কমে গেলে ও লক্ষণগুলো টের পেলে দ্রুত যা করবেন-

১. রোগীকে স্যালাইন খাওয়াতে হবে।
২. বাড়িতে স্যালাইন না থাকলে লবণ পানি খাওয়ানো যেতে পারে।
৩. বিছানায় শুয়ে পা একটু উঁচুতে বালিশের উপর তুলে রাখতে হবে।

সাথে রইল আরও কিছু টিপস :-

হাইপোটেনশন কমাতে পঞ্চাকর্ম খুব ভাল কাজ দিতে পারে। অর্থাৎ বেশ কিছু অভ্যাস বহাল রাখতে হবে। যেমন:
স্নেহাপনা – প্রতিদিন অল্প পরিমাণে ঘি সেবন করা খুব ভাল, এতে দৈহিক ভাতা এবং পিত্ত দশা সুস্থ থাকে।
নাস্যা এক দারুণ কার্যকরী বিষয়, প্রতিদিন এটি অভ্যাস করুন।
প্রতিদিন আয়ুর্বেদিক তেল ব্যবহার করে শরীরে মলিশ করতে পারেন। এতে পেশী এবং রক্ত সঞ্চালন সবই ভাল থাকে।
এছাড়াও, প্রতিদিন পুরনো সময়ের বার্লি খাওয়া খুব ভাল।
ভাতের থেকে ব্রাউন রাইস খেতে পারেন।
সবুজ ডালের কোনও খাবার প্রতিদিন খেতেই পারেন।
প্রতিদিন ভাল করে পানি এবং ফলের রস খেতেই হবে।
স্বল্প মাত্রায় লবণ খাওয়া অভ্যাস করুন।
মদ্যপান এবং ধূমপান কমিয়ে দিন।
প্রতিদিন অল্প করে শরীরচর্চা করা উচিত, এবং ভারী জিনিস বইবেন না।
এক জায়গায় অনেকক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকবেন না, এবং শোয়া থেকে ওঠার সময় তাড়াহুড়ো করবেন না।