রাজধানীতে হঠাৎ বেড়েছে ডায়রিয়ার প্রকোপ

হঠাৎ ডায়রিয়ার প্রকোপে নাভিশ্বাস অবস্থা রাজধানীর আইসিডিডিআরবি হাসপাতালের চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের। ঘূর্ণিঝড় রেমাল পরবর্তী জলাবদ্ধতায় সুয়ারেজ লাইনের সঙ্গে খাবার পানি মিলেমিশে একাকার হওয়াকে প্রাথমিকভাবে এমন উপদ্রবের জন্য দায়ী করছেন বিশেষজ্ঞরা। গরমের প্রভাব না কমা পর্যন্ত এমন পরিস্থিতি বিরাজ করতে পারে আশঙ্কা করে পচা-বাসি খাবার পরিহার ও বিশুদ্ধ পানি পানের পরামর্শ তাদের।

শরীর জুড়ে রাজ্যের ক্লান্তি। শক্তি নেই উঠে দাঁড়ানোর। পানি শূন্যতায় কুঁকড়ে যাচ্ছে কারো মাংস পেশি। হাতে লাগানো একাধিক স্যালাইনের নল। চিৎকার-কান্নাকাটি। সবমিলিয়ে আতঙ্কে ভরা পরিস্থিতি চলছে মহাখালীর আইসিডিডিআরবি হাসপাতালে।

সাধারণত মার্চের শেষ ভাগ থেকে মে মাস পর্যন্ত বাড়ে ডায়রিয়ার প্রকোপ। তবে চলতি বছর কিছুটা ব্যতিক্রম রূপ দেখাচ্ছে রোগটি। স্বাভাবিক সময়ে দৈনিক গড়ে ৩০০ থেকে সাড়ে ৩৫০ রোগী ভর্তি হলেও ২৯ মে এক লাফে রোগী বেড়ে দাড়ায় ৬৫৩ জনে। এরপর গত ৩১ মে থেকে ৫ জুন পর্যন্ত প্রতিদিনই ভর্তি রোগীর সংখ্যা ছিল হাজারের ঘরে।

এক রোগী বলেন, ডায়রিয়ায় এমন অবস্থা হয়েছিল যে মনে হয়েছে আমি আর বাঁচব না, মরে যাব। পরে এখানে ভর্তি হওয়ার পর স্যালাইন যখন দিয়েছে তারপর থেকে কিছুটা সুস্থ মনে হচ্ছে। অপর একজন বলেন, পানির কারণে আমার পেটের সমস্যা হয়েছে।

ভর্তি রোগীর বেশিরভাগের অস্বাভাবিকভাবে শরীরে পানিশূন্যতা তৈরি হয় জানিয়ে এমন উপদ্রবের জন্য প্রাথমিকভাবে রাজধানীতে ঘটে যাওয়া সবশেষ জলাবদ্ধতাকে দায়ী করছেন বিশেষজ্ঞরা।

আইসিডিডিআরবির সিনিয়র মেডিকেল অফিসার ডা. মো. মোশতাক পারভেজ বলেন, ঘূর্ণিঝড়ের পর যে বৃষ্টি হয়েছিল তখন হয়তো খাবার পানির লাইনের সঙ্গে সুয়ারেজের লাইন মিশে গিয়েছিল। এখানে ভর্তি রোগীদের বেশিরভাগই মিরপুর, বাড্ডা, গাজীপুর এবং যাত্রাবাড়ী এলাকার।

গরমের প্রভাব না কমা পর্যন্ত ডায়রিয়ার এমন প্রকোপ বজায় থাকতে পারে আশঙ্কা করে বিশুদ্ধ পানি পান ও যে কোনো খাবার গ্রহণে সতর্ক থাকার পরামর্শ চিকিৎসকদের।

ডা. মো. মোশতাক পারভেজ বলেন, ডায়রিয়া হলেও শিশুদের বুকের দুধ পান বন্ধ করা যাবে না। জরুরি পরিস্থিতি মোকাবিলায় দুটি তাঁবু স্থাপন করে চিকিৎসা চালিয়ে যাচ্ছে হাসপাতালটি।

Scroll to Top