কুষ্টিয়ায় কৃষক হত্যা মামলায় চারজনেয় মৃত্যুদণ্ড

প্রতিটি কৃষক হলো আমাদের দেশের সম্পদ। কুষ্টিয়ায় হানিফ আলী নামের এক কৃষক হত্যা মামলায় চারজনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। আজ বুধবার বেলা ১১টার দিকে কুষ্টিয়া দায়রা জজ আদালতের বিচারক অরূপ কুমার গোস্বামী এ রায় দেন।

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা উপজেলার আড়কান্দি গ্রামের শ্যামল প্রামাণিক (২৫), আসমত আলী মণ্ডল (৪৫), মুকুল হোসেন (২৬) ও দোলেনা বেগম (৪০)। দোলেনা বেগম হানিফ আলীর দ্বিতীয় স্ত্রী।

রায় ঘোষণার সময় আসামিরা আদালতে উপস্থিত ছিলেন। পরে তাদের জেলা কারাগারে পাঠানো হয়।

মামলার সংক্ষিপ্ত এজাহার সূত্রে জানা গেছে, ভেড়ামারা উপজেলার আড়কান্দি গ্রামের কৃষক হানিফ আলী ২০১৭ সালের ১০ এপ্রিল রাত নয়টার দিকে বাড়ি থেকে বের হয়ে আর ফেরেননি। অনেক খোঁজাখুঁজি করেও তাঁর সন্ধান পায়নি পরিবার। পরের দিন সকালে একই উপজেলার মাধবপুর গ্রামের পতিত জমি থেকে তাঁর গলাকাটা লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় নিহতের ছেলে আমিরুল ইসলাম বাদী হয়ে ১১ এপ্রিল অজ্ঞাত আসামিদের নামে ভেড়ামারা থানায় হত্যা মামলা করেন।

মামলাটি ভেড়ামারা থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আশরাফুল ইসলাম তদন্ত করেন। তদন্ত শেষে আসামি শ্যামল প্রামাণিক, আসমত আলী মণ্ডল, মুকুল হোসেন ও দোলেনা বেগমের বিরুদ্ধে একই বছরের ১৫ জুন আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়। এর আগে চার আসামিই আদালতে ১৬৪ ধারায় হত্যার সঙ্গে জড়িত থাকার স্বীকার করে জবানবন্দি দেন।

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী অনুপ কুমার নন্দী প্রথম আলোকে বলেন, আসামিদের স্বীকারোক্তিতে অভিন্ন বিবরণ উঠে আসে। দোলেনার স্বীকারোক্তি অনুযায়ী, তাঁর স্বামী হানিফ আলী আসামি আসমতের সঙ্গে তাঁর অনৈতিক সম্পর্ক আছে বলে সন্দেহ করতেন। এ ছাড়া আসামি মুকুলের সঙ্গে হানিফের জমিজমা নিয়ে গোলমাল ছিল। আসমত ও শ্যামলকে মুকুল হাত করেন। মুকুল, আসমত ও শ্যামলের জবানবন্দিতে জানা যায়, আসামি মুকুলের ভাই একটি হত্যা মামলার আসামি। হানিফকে হত্যা করলে তাঁর ভাইয়ের মামলা হালকা হবে বলে আসামি মুকুল অপর দুজন আসামি শ্যামল ও আসমতকে জানান। আসামিরা ২০১৭ সালের ১০ এপ্রিল সন্ধ্যায় বসে পরিকল্পনা করেন এবং সুপরিকল্পিতভাবে হানিফ আলীকে হত্যা করেন। তিনি আরও বলেন, সাক্ষ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে আদালত চারজনকেই ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেন।

রায়ে নিহতের পরিবারের সদস্যরা সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। তাঁরা দ্রুত এই রায় কার্যকরের দাবি জানান।

আসামিদের পক্ষে আইনজীবী ছিলেন আবু জাফর সিদ্দিকী ও আয়েশা সিদ্দিক। আবু জাফর সিদ্দিকী বলেন, আসামিদের সঙ্গে কথা বলে উচ্চ আদালতে যাওয়া হবে।
:প্রথম আলো