যশোরের শার্শায় ঋণ প্রলোভনে হতদরিদ্র কয়েকশ গ্রাহকের ২০ লাখ টাকা নিয়ে ‘লাপাত্তা’ হয়ে যাওয়ার অভিযোগ ওঠেছে ‘পল্লী উন্নয়ন সমিতি’ নামে একটি এনজিও’র বিরুদ্ধে। উপজেলার জামতলা সামটা গ্রামে অবস্থিত এনজিওটির অফিসে এসে ভুক্তভোগীরা একত্রিত হয়ে এ অভিযোগ করেন।
যে ব্যক্তি পাঁচ হাজার টাকা দেবেন তাকে ৫০ হাজার টাকা ঋণ, যিনি ১০ হাজার দেবেন তাকে এক লাখ ও ২০ হাজার টাকা দিলে দুই লাখ টাকা ঋণ দেওয়া হবে। এই প্রলোভনে পড়ে শার্শা ও ঝিকরগাছা উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের প্রায় ২০০ মানুষ আজ পথে বসেছে।
তাদের ভাষ্যে, \’পল্লী উন্নয়ন সমিতি\’র সরকারি রেজিস্ট্রেশন নম্বর ম-৭৫৮/১৯৯০। তারা নিজেদের এনজিও কর্মকর্তা বলে পরিচয় দেন।
তবে এই নামে কোনো বেসরকারি সংস্থা (এনজিও) আছে কিনা তা যাচাই করা যায়নি।
ভুক্তভোগীরা বলেন, এক সপ্তাহ আগে চারজন লোক উপজেলার জামতলা সামটা গ্রামে \’পল্লী উন্নয়ন সমিতি\’ নামের একটি অফিস খোলেন। তারা সামটা গ্রামের আব্দুল খালেকের ছেলে মনিরুজ্জামান মনিরের বাড়ি ভাড়া নিয়ে ‘শার্শা জোনাল অফিস’ পরিচয়ে কার্যক্রম চালু করেন।
জামতলা বাজারের মর্ডান ডেকোরেটরের মালিক আল-মামুন বলেন, সোমবার আনুষ্ঠানিকভাবে তাদের অফিস উদ্বোধনের জন্য স্টেজ প্যান্ডেল তৈরি করি। সব কাজ শেষ হওয়ার পর কিছু টাকা বায়না দেওয়ার কথা ছিল, কিন্তু রবিবার বিকেল থেকে তারা লাপাত্তা। তাদের ফোনও বন্ধ রয়েছে।
এনজিও কর্মকর্তারা লাপাত্তা হয়ে যাওয়ার সংবাদ পেয়ে ঋণপ্রত্যাশীরা ওইদিন সকাল থেকে ওই অফিসের সামনে দাঁড়িয়ে পাওনা টাকা আদায়ের জন্য কান্নাকাটি করছেন।
এ বিষয়ে অফিস ভাড়া দেওয়া বাড়ির মালিক মনিরুজ্জামান জানান, এক সপ্তাহ আগে মাসিক ২৫ হাজার টাকায় ওই এনজিও কর্মকর্তারা বাড়িটি ভাড়া নেন। সোমবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) অফিস উদ্বোধন করা হবে। ওই সময় অফিসের ঊধ্র্বতন কর্মকর্তারা এসে তিন লাখ টাকা জামানত দিয়ে চুক্তিনামা করবেন বলে তারা বলেছিলেন। রবিবার বিকেল থেকে আমার বাড়ির রুমগুলো ফেলে রেখে এনজিও কর্মকর্তারা পালিয়েছেন।
শার্শার বাগআঁচড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল খালেক বলেন, এভাবে একটি এনজিও এসে অফিস ভাড়া করেছে, তা আমার জানা ছিল না। বিষয়টি তিনি জানেন না। এ ব্যাপারে কেউ তার সঙ্গে যোগাযোগও করেনি।
শার্শা থানার ওসি এসএম আকিকুল ইসলাম বলেন, এমন ধরনের কোনো তথ্য আমাদের কাছে নেই। কোনো অভিযোগও আমরা পায়নি। তবে অভিযোগ পেলে তদন্তসাপেক্ষ আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।