ঈদের আগে বাড়ল মাংসের দাম

ঈদ উপলক্ষে মাংসের চাহিদা বেশি থাকে। আর এই সুযোগটাই লুফে নেয় খামারি এবং মাংস ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট। প্রতিবারের মতো এবারও ঈদের আগেই বাড়ছে সকল প্রকার মাংসের দাম। কারণ হিসেবে একে অপরকে দুষছেন খামারি ও ব্যাবসায়ীরা।

রাজধানীর বাজারে ব্রয়লার মুরগি কেজি ২৪০ থেকে ২৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। সোনালি মুরগি মানভেদে ৩৪০ থেকে ৩৬০ টাকা কেজি। গরুর মাংসের দাম আরো বেড়ে ৮০০ টাকা পর্যন্ত উঠেছে।

বিক্রেতারা বলছেন, ঈদের কারণে বাজারে মাংসের চাহিদা অনেক বেড়েছে। এই সুযোগে খামারিরাই গরু ও মুরগির দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন। যার প্রভাব পড়েছে বাজারে। ক্রেতারা বলছেন, ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে দাম বাড়িয়ে বিক্রি করছেন।

গতকাল রবিবার শবেকদরের ছুটির দিনে রাজধানীর কারওয়ান বাজার, রামপুরা, বাড্ডা ও জোয়ারসাহারা বাজার ঘুরে ক্রেতার উপস্থিতি বেশি দেখা গেছে। বেশি ভিড় লক্ষ্য করা গেছে মুরগি ও গরুর মাংসের দোকানগুলোতে। গত সপ্তাহে ব্রয়লার মুরগির কেজি ২১০ থেকে ২২০ টাকায় বিক্রি হলেও গতকাল ২০ থেকে ৩০ টাকা বেশি ছিল। একই রকম বেড়েছে সোনালি মুরগির দাম।

গত সপ্তাহে বাজারে প্রতি কেজি গরুর মাংস ছিল ৭৫০ থেকে ৭৮০ টাকা, গতকাল বিক্রি হয়েছে ৭৮০ থেকে ৮০০ টাকায়। তবে গোটাকয়েক দোকানে এখনো ৭৫০ টাকায়ও গরুর মাংস পাওয়া যাচ্ছে।

রাজধানীর কারওয়ান বাজারের মা আয়েশা ব্রয়লার হাউসের মুরগি বিক্রেতা আমজাদ হোসেন কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘ঈদ উপলক্ষে খামারিরা মুরগির দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। চাহিদার তুলনায় বাজারে এখন মুরগির সরবরাহও কম। তাই নতুন করে মুরগির দাম বেড়ে গেছে।


বাংলাদেশ মাংস ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি গোলাম মুর্তজা বলেন, ‘ বেশির ভাগ জায়গায় গরুর মাংস ৭৫০ টাকা কেজি বিক্রি হয়েছে। তবে কেউ কেউ ৮০০ টাকায়ও বিক্রি করছেন।’

বাজারে গিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন ভোক্তারা। রাজধানীর জোয়ারসাহারা বাজারে ক্রেতা সামসুল হক বাবুল বলেন, ‘এক সপ্তাহের ব্যবধানেই ব্রয়লার মুরগি কেজিতে ৪০ টাকা বেড়ে গেল, সেটি কিভাবে সম্ভব! সরকারের দায়িত্বরত সংস্থাগুলোর নজরদারি না থাকার সুযোগ নিচ্ছে ব্যবসায়ীরা।’

প্রান্তিক খামারিদের সংগঠন বাংলাদেশ পোল্ট্রি অ্যাসোসিয়েশনের (বিপিএ) সভাপতি সুমন হাওলাদার বলেন, ‘করপোরেট গ্রুপগুলোর কৃত্রিম সংকটে মুরগির বাচ্চা কিনতে না পেরে উৎপাদন থেকে বাধ্য হয়ে সরে যাচ্ছে প্রান্তিক খামারিরা। এখন বেশির ভাগ মুরগি করপোরেট গ্রুপগুলোর, বাজার নিয়ন্ত্রণ করছে তারাই। ফলে বাজারে মুরগির দাম বাড়বে এটাই স্বাভাবিক।’

প্রান্তিক খামারিদের উৎপাদন খরচ বাড়ছে জানিয়ে বিপিএ সভাপতি আরো বলেন, ‘একটি মুরগির বাচ্চা উৎপাদন করতে খরচ হয় ২৮ থেকে ৩০ টাকা। অথচ প্রান্তিক খামারিদের সেই বাচ্চা কিনতে হয় ৮০ থেকে ৯০ টাকায়। অন্যদিকে ব্রয়লার মুরগির ফিড উৎপাদন করতে খরচ হয় ৫০ থেকে ৫৫ টাকা, কিন্তু প্রান্তিক খামারিদের সেই ফিড কিনতে হয় ৭০ থেকে ৭৫ টাকা কেজি দরে। আর এক কেজি ব্রয়লার মুরগি উৎপাদন করতে খরচ হয় ১৭০ থেকে ১৮০ টাকা।’

Scroll to Top