সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা অধ্যাপক জামিলুর রেজা চৌধুরী আর নেই

জাতীয় অধ্যাপক ও সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা জামিলুর রেজা চৌধুরী আর নেই। আজ মঙ্গলবার ভোররাতে তিনি ইন্তেকাল (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন) করেন। মৃত্যুকালে অধ্যাপক জামিলুর রেজা চৌধুরীর বয়স হয়েছিল ৭৭ বছর।

জামিলুর রেজা চৌধুরীর পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, গত রাতে ধানমন্ডির বাসায় তিনি ঘুমিয়ে ছিলেন। ভোরে সাহরির সময় তার স্ত্রী তাকে ডাক দেন। কোনো সাড়া না পাওয়ায় তাকে স্কয়ার হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে তাকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক। চিকিৎসকেরা জানান, হাসপাতালে আনার আগেই তিনি মারা গেছেন।

আজ বাদ জোহর জানাজা শেষে তাঁকে বনানী কবরস্থানে দাফন করা হবে বলে জানান ।

জামিলুর রেজা চৌধুরী সবশেষ ইউনিভার্সিটি অব এশিয়া প্যাসিফিকের (ইউএপি) উপাচার্যের দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন।

জামিলুর রেজা চৌধুরী একাধারে গবেষক, শিক্ষাবিদ, প্রকৌশলী ও বিজ্ঞানী ছিলেন। তার জন্ম ১৯৪৩ সালে, সিলেটে। বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বুয়েট) দীর্ঘ সময় ধরে অধ্যাপক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন জামিলুর রেজা চৌধুরী। দায়িত্ব পেয়েছিলেন ১৯৯৬ সালের সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা হিসেবেও।

বাবার বদলির চাকরির কারণে প্রাথমিক শেষ করে ময়মনসিংহ জেলা স্কুলে ভর্তি হয়।এরপর ঢাকায় প্রথমে নবাবপুর সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় ও পরে সেইন্ট গ্রেগরিজ হাই স্কুল থেকে ১৯৫৭ সালে তিনি ম্যাট্রিক পাস করেন।

১৯৫৯ সালে ঢাকা কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক শেষ করে ভর্তি হন তখনকার আহসানউল্লাহ ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ (বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় )। ১৯৬৩ সালে সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে স্নাতক শেষ করে সেখানেই প্রভাষক হিসেবে শিক্ষকতা জীবন শুরু করেন।

স্বাধীনতার পর এ দেশে যত বড় বড় ভৌত অবকাঠামো তৈরি হয়েছে, তার প্রায় প্রতিটির সঙ্গেই জামিলুর রেজা চৌধুরী কোনো না কোনোভাবে জড়িত ছিলেন। যুক্ত ছিলেন বঙ্গবন্ধু সেতু নির্মাণের পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে। হাত দেন পদ্মা সেতু নির্মাণের বিশাল কর্মযজ্ঞে।

জামিলুর রেজা চৌধুরী একসময় যুক্তরাষ্ট্রে কাজের ডাক পেয়েছিলেন বিখ্যাত আরেক বাংলাদেশি প্রকৌশলী এফ আর খানের কাছ থেকে।

দেশে-বিদেশে বিভিন্ন অবদানের জন্য সমাদৃত জামিলুর রেজা চৌধুরীর প্রায় ৭০টি গবেষণা প্রবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে। কাজের স্বীকৃতি হিসেবে পেয়েছেন অনেক পুরস্কার আর সম্মাননা। ২০১৭ সালে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি খাতে অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে তিনি বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে একুশে পদক লাভ করেন।