‘রোহিঙ্গাদের সাহায্য করতে পেরে বাংলাদেশ গর্বিত’

‘চলমান রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে বাংলাদেশ তার ৪৬ বছরের ইতিহাসে সবচেয়ে কঠিন সময় পার করছে। মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য থেকে প্রচুরসংখ্যক রোহিঙ্গা প্রতিবেশী বাংলাদেশে আসছে। সেদেশের সরকার তাদের ঘরবাড়ি থেকে তাদের উচ্ছেদ করছে, যাদের অনেকের বিরুদ্ধে সরকারবিরোধী ও বিদ্রোহের অভিযোগ রয়েছে। তাদের সামনে পথ অল্প। বাংলাদেশই তাদের কাছে কাছাকাছি থাকা আশ্রয়স্থল। এদেশে আশ্রয় নেয়া এত বিশালসংখ্যক রোহিঙ্গাদের সহায়তা করা অবশ্যই দুঃসাধ্য। কিন্তু বাংলাদেশ তাদের সহায়তা ও বিপুল পরিমাণ অর্থ খরচ করতে পেরে গর্বিত।’

টোকিওভিত্তিক অনলাইন নিউজ ম্যাগাজিন ‘দ্য ডিপ্লোম্যাট’-এ প্রকাশিত এক নিবন্ধে এসব বলা হয়েছে। নিবন্ধটি লিখেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে ও তার তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়। ২৫ সেপ্টেম্বর প্রকাশিত ওই নিবন্ধে জয় আরও বলা বলেন- ‘বেশিরভাগ মানুষই মনে করেন, বিশাল এ সমস্যা সামাল দিতে ভালোভাবে প্রস্তুত রয়েছে বাংলাদেশ। অথচ জঘন্যভাবে ১৬ কোটি মানুষের এই বাংলাদেশকেই ১৯৭০ সালে ‘তলাবিহীন ঝুড়ি’ বলেছিলেন তৎকালীন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হেনরি কিসিঞ্জার।’

নিবন্ধে জয় বলা হয়, ‘বাংলাদেশের ইতিহাসেও গণহত্যা ও শরণার্থী বিষয়টি আছে। ৭১ এর মহান মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তানিবাহিনি ও তাদের এ দেশীয় দোসররা গণহত্যা চালায়। এতে অন্তত ৩০ লাখ মানুষ শহীদ হয়, আড়াই লাখ মা-বোন নির্যাতিত হন। বাস্তুচ্যুত হয় অন্তত ৪ কোটি মানুষ, এদের ১ কোটি মানুষ ভারতে গিয়ে আশ্রয় নেয়।’

জয় বলেন, ‘রোহিঙ্গাদের দুর্দশা সম্পর্কে ভালো বুঝতে পারে বাংলাদেশ। অর্ধশতাব্দী আগে যখন বাংলাদেশের এমন সহায়তা দরকার হয়েছিল, তাতে সাড়া দিয়ে ভারত ১ কোটি বাংলাদেশি শরণার্থী নেয়। বাংলাদেশও একইভাবে রোহিঙ্গাদের প্রতি সাহায্যের হাত বাড়াতে আগ্রহী।’

নিবন্ধে বলা হয়, ‘গত আগস্টের শেষ থেকে মিয়ানমার থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে এসেছে অন্তত ৪ লক্ষাধিক রোহিঙ্গা। এরআগে থেকেই ৪ লাখ ২০ হাজার রোহিঙ্গা। তবে এখনও রাখাইনে সেনাবাহিনীর দমন ও উচ্ছেদ অভিযান অব্যাহত থাকায় বাংলাদেশে আসা রোহিঙ্গার সংখ্যা প্রতিদিন বাড়ছে।’

জয় বলেন, ‘বাংলাদেশ রোহিঙ্গাদের সহায়তা করতে আন্তর্জাতিক সহায়তা চায়নি। এ ভার আমরা একাই বইতে পারি। এটা (বাংলাদেশ) এখন আর দরিদ্র নয়। কিন্তু মিয়ানমারের ওপর চাপ প্রয়োগ করে রোহিঙ্গাদের ওপর নির্যাতন ও উচ্ছেদ বন্ধে যুক্তরাষ্ট্র ও ভারতকে দরকার বাংলাদেশ ও রোহিঙ্গাদের। অং সান সু চির সরকার এবং সামরিক জান্তাকে কাজ করতে বাধ্য করাও আবশ্যক। নির্যাতন বন্ধ করে রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারের নাগরিক হিসেবে স্বীকৃতি ও নিজে দেশে ফিরে যাওয়া সময়সাপেক্ষ। এই সময়ে বাংলাদেশ গর্বিতভাবে তাদের সহায়তা করতে সক্ষম।’

বাংলাদেশ সময়:১১১২ ঘণ্টা, ২৬ সেপ্টেম্বর  ২০১৭

লেটেস্টবিডিনিউজ.কম/এস