দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় মারা গেছে ২০৪ জন

দেশে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ ও মৃত্যু বেড়েই চলেছে। গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় মারা গেছে ২০৪ জন। গত এক সপ্তাহে মারা গেছে ১ হাজার ৪৮০ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় রোগী শনাক্ত হয়েছে ৮ হাজার ৪৮৯ জন। আর গত এক সপ্তাহে শনাক্ত হয়েছে ৭৩ হাজার ৫৯ জন। আগের সপ্তাহের তুলনায় এক সপ্তাহে করোনায় মৃত্যু ১৫ দশমিক ৯০ শতাংশ এবং নতুন রোগী শনাক্ত ১৩ দশমিক ৭৪ শতাংশ বেড়েছে। গতকাল শনিবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে এ তথ্য পাওয়া গেছে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য সূত্র বলছে, দেশে করোনা সংক্রমণের ৭১তম সপ্তাহ (১১ জুলাই থেকে ১৭ জুলাই পর্যন্ত) শেষ হয়েছে। এই সপ্তাহে করোনার ২ লাখ ৮৪ হাজার ৪২৯টি নুমনা পরীক্ষা করে রোগী শনাক্ত হয়েছে ৮৩ হাজার ৯৬ জন। একই সময়ে মারা গেছে ১ হাজার ৪৮০ জন এবং সুস্থ হয়েছে ৫৫ হাজার ২৪ জন। এর আগের সপ্তাহে (৪ জুলাই থেকে ১০ জুলাই পর্যন্ত) ২ লাখ ৩৭ হাজার ৪৭১টি নমুনা পরীক্ষা করে রোগী শনাক্ত হয়েছে ৭৩ হাজার ৫৯ জন। একই সময়ে মারা গেছে ১ হাজার ২৭৭ জন এবং সুস্থ হয়েছে ৩৮ হাজার ৯৪০ জন।

করোনার সাপ্তাহিক সংক্রমণ পরিস্থিতির তুলনামূলক চিত্র বলছে- দেশে এক সপ্তাহে করোনার নমুনা পরীক্ষা ১৯ দশমিক ৭৭ শতাংশ, নতুন রোগী শনাক্ত ১৩ দশমিক ৭৪ শতাংশ, মৃত্যু ১৫ দশমিক ৯০ শতাংশ এবং সুস্থতা ৪১ দশমিক ৩০ শতাংশ বেড়েছে। তথ্য বলছে, দেশে আগের সপ্তাহের তুলনায় গত এক সপ্তাহে করোনার নমুনা পরীক্ষা, নতুন রোগী শনাক্ত, মৃত্যু এবং সুস্থতা বেড়েছে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য বলছে, গত ২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ২৯ হাজার ২১৪টি। এর মধ্যে নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছে ৮ হাজার ৪৮৯ জন। ২৪ ঘণ্টার নমুনা পরীক্ষায় রোগী শনাক্তের হার ২৯ দশমিক ০৬ শতাংশ। দেশে এখন পর্যন্ত ৭২ লাখ ১৫ হাজার ৫৮১টি নমুনা পরীক্ষা করে রোগী শনাক্ত হয়েছে ১০ লাখ ৯২ হাজার ৪১১ জন। মোট নমুনা পরীক্ষায় রোগী শনাক্তের হার ১৫ দশমিক ১৪ শতাংশ।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্যমতে, ২৪ ঘণ্টায় মারা গেছে ২০৪ জন। এর মধ্যে ১২৫ জন পুরুষ এবং ৭৯ জন নারী। ২৪ ঘণ্টায় মৃতদের বয়স বিশ্লেষণে দেখা যায়, ৬০ বছরের বেশি বয়সী ১০২ জন, ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে ৫৮, ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে ২৫, ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে ১২, ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে ৫ এবং ১১ থেকে ২০ বছরের মধ্যে ২ জন রয়েছে। মৃতদের অঞ্চল বিশ্লেষণে দেখা যায়, ঢাকা বিভাগে ৮২ জন, চট্টগ্রামে ৩২, রাজশাহীতে ২০, খুলনায় ৪৯, বরিশালে ৫, সিলেটে ২, রংপুরে ১০ এবং ময়মনসিংহে ৪ জন রয়েছে।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছে ৮ হাজার ৮২০ জন। এর মধ্যে ঢাকা বিভাগে ৩ হাজার ১২৩ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ৩ হাজার ৩৫২, রংপুর বিভাগে ৩৭৪, খুলনায় ৯৫৪, বরিশালে ৩৯, রাজশাহীতে ৫২৫, সিলেটে ১০৯ এবং ময়মনসিংহে ৩৪৪ জন রয়েছে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্যানুযায়ী, বাংলাদেশে এখন সংক্রমণ বাড়ার জন্য দায়ী ভারতীয় ধরন বা ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট। দেশে এই ভ্যারিয়েন্ট শনাক্ত হয় গত ৮ মে। ওইদিন ভারত থেকে আসা তিন বাংলাদেশির দেহে এই ভাইরাস পাওয়া গেলেও এটি এখন সারাদেশে ছড়িয়ে পড়ছে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্যমতে, বাংলাদেশে ২০২০ সালের ৮ মার্চ তিনজন করোনা ভাইরাসের রোগী পাওয়া যায়। এর পর সংক্রমণ বাড়তে বাড়তে জুন-জুলাই মাসে সর্বোচ্চ চূড়ায় পৌঁছায়। পরে ২০২০ সালের সেপ্টেম্বর মাস থেকে করোনার সংক্রমণ কমতে থাকে শুরু করে এবং চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে রোগী শনাক্তের হার ২-৩ শতাংশে নেমে আসে। কিন্তু হঠাৎ মার্চ মাসের শুরু থেকে করোনার সংক্রমণ আবার বাড়তে থাকে। সরকার করোনার সংক্রমণ প্রতিরোধে গত ৫ এপ্রিল থেকে ১৪ এপ্রিল পর্যন্ত বিধিনিষেধ আরোপ করে। এই বিধিনিষেধ এখনো বহাল রয়েছে।

Scroll to Top