জঙ্গিবাদ ও ধর্মবিরোধী কর্মকাণ্ডে জড়িত হেফাজত ইসলাম, নিষিদ্ধের দাবি

দেশের কওমি মাদ্রাসাভিত্তিক সংগঠন হেফাজতে ইসলাম জঙ্গিবাদ ও ধর্মবিরোধী কর্মকাণ্ডে জড়িত দাবি করে সংগঠনটিকে ‘জঙ্গি সংগঠন’ আখ্যা দিয়ে স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধের দাবি তুলেছে আহলে সুন্নাত ওয়াল জামা\’আত বাংলাদেশ।

আজ সোমবার (২৬ এপ্রিল) সকালে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনি মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এই দাবি জানান দলটির নির্বাহী মহাসচিব মাওলানা আ ন ম মাসউদ হোসাইন আল-ক্বাদেরী। তিনি বলেন, হেফাজত হচ্ছে জামায়াতের এপিঠ-ওপিঠ।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, আহলে সুন্নাত ওয়াল জামা\’আত বাংলাদেশের শীর্ষস্থানীয় আলেমরা যুগ যুগ ধরে সভা, সেমিনার, সিম্পোজিয়াম, লেখনী ও বক্তব্যের মাধ্যমে কওমি হেফাজতিদের ভ্রান্ত আকিদাগুলো তুলে ধরেছে এবং তাদের ভ্রান্ত আকিদার বিষয়ে সম্মুখ বিতর্কের আহ্বান জানিয়ে আসছে। তবে তারা কখনো বিতর্কিত বিষয়গুলো নিয়ে সম্মুখ বিতর্কে বসতে রাজি হয়নি। আজ এ দেশে তারা নিজেদের ধর্মীয় ভ্রান্ত নীতি ও জঙ্গিবাদ জনগণের সামনে প্রমাণ করে দিয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে তিনি আরো বলেন, ২০১৩ সালে হেফাজতে ইসলামের শাপলা চত্বরের তাণ্ডব জাতি প্রত্যক্ষ করেছিল। বায়তুল মোকাররমে কোরআন শরীফে অগ্নিসংযোগ, বাসে অগ্নিসংযোগসহ আশপাশের কয়েক কিলোমিটার এলাকার গাছপালা নিধন, দোকানপাট ও প্রতিষ্ঠানে এক নারকীয় পরিস্থিতির সৃষ্টি করে। যার সঙ্গে ইসলামের দূরতম কোনো সম্পর্ক নেই। গত ২৬ মার্চ ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আগমনকে কেন্দ্র করে ঢাকা, নারায়াণগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে তারা। রাষ্ট্রীয় কোটি কোটি টাকার সম্পদ নষ্ট করাও ইসলামসম্মত নয়। অথচ তারা ইসলামের হেফাজতের দাবিদার।

হেফাজত নেতা মামুনুল হকের রিসোর্টকাণ্ড ও চুক্তিভিত্তিক বিয়ের বিষয়ে তিনি বলেন, হেফাজত ইসলামের তথ্য অনুযায়ী ২৬ মার্চকে কেন্দ্র করে তাদের ২০ জন কর্মী নিহত হয়েছেন। অথচ সেই রক্তের সঙ্গে বেঈমানি করে ৩ এপ্রিল নারায়াণগঞ্জের রিসোর্টে যান তাদের নেতা মামুনুল হক কথিত চুক্তিভিত্তিক বউ নিয়ে। মাইন্ড ফ্রেশের নামে জেনা-ব্যভিচারে লিপ্ত হন মামুনুল হক। অথচ হেফাজত ইসলামী দল দাবি করলেও তারা এ ব্যাপারে ইসলামসম্মত কোনো সিদ্ধান্ত দেয়নি। এমনকি মামুনুল হকের বিরুদ্ধেও হেফাজতে ইসলাম কোনো সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়নি।

কওমি মাদরাসাগুলো সরকারের নিয়ন্ত্রণে আনার দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, কওমি মাদরাসাগুলো সরকারি কোনো বিধান মানে না। তাদের মাদরাসায় জাতীয় সংগীত পরিবেশন করা হয় না, জাতীয় দিবসে পতাকা উত্তোলন করে না। বরং বিভিন্ন দিবস পালনের বিষয়ে আপত্তিকর বক্তব্য প্রদান করে জাতিকে বিভ্রান্ত করার অপপ্রয়াস চালায়। কওমি মাদরাসার ছাত্রদের বছরের অধিকাংশ সময় ভিক্ষাবৃত্তিতে নিয়োজিত রাখে। তারা নিজেরাও মুসলিম বিশ্বের বিভিন্ন দেশে গিয়ে বছরের অধিকাংশ সময়ে ভিক্ষাবৃত্তিতে নিয়োজিত থেকে দেশের সম্মানহানি করছে।

সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন আহলে সুন্নাত ওয়াল জামা\’আত বাংলাদেশের প্রেসিডিয়াম সদস্য আল্লামা আবদুর রহমান আল কাদেরী, আল্লামা সৈয়দ ফকির মুসলিম উদ্দিন আহমদ নূরী আল কাদেরী, আল্লামা মো\’তাসিম বিল্লাহ রাব্বানী, আল্লামা তাজুল ইসলাম চাঁদপুরী, আল্লামা আলমগির হোসেন যুক্তিবাদী, যুগ্ম মহাসচিব অধ্যাপক এম এ মমেন, অধ্যক্ষ আল্লামা মুফতি আবু জাফর মো. হেলাল উদ্দিন প্রমুখ।