যেখানে পল্লীবন্ধু এরশাদ হাত দিয়েছেন নৈপুণ্যের ছাপ রেখেছেন

জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের বলেছেন, পার্টির প্রতিষ্ঠাতা হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ রাজনীতিতে আসার পর যখন যেখানে হাত দিয়েছেন, সেখানেই তার নৈপুন্যের ছাপ রেখেছেন। তার ক্ষমতা গ্রহণ যেভাবেই ব্যাখ্যা করা হোক না কেন, এটা আজ সর্বজন স্বীকৃত যে তার নয় বছরের শাসনামল ছিল এ দেশে সু-শাসন, উন্নয়ন, সমৃদ্ধির এক নবযুগ। দেশের এমন কোনো সেক্টর নেই যেখানে তার উন্নয়ন বা সংস্কারের ছোঁয়া লাগেনি।

আজ রোববার সন্ধায় রাজধানীর সোনারগাও হোটেলে সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদের ৯২ তম জম্মদিন উপলক্ষে বিভিন্ন খাতে বিশেষ অবদানের ক্ষেত্রে বিশেষ অবদান রাখা ৮ জন বিশিষ্ট ব্যক্তিকে \’পল্লীবন্ধু পদক\’ প্রদান অনুষ্ঠানে সংসদে বিরোধী দলের উপনেতা এসব কথা বলেন।

আট বিভাগে ৮বিশিষ্ট ব্যক্তির হাতে ‘পল্লীবন্ধু পদক’-২০২১ তুলে দেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের এমপি। মরহুম এরশাদের নামে প্রবতিত এই পদক তার প্রত্যেক জন্মবার্ষিকীতে প্রদানের ঘোষণা দিয়ে কাদের বলেন, এবার ৮ জনকে ‘পল্লীবন্ধু পদক’ প্রদান করা হলো।

আগামীতে পুরস্কারের পরিধি বাড়ানোর চিন্তা আছে। জমকালো আয়োজনের মধ্যে দিয়ে পদকপ্রাপ্তদের ক্রেস্ট ও চেক হস্তান্তর করা হয়। পদক প্রাপ্তরা হলেন-স্বাস্থ্যে বীর মুক্তিযোদ্ধা ডাঃ জাফরুল্লাহ চৌধুরী, সাহিত্যে কবি ফজল সাহাবুদ্দিনের (মরণোত্তর) পক্ষে পদক নেন তার মেয়ে দিনা সাহাবুদ্দিন, কৃষিতে বিশিষ্ট কৃষি সাংবাদিক ও গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব শাইখ সিরাজ, সংগীতে প্রখ্যাত সঙ্গীতশিল্পী এন্ড্রু কিশোর (মরণোত্তর), তার পক্ষে পদক ও সম্মাননা গ্রহন করেন তার স্ত্রী লিপিকা এন্ড্রো ইতি, শিক্ষায় অধ্যাপক ড. নাজমুল আহসান কলিম উল্ল্যাহ, গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়নে বরেণ্য নগর ও আঞ্চলিক পরিকল্পনাবিদ ইঞ্জিনিয়ার কামরুল ইসলাম সিদ্দিক (মরণোত্তর), তার পক্ষে পদক গ্রহণ করেন মেয়ে আরিফা কবির, ক্রীড়ায় বিশিষ্ট ক্রীড়াবিদ গোলাম সরোয়ার টিপু, শিল্পে বীর মুক্তিযোদ্ধা ও বিশিষ্ট শিল্পপতি আব্দুল ওয়াহেদ বাবুল।

জিএম কাদের বলেন, হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ জাতীয় পার্টি নামের একটি রাজনৈতিক সংগঠন সৃষ্টি করে আমাদের মতো কর্মীদের রাজনীতির আশ্রয়স্থল করে দিয়ে গেছেন। তিনি বলেন, হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের কৈশোর থেকে যৌবন ও শেষ জীবন অবধি তিনি ছিলেন, একাধারে ছাত্র, ডানপিটে কিশোর, তুখোড় খেলোয়ার, সাহিত্যিক-কবি, দক্ষ প্রশাসক, জননন্দিত রাজনীতিবিদ। কারমাইকেল কলেজে অধ্যয়নকালে কলেজ ম্যাগাজিনের সম্পাদক ছিলেন। সে সময় একাধারে ৪ বছর বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করে ছিলেন।

ঢাকা ইউনিভার্সিটিতে অধ্যয়নকালে হয়েছিলেন ভার্সিটি স্পোর্টস ব্লু। এরপর সৈনিক হিসেবে পেশা গ্রহন করে তৎকালীন পাকিস্তান সেনা ফুটবল দলের অধিনায়ক হয়েছিলেন। এছাড়াও খেলতেন সেনাবাহিনী হকি দলে।

পদক প্রাপ্তি প্রতিক্রিয়ায় ডাঃ জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, এরশাদ আপদমস্তক ভদ্রলোক ও বুদ্ধিমান ছিলেন তার দৃষ্টিটা ছিল প্রসারিত। ফেব্রুয়ারি মাসে তার অসামান্য অবদান ছিল, উনি নিয়ম করেছিলেন সাইনবোর্ডে বাংলা হতে হবে, রায় বাংলায় হতে হবে। ওনার আমলে কেউ না খেয়ে থাকে নি।

ওনার সুচিন্তা না থাকলে এখন জনসংখা ৩০ কোটি হতো। উনি প্রতিমাসে জনসংখ্যার মিটিংয়ে যেতেন, আজকে ৩০ কোটি জনসংখা হলে রাস্তায় চলা যেত না। টিসিবির ট্রাকের সমানে মিছিল জাতিকে ভিখারিতে পরিণত করেছেন। ওনাকে ব্লাকমেইল করেছে, মঞ্জুর হত্যা না দিলে ওনি জাতিকে আরো অনেক কিছু দিতে পারতেন। সাহসের সঙ্গে পাটিকে এগিয়ে নেবেন তবেই তার আত্মা শান্তি পাবেন বলে মন্তব্য করেন তিনি।

শাইখ সিরাজ বলেন, পল্লী উন্নয়নে এরশাদের অবদান অনস্বীকার্য। তার সে সময়ের কাজগুলো বাংলাদেশকে আজকের জায়গায় আসতে অনেক সহায়তা করেছে। এক জেলা থেকে অন্য জেলায় যেতে অনেক সময় লাগত, এখন কৃষকরা সহজে পণ্য পৌঁছে দিতে পেরে ন্যায্য মূল্য পাচ্ছেন।

লিপিকা এন্ড্রো বলেন, এন্ড্রো কিশোরকে মরনোত্তর সম্মাননা দেওয়ায় পরিবারের পক্ষ থেকে কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।

প্রফেসর নাজমুল আহসান কলিম উল্লাহ বলেন, আমি বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ভিসি থাকাকালে দারুণভাবে সহযোগিতা পেয়েছি। এরশাদ কোনদিন তদবির করেননি ডিও লেটার দেননি।

গোলাম সরোয়ার টিপু বলেন, এরশাদের সঙ্গে আমার দুইবার সাক্ষাত হয়েছিল। ওনি বাংলাদেশে ফ্লাড লাইট চালু করেছিলেন। তারপর লীগগুলো সহজে আয়োজন করা সম্ভব হয়। তার আগে খেলায় জট লেগে যেতো। ক্রীড়াঙ্গনের উন্নয়নে অনেক অবদান রেখেছেন। আমি ওনার সঙ্গে কথা বলেছিলেন অবিভূত হয়েছিলাম।

এমএ রহিম বলেন, সম্মানিত করায় দায়িত্ব বেড়ে যায়, আমরা সম্মানিত বোধ করছি। অন্যান্য রাজনৈতিক দলও অনুসরণ করতে পারে।

Scroll to Top