বিএনপির নির্ধারিত কর্মসূচির স্থানে যুবদলের সমাবেশ ডাকায় ১৪৪ ধারা জারি

ঝালকাঠির রাজাপুরে বিএনপির পূর্ব নির্ধারিত কর্মসূচির জায়গায় একই সময় যুবদলের আলাদা সমাবেশ ডাকায় এলাকায় তীব্র উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঠেকাতে উপজেলা প্রশাসন মঙ্গলবার রাত থেকে (১৩ আগস্ট) রাত ১২টা পর্যন্ত সমাবেশের জায়গায় ও আশপাশের এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করেছে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাহুল চন্দ ১২ আগস্ট রাত ১২টায় এক অফিস আদেশে উল্লেখ করেন, রাজাপুর উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক এ্যাড নূর হোসেন গত ৭ আগস্ট একটি দরখাস্ত দাখিল করেন যেখানে লেখা ছিল তিনি ১৩ আগস্ট বুধবার বিকাল ৩টায় উপজেলা পরিষদ মার্কেট চত্ত্বরে র‌্যালি ও সমাবেশের আয়োজন করবেন।

এরপর গত ১১ আগস্ট উপজেলা যুব দলের সিনিয়র যুগ্ন আহবায়ক মো. জাকির হোসেন মোল্লা একই স্থানে ১৩ আগস্ট সমাবেশের অয়োজন করবেন মর্মে পত্র দাখিল করেন। তিনি বলেন, দু’পক্ষই সভা করার বিষয়টি আমাদের জানিয়েছে, তবে কাউকে লিখিত অনুমতি দেওয়া হয়নি। একই সময়ে একই স্থানে সমাবেশ আহ্বানের কারণে সংঘর্ষের আশঙ্কা থাকায় ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে।

জানা গেছে, জুলাই ঐতিহাসিক গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে উপজেলা বিএনপি বুধবার বিকাল ৩টায় উপজেলা পরিষদ চত্ত্বরে সমাবেশ আয়োজনের ঘোষণা দেয়। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকার কথা ছিল বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুস সালাম ও বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সহ তথ্য ও প্রযুক্তি সম্পাদক সাইফ আলী খানের। আমন্ত্রণপত্রে স্বাক্ষর করেন উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক এ্যাডভোকেট নুর হোসেন। সভার প্রচারণা চালিয়েছেন আমেরিকার নিউইয়র্ক দক্ষিণ বিএনপির সভাপতি মনোনয়ন প্রত্যাশী হাবিবুর রহমান সেলিম রেজা, অন্তবর্তীকালীন সরকারের সংবিধান সংস্কার কমিশন সদস্য ব্যারিষ্টার মঈন ফিরোজী, ছাত্রদলের সাবেক সহ সাংগঠনিক সম্পাদক গোলাম আযম সৈকত ও বিএনপি নেতা কর্নেল মোস্তাফিজুর রহমানসহ আরও বেশ কয়েকজন নেতা।

এই গ্রুপটি বিএনপির কেন্দ্রীয় ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম জামালের বিরোধী হিসেবে পরিচিত। তাদের আমন্ত্রণপত্রে রফিকুল ইসলাম জামাল ও উপজেলা বিএনপির সভাপতি অ্যাডভোকেট আবুল কালাম আজাদের নাম নেই।

অন্যদিকে, একই সময়ে উপজেলা যুবদল যে সমাবেশের আয়োজন করেছে তারা রফিকুল ইসলাম জামালের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত। এ সমাবেশে জেলা যুবদলের ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক রবিউল হোসেন তুহিন এবং সদস্যসচিব আনিচুর রহমানের উপস্থিত থাকার কথা ছিল।

তবে জেলা যুবদলের ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক রবিউল হোসেন তুহিন দাবি করেছেন, রাজাপুর উপজেলা যুবদলের এ আয়োজন সম্পর্কে তিনি অবগত নন।

উপজেলা যুবদলের সিনিয়র যুগ্ন আহবায়ক জাকির হোসেন মোল্লা বলেন, আমরা আগেই কর্মসূচির আয়োজন করেছি। বিএনপির কর্মসূচি বিষয়ে আমাদের আগে জানা ছিল না।

রাজাপুর উপজেলা বিএনপি সভাপতি এ্যাড. আবুল কালাম আজাদ বলেন, কর্মসূচীর বিষয়ে আমাকে কেউ অবহিত করেনি। তবে উভয় পক্ষ আলোচনা করে কর্মসূচি দিলে ভালো হতো।

রাজাপুর উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক এ্যাড.নূর হোসেন বলেন,আমরা ঝালকাঠি জেলা প্রশাসক, জেলা পুলিশ সুপার, রাজাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মর্তা ও রাজাপুর থানার ওসিকে গত ৭ আগস্ট অবহিত করে ১৩ তারিখের কর্মসূচীর বিষয়ে জানিয়েছি। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তিনি রাজাপুরের অভিভাবক। তিনি যে কাজটি করেছেন তা সঠিক করেননি।

রাজাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. ইসমাইল হোসেন বলেন, সভাস্থলে উপজেলা প্রশাসনের ১৪৪ ধারা জারি বলবৎ আছে। আইনশৃঙ্খলার অবনতি ঠেকাতে পুলিশ সভাস্থলে রয়েছে।

এ বিষয়ে রাজাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাহুল চন্দকে মুঠেফানে বার বার ফোন করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

সংগৃহীত

Scroll to Top