শুরু হচ্ছে স্বাস্থ্যের ডিজির পদত্যাগপত্র গ্রহণের প্রক্রিয়া

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে নানা দুর্নীতির অভিযোগে রয়েছে আলোচনার তুঙ্গে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) অধ্যাপক আবুল কালাম আজাদের পদত্যাগপত্র গ্রহণের প্রক্রিয়া শুরু করতে যাচ্ছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। আজ বুধবার সকালে জনপ্রশাসন সচিব শেখ ইউসুফ হারুন এ তথ্য জানান।

শেখ ইউসুফ হারুন বলেন, ‘এখন পরবর্তী প্রক্রিয়া শুরু করা হবে। প্রক্রিয়াটি শেষ হলেই পদত্যাগপত্র গ্রহণের বিষয়টি বলা যাবে।’ চুক্তিতে থাকা আবুল কালাম আজাদ গতকাল মঙ্গলবার পদত্যাগ করেন।

সরকারি সূত্রগুলো বলছে, আবুল কালাম আজাদের চলে যাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত হয়েই ছিল। অপসারিত হওয়ার চেয়ে পদত্যাগ সম্মানজনক। আবুল কালাম আজাদ পদত্যাগের সুযোগ নিয়েছেন।

আবুল কালাম আজাদের ঘনিষ্ঠ একজন কর্মকর্তা বলেন, ভগ্নস্বাস্থ্যের কথা উল্লেখ করে পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন আবুল কালাম আজাদ। তাঁর চলে যাওয়ার কথা, নতুন মহাপরিচালক খোঁজার কথা শোনা যাচ্ছিল বেশ কিছুদিন ধরে।

২০১৯ সালের এপ্রিলে আবুল কালাম আজাদের মহাপরিচালক পদের মেয়াদ শেষ হয়। এরপর তিনি দুই বছরের জন্য চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ পান। আগামী বছর এপ্রিলে বাড়তি মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা ছিল। মহাপরিচালক হওয়ার আগে বেশ কয়েক বছর তিনি অতিরিক্ত মহাপরিচালকের দায়িত্ব পালন করেন। তার আগে তিনি স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেম (এমআইএস) ও রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) পরিচালক ছিলেন।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বিরুদ্ধে অনিয়ম, দুর্নীতি, অব্যবস্থাপনার অভিযোগ সব সময় ছিল। করোনা মহামারির সময় এসব অভিযোগ আরও বড় আকারে দেখা দেয়। স্পষ্ট হয়ে ওঠে মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের অদক্ষতা, ব্যর্থতা। জেকেজি ও রিজেন্টের দুর্নীতিতে মানুষ হতবাক হয়। কিছু মানুষ মনে করে, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জড়িত না থাকলে এই মাত্রার দুর্নীতি করা সম্ভব না। কিছু মানুষ মনে করে, দুর্নীতির সঙ্গে সরাসরি জড়িত না থাকলেও উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা দায় এড়াতে পারেন না।

মহামারি মোকাবিলায় যে ধরনের নেতৃত্ব দরকার, তা দিতে পারছে না স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তর। রোগ শনাক্তকরণ, চিকিৎসা, কন্ট্যাক্ট ট্রেসিং, আইসোলেশন, কোয়ারেন্টিন সব ক্ষেত্রে অব্যবস্থাপনার ছাপ স্পষ্ট। নন-কোভিড রোগীরা হাসপাতালে চিকিৎসা পাচ্ছেন না, অথচ কোভিড হাসপাতালে ৭২ শতাংশ শয্যা খালি। এসব ব্যাপারে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক কখনো কোনো স্পষ্ট ব্যাখ্যা দেননি। গতকাল মঙ্গলবার একাধিকবার চেষ্টা করেও তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।