মিয়ানমার সীমান্তে নিরাপত্তা জোরদার করেছে বাংলাদেশ

মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে আরাকান আর্মি কর্তৃক শহর ও সামরিক ঘাঁটি দখলের পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্ত পরিদর্শন করেছেন বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের(বিজিবি) প্রধান। খবর ইরাবতীর।

বিজিবি সদর দপ্তর জানায়, বান্দরবান, পালংখালী, টেকনাফ এবং সেন্ট মার্টিনে মোতায়েনকৃত সৈন্যদের সাথে দেখা করেছেন সংস্থাটির প্রধান মেজর জেনারেল একেএম নাজমুল হাসান। এ সময় তিনি বিজিবির প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা পর্যবেক্ষণ করেন এবং সৈন্যদেরকে চোরাচালানের ব্যাপারে সতর্ক থাকতে নির্দেশ দেন।

বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন মুখপাত্রের দেয়া তথ্য অনুযায়ী, দেশটি পশ্চিম মিয়ানমারে চলমান ঘটনাবলী এবং এ থেকে সৃষ্ট খাদ্য সংকটকে গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছে।

বৃহস্পতিবার ঢাকা থেকে প্রকাশিত দৈনিক বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড জানায়, মিয়ানমারে পাচারের সময় বাংলাদেশ সরকার ২৮ জন চোরাচালানকারীকে গ্রেপ্তার করেছে। এ সময় তাদের কাছ থেকে ৭ হাজার ৬৩৬ লিটার অক্টেন, ১৩৬ লিটার ডিজেল এবং ৩ হাজার ৭৫২ লিটার সয়াবিন তেল জব্দ করা হয়।

সংবাদপত্রটি নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের চাহিদা বৃদ্ধির জন্য রাখাইন রাজ্য এবং পালেটা শহরে আরাকান আর্মির সাথে মিয়ানমারের জান্তা সরকারের চলমান যুদ্ধকে দায়ী করেছে।

কক্সবাজার জেলার ডেপুটি কমিশনার মোহাম্মদ শাহীন ইমরান তেলের পাম্পের মালিক এবং দোকানদারদেরকে প্রতি সপ্তাহজুড়ে বিক্রি হওয়া জ্বালানী ও ভোজ্যতেলের হিসাব দাখিল করতে নির্দেশ দিয়েছেন।

কক্সবাজার কর্তৃপক্ষের একজন কর্মকর্তা ইরাবতীকে জানান, নৌকার মাঝিরা প্রচুর লাভ করছে। তারা বাংলাদেশ থেকে জ্বালানী তেল কিনে ছয় থেকে সাতগুণ বেশি দামে মিয়ানমারে বিক্রি করছে।

বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তে বসবাসকারীরা নতুন করে উদ্বাস্তুদের আগমন এবং রাখাইন রাজ্যে রয়ে যাওয়া রোহিঙ্গাদের জীবনের নিরাপত্তা নিয়ে আশঙ্কায় আছেন।

বাংলাদেশের সাবেক পররাষ্ট্র সচিব তৌহিদ হাসান ইরাবতীকে জানান, মিয়ানমারে যাই ঘটুক না কেন বাংলাদেশের আর কোনো উদ্বাস্তুকে ঢুকতে দেয়া উচিত হবে না। আরাকান আর্মির উচিত রোহিঙ্গারা যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সে বিষয়টি নিশ্চিত করা।

ফর্টিফাই রাইটসের প্রধান জন কুইনলি জানান, নভেম্বর থেকে শুরু হওয়া সংঘাতের ফলে রাখাইন রাজ্যে বসবাসরত রোহিঙ্গা এবং কামান মুসলিমদের কাছে মানবিক সহায়তা পৌঁছানোর ক্ষেত্রে বিধিনিষেধ আরোপ করেছে মিয়ানমারের জান্তা সরকার।

জান্তা সরকারের উচিত হবে সহিংসতার পথ থেকে ফিরে আসা এবং ক্ষমতা থেকে সরে যাওয়া। বাংলাদেশে প্রায় ১০ লাখ রোহিঙ্গা বসবাস করছেন, যারা ২০১৭ সালে জান্তা সরকারের সামরিক অভিযানের সময় দেশত্যাগ করেছিলেন।