করোনাঃ সোনামসজিদ স্থলবন্দরে স্থবিরতা, ৩ হাজার শ্রমিক বেকার

প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে দেশের ২য় বৃহত্তম স্থলবন্দর সোনামসজিদ দিয়ে ভারতের সাথে আমদানি-রফতানি বন্ধ থাকায় চলছে স্থবিরতা। ফলে সোনামসজিদ স্থলবন্দরে কর্মরত ৩ হাজার শ্রমিক বেকার হয়ে পড়েছেন। এতে করে পরিবার নিয়ে মানবেতর জীবন কাটাচ্ছেন তারা। তবে বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠন প্রতিমাসে লাখ লাখ টাকা চাঁদা আদায় করলেও এই দুর্যোগের সময় সেই সংগঠনগুলো শ্রমিকদের কোন সহায়তা না করায় অসন্তোষ বিরাজ করছে সাধারণ শ্রমিকদের মধ্যে।

এদিকে মহামারি এ ভাইরাসের কারণে প্রতিবেশী দেশ ভারত সরকার লকডাউনের মেয়াদ বাড়ানোয় স্থলবন্দর দিয়ে সহসাই আমদানি-রফতানি চালু হওয়ার সম্ভাবনা দেখছে না তারা। এতে করে ব্যবসায়ীরা যেমন চরম ক্ষতির মধ্যে পড়েছেন তেমনি স্থলবন্দরের শ্রমিকরাও বেকার হয়ে রয়েছেন। আর এ অবস্থা চলতে থাকলে বন্দর থেকে সরকারের কয়েক কোটি টাকার রাজস্ব হাতছাড়া হবে বলে ব্যবসায়ী এবং স্থলবন্দর সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।

জানা গেছে, গত ২২ মার্চ থেকে করোনার কারণে বাংলাদেশ ও ভারত উভয় দেশের আমদানি-রফতানি বাণিজ্য বন্ধ রয়েছে। এতে করে দেশের ব্যবসায়ী, সিএন্ডএফ’র কর্মচারীসহ শ্রমিকরা চরম বিপাকে পড়েছেন। ব্যবসায়ীরা বলছেন, কবে নাগাদ এই পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে তাও নিশ্চিতভাবে বলা যাচ্ছে না। তবে ভারতের লকডাউন উঠে গেলে স্থলবন্দর দিয়ে আবার আমদানি-রপ্তানি চালু হবে। এই অবস্থায় স্থলবন্দরের ব্যবসায়ীরা চরম ক্ষতির মধ্যে পড়ে গেছে।

পহেলা বৈশাখ, রমজান ও ঈদের সময় বিভিন্ন মশলাসহ অন্যান্য পণ্য ব্যবসায়ীরা আমদানি করে থাকে। কিন্তু করোনার থাবায় এবার সবকিছু এলোমেলো। সামনে ঈদ, দেশের পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে পণ্য আমদানি করে বাজার সহনশীল পর্যায়ে আসবে বলে ধারণা করছেন আমদানি-রফতানি সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা।

এদিকে সোনামসজিদ স্থলবন্দরের কর্মরত শ্রমিক নেতা মোঃ আমিনুল ইসলাম বলেন, এ বন্দর থেকে প্রায় ৩শতাধিক ট্রাক পাথর, ভুট্টা, ছাই, পেয়াজ, বিভিন্ন ফল, মশলাসহ বিভিন্ন জেলায় যায় এবং এবন্দরে প্রায় ৩ হাজার শ্রমিক কাজ করে। কিন্তু বন্দরের কার্যক্রম বন্ধ থাকায় তারা বেকার হয়ে পড়েছেন।

অন্যদিকে সোনামসজিদ স্থলবন্দর সিএন্ডএফ এজেন্ট এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক হারুন অর রশীদ বলেন, এ অবস্থা চলতে থাকলে ব্যবসায়ীরা যেমন চরম ক্ষতির মধ্যে পড়বে, পাশাপাশি বন্দর থেকে সরকার কয়েক কোটি টাকার রাজস্ব হারাবে।

বন্দরে কর্মরত শ্রমিক মোঃ জেম আলী বলেন, বন্দর চালু থাকার সময় প্রায় ৩শতাধিক গাড়ি থেকে শ্রমিক নেতারা ১০ চাকার গাড়িতে ৫৫০ টাকা ও ৬ চাকার গাড়িতে ৩৫০ টাকা তোলে। কিন্তু শ্রমিকেরা পরিবার পরিজন নিয়ে এ মুহূর্তে মানবেতর জীবন যাপন করলেও শ্রমিক নেতাদের পাত্তা নেই।

এ ব্যাপারে শিবগঞ্জ উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসার মোঃ আরিফুল ইসলাম বলেন, করোনাভাইরাস চলমান পরিস্থিতিতে সোনামসজিদ স্থলবন্দরের শ্রমিকদের মাঝে ১ হাজার জনকে ১০ কেজি করে চাল দেয়া হয়েছে।