প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে ‘অবস্ট্রাকটিং দ্য ফিল্ড’ আউট মুশফিক

নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে দ্বিতীয় টেস্টের প্রথম দিনে সিরিজ জয়ের মিশনে টস জিতে ব্যাটিংয় করছে বাংলাদেশ। তবে এদিন ইতিহাস গড়লেন বাংলাদেশ দলের ব্যাটার মুশফিকুর রহিম। কাইল জেমিসনের বল রক্ষণাত্মক খেলে হাত দিয়ে বল আটকে বাংলাদেশের প্রথম ব্যাটার \’অবস্ট্রাকটিং দ্য ফিল্ড\’ আউট হয়ে ইতিহাসের অংশ হয়ে গেছেন মুশফিক। বিশ্ব ক্রিকেটে সব মিলিয়ে অষ্টমবারের মত এই আউট।

আজ বুধবার (৬ ডিসেম্বর) মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টের দ্বিতীয় সেশনে দেখা গেলো এমন অভূতপূর্ব দৃশ্য। প্রথমবারের মতো বাংলাদেশের কোনো ব্যাটার এই আউটের শিকার হলেন। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টে টস জিতে ব্যাট করছে বাংলাদেশ। ইনিংসের ৪০.৪ ওভারে \’অবস্ট্রাকটিং দ্য ফিল্ড\’ আউট হন মুশফিক।

ছয় বছর আগে হলে \’হ্যান্ডলড দ্য বল\’ আউট হতেন মুশফিকুর রহিম। তবে ২০১৭ সালের পর এই আউট আর নেই ক্রিকেটের আইনে। সেটি বদলে এখন হয়ে গেছে \’অবস্ট্রাকটিং দ্য ফিল্ড\’। আর এই নতুন আউটেই কপাল পুড়েছে বাংলাদেশের।

সিরিজ নির্ধারণী দ্বিতীয় টেস্টে ব্যাটিং করতে নেমে দলের বিপর্যয় রুখতে শাহাদাত হোসেন দিপুর সাথে জুটি গড়ার চেষ্টা করছিলেন মুশফিকুর রহিম। দ্বিতীয় সেশনে কাইল জেমিসনের করা সেই ওভারের চতুর্থ বলটি ব্যাকফুটে খেলেছিলেন এই উইকেটরক্ষক ব্যাটার। বল ব্যাটে লেগে মাটিতে পড়ে বাউন্স খেয়েছিল (স্টাম্পের দিকে যাচ্ছিল না)।

ইচ্ছাকৃতভাবে বলটি ডান হাত দিয়ে ধরে ফেলেন ৩৫ রানে ব্যাট করা মুশি। তৎক্ষণাৎ \’অবস্ট্রাকটিং দ্য ফিল্ড\’ আউটের আবেদন করেন নিউজিল্যান্ডের খেলোয়াড়েরা। তৃতীয় আম্পায়ার ভিডিও রিপ্লে দেখে মুশফিককে আউট ঘোষণা করেন।আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ১১তম এবং টেস্টে ৮ম ব্যাটসম্যান হিসেবে \’অবস্ট্রাকটিং দ্য ফিল্ড\’ আউট হলেন মুশফিক।

এর আগে টস জিতে আজ প্রথমে ব্যাটিং করার সিদ্ধান্ত নেন বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত। ঘূর্ণিঝড় মিগজাউমের প্রভাবে সকাল থেকেই ঢাকার আকাশ মেঘাচ্ছন্ন। স্বাভাবিক আলোতে খেলা প্রায় অসম্ভব। যে কারণে দিনের শুরু থেকেই ফ্লাড লাইট জ্বালিয়ে ব্যাট করে বাংলাদেশ দল।

শুরু থেকেই দেখেশুনে খেলতে থাকেন দুই টাইগার ওপেনার মাহমুদুল হাসান ও জাকির হাসান। ১০ ওভারে নেন ২৫ রান। তবে এরপরেই ঘটে ছন্দ পতন।

পর পর দুই ওভারে ফিরে যান এই দুই ওপেনার। দলীয় ২৯ রানে স্যান্টনারের বল পেটাতে গিয়ে সিড অনে উইলিয়ামসনের হাতে ক্যাচ দিয়ে প্রথমে ফেরেন জাকির হাসান। এরপরে ওভারেই এজাজ প্যাটের বলে শর্ট লেগে ল্যাথামের কাছে ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান আরেক ওপেনার জয়। তার বিদায়ে ২৯ রানে ২ উইকেট হারায় বাংলাদেশ।

২৯ রানে ২ উইকেট হারানোর পর জুটি গড়েন নাজমুল হোসেন শান্ত ও মুমিনুল হক। এই জুটি দলের বিপর্যয় কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা করে। তবে তারাও ব্যর্থ হন।

দলীয় ৪১ রানে এজাজ প্যাটেলের বলে টম ব্লান্ডেলের হাতে ক্যাচ তুলে দিয়ে ফিরে যান মুমিনুল হক। তার বিদায়ে ৪১ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে বিপর্যয়ে পড়ে বাংলাদেশ।

দলের বিপর্যয় আরও বাড়িয়ে সাজঘরে ফিরে যান নাজমুল হোসেন শান্তও। মিচেল স্যান্টনারের বলে এলবিডব্লিউয়ের শিকার হয়ে ফিরে যান তিনি। তার বিদায়ে ৪৭ রানে ৪ উইকেট হারায় বাংলাদেশ। মুশফিকুর রহিম ও শাহদাত দিপুর ব্যাটে কিছুটা বিপর্যয় এড়ায় টাইগাররা। ৪ উইকেট হারিয়ে ৮০ রান সংগ্রহ করে মধ্যাহ্ন বিরতিতে যায় বাংলাদেশ। বিরতি থেকে ফিরে দলীয় ১০৪ রানে ৮৩ বলে ৩৫ রান করে \’অবস্ট্রাকটিং দ্য ফিল্ড\’ আউট হন মুশফিক।

এর পরই শাহাদাত হোসেন দিপু ফিলিপসের বলে ব্লান্ডেলের হাতে ক্যাচ দিয়ে ৩১ রানে ফিরে যান। এই প্রতিবেদন লেখার আগ পর্যন্ত ৬ উইকেট হারিয়ে ১৩৪ রান সংগ্রহ করেছে বাংলাদেশ।

 

Scroll to Top