নাপোলিকে হারিয়ে কোয়ার্টারে বার্সা

অবশেষে \’কুফা\’ কাটলো বার্সেলোনার। মঙ্গলবার রাতে নাপোলিকে ৩-১ গোলে হারিয়ে চার বছর পর চ্যাম্পিয়নস লিগের কোয়ার্টার ফাইনালে নাম লেখালো লা লিগার চ্যাম্পিয়নরা।

ডিয়েগো আরমান্ডো ম্যারাডোনা স্টেডিয়ামে প্রথম লেগটা শেষ হয়েছিল ১-১ সমতায়। ঘরের মাঠ এস্তাদি অলিম্পিক লুইস কোম্পানিস স্টেডিয়ামে এবার বড় জয় নিয়ে দুই লেগ মিলিয়ে ৪-২ ব্যবধানে এগিয়ে থেকে শেষ আটে নাম লিখিয়েছে জাভি হার্নান্দেজের দল।

গত মঙ্গলবার (১২ মার্চ) রাতে ঘরের মাঠ অলিম্পিক স্টেডিয়ামে ইতালি চ্যাম্পিয়নদের আমন্ত্রণ জানায় বার্সা। তবে ম্যাচে ফেরমিন লোপেস ও জোয়াও কানসেলোর গোলে স্বাগতিকরা এগিয়ে যাওয়ার পর ব্যবধান কমান আমির রাহমানি। নির্ধারিত সময়ের সাত মিনিট বাকি থাকতে দুই গোলের লিড পুনরুদ্ধার করেন রাবার্ট লেভান্ডভস্কি।

বার্সেলোনা এদিন শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক ফুটবল খেলে। ম্যাচের দ্বিতীয় মিনিটেই প্রতিপক্ষের দুর্গে হানা দেয় বার্সা। রবার্ট লেভানডফস্কির পাস পেয়ে অবশ্য লক্ষ্যে রাখতে পারেননি তরুণ ইয়ামালে। বক্সের সামনে থেকে নেওয়া তার শটটি বারের উপরে দিয়ে যায়। নাপোলিও প্রতি আক্রমণ শানিয়ে শক্তিমত্তা দেখায়। চতুর্থ মিনিটে পলিটানোর পাস ধরে রাইট উইং দিয়ে আক্রমণে ওঠেন ওসিমেন। অনেকটা একাই বল নিয়ে গোলরক্ষকের সামনে চলে যান। তবে একা পেয়ে বার্সা গোলরক্ষককে পরাস্ত করতে পারেননি। যদিও শট নেওয়ার পর সেটি অফসাইড বলে সিদ্ধান্ত জানায় রেফারি।

তবে বার্সেলোনার ইয়ামালে ডানপ্রান্ত দিয়ে বেশ কয়েকটি আক্রমণ শানান। ম্যাচে তার ক্ষিপ্রতা ছিল চোখে পড়ার মতো। যদিও তিনি ফিনিশিং টানতে পারেননি। ১৩তম মিনিটে বড় সুযোগ হাতছাড়া করে বার্সা। ইয়ামালের নীচে খেলা ফিরমিন লোপেজ ভালো পজিশনে বল পেয়েও কাঙ্ক্ষিত গোল পাননি। তার শটটি বক্সের গা ঘেষে বেড়িয়ে যায়।

দুই মিনট পরই নিজের ভুল শোধরান ফিরমিন। রাফিনহার পাস থেকে দারুণ এক শটে বার্সাকে প্রথম লিড এনে দেন ২০ বছর বয়সী ফিরমিন।

ওই গোলের দুই মিনিটের মধ্যে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন জোয়াও ক্যানসেলো। এক গোলে পিছিয়ে থাকা নাপোলি গোল শোধ দিতে মরিয়া হয়ে ওঠে। সেই সুযোগ নেয় বার্সা। অনেকটা ফাকা পেয়ে বক্সে ঢুকে পড়েন রাফিনহা। তবে তার নেওয়া জোরালো শট বারে লেগে ফিরে আসলে বক্সের মধ্যেই বল পেয়ে যান ক্যানসেলো। সময় নিয়ে সোজাসুজি শটে নাপোলির গোলরক্ষককে বোকা বানান এই ২৯ বছর বয়সী তারকা। বার্সার জার্সিতে এই মৌসুমে এটি ছিল পর্তুগিজ খেলোয়াড়ের চতুর্থ গোল।

১৮তম মিনিটে এবার নাপোলি ভালো সুযোগ পায়। তবে ওসিমেনের নেওয়া শট বা দিকে ঝাপিয়ে দারুণ প্রচেষ্টায় কর্নারের বিনিময়ে ঠেকিয়ে দেন মার্ক আন্দ্রে টার স্টেগান। ৩১ বছর বয়সী জার্মান গোলরক্ষক এদিন আরও বেশ কয়েকটি সেভ করেছেন। তবে গোলপোস্ট অক্ষত রাখতে পারেননি তিনি। ৩১ তম মিনিটে এক গোল পরিশোধ দেয় নাপোলি। মাতেও পলিটানোর পাস থেকে স্কোরলাইন ২-১-এ নামিয়ে আনেন কসোভোর সেন্টারব্যাক আমির রহমানি।

নাপোলি সমতায় ফিরতে পারতো ৩৪তম মিনিটেই। কিন্তু বার্সার গোলরক্ষকের দৃঢ়তায় সেটি হয়নি। ডি লরেঞ্জোর ভাসানো বলে গোলে হেড নেন মারিও রুই। তবে কর্নানের বিনিময়ে বক্সের ওপর দিয়ে বল বাইরে ঠেলে দেন স্টেগান। এ যাত্রায় বেঁচে যায় বার্সেলোনা। শেষ পর্যন্ত ২-১ গোলের লিড নিয়ে বিরতিতে যায় জাভি হার্নান্দেজের শিষ্যরা।

বিরতির পর ফিরেই গোলের সুযোগ পায় বার্সেলোনা। ৫৮ মিনিটে ওয়ান টু খেলে দারুণ বোঝাপাড়ায় বা প্রান্ত দিয়ে আক্রমণে ওঠেন রাফিনহা ও ক্যানসেলো। যদিও তাদের দারুণ আক্রমণ মুখ থুবড়ে পড়ে অ্যালেক্স মেরেতের সামনে। এরপর ৬৭ ও ৬৮ মিনিটে জোড়া সেভ করেন ইতালিয়ান এই গোলরক্ষক। পুরো ম্যাচে মোট ৬টি সেভ করেছেন তিনি।

৮৩ মিনিটে নাপোলির ফেরার সম্ভাবনা ধুলিস্মাত করে দেন লেভানডফস্কি। সার্জি রবার্তোর পাসে স্কোরলাইন ৩-১ করেন এই পোলিশ তারকা। শেষ পর্যন্ত ব্যবধান ধরে রেখে মাঠ ছাড়ে জাভি হার্নান্দেজের দল।