তামিমের বিধ্বংসী সেঞ্চুরিতে কুমিল্লার রানপাহাড়

কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের শুরুটা যেমন হয়েছিল, কেউ কি ধারণা করতে পেরেছেন এই দলটি দুইশ ছুুঁইছুঁই পুঁজি গড়ে ফেলবে? ৭ ওভার শেষে দলের রান ছিল ১ উইকেটে ৪৪। অষ্টম ওভারে এসে কাজী অনিক দুর্দান্ত এক ডেলিভারিতে তামিম ইকবালকে প্রায় আউটই করে ফেলেছিলেন। উইকেটরক্ষক সোহান একটুর জন্য ক্যাচটি ধরতে পারেননি।

পরের ওভারে রুবেল হোসেনের বলেও আন্দ্রে রাসেল ক্যাচ নিলে সেটা মাটিতে লেগে যায়। লাগবেই বা না কেন? দিনটা যে ছিল তামিমেরই। পরের এক দুই ওভার পেরুতেই ধীরে ধীরে খোলস ছেড়ে বের হতে থাকলেন বাঁহাতি এই ওপেনার। তাণ্ডব চলল একদম ইনিংসের শেষ পর্যন্ত।

৬১ বলে হার না মানা ১৪১ রান! ভাবা যায়, কোনো টি-টোয়েন্টি ম্যাচে এটা কোনো ব্যাটসম্যানের ইনিংস। তামিম এই অতিমানবীয় ইনিংসটা খেললেন। তাতেই ফাইনালের মতো বড় মঞ্চে তিনবারের চ্যাম্পিয়ন ঢাকা ডায়নামাইটসের বিপক্ষে ৩ উইকেটে ১৯৯ রানের পাহাড় গড়েছে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স।

মিরপুরের শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে শুক্রবার (৮ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যা ৭টায় চলতি আসরের ফাইনাল ম্যাচে মুখোমুখি হয়েছে ঢাকা ডায়নামাইটস ও কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। এই ম্যাচে টসে জিতে ফিল্ডিং বেছে নেন ঢাকার অধিনায়ক সাকিব আল হাসান।

শুরুতে ব্যাট করতে নেমে ৯ রানেই ওপেনার এভিন লুইসের উইকেট হারায় কুমিল্লা। কিন্তু অপর প্রান্ত আগলে রীতিমত ছড়ি ঘুরাতে থাকেন তামিম ইকবাল। মাঝে আনামুল ৩০ বলে ২৪ রানের ইনিংস খেলে বিদায় নেন আনামুল। শামসুরও বিদায় নেন ০ রানে। কিন্তু ব্যাটে স্ট্রোকের ফুলঝুরি ছুটিয়ে যেতে থাকেন তামিম।

নিজের প্রথম বিপিএলে ফাইনালে কি ব্যাটিংটাই না করলেন তামিম। ঢাকার বোলারদের নিয়ে রীতিমত ছেলেখেলা করলেন তিনি। ৬১ বলের ইনিংসে করলেন অপরাজিত ১৪১ রান। বাউন্ডারি ১০টি আর ছক্কা হাঁকালেন ১১টি! স্ট্রাইক রেট ২৩১.১৪। 

এটি বিপিএলে তামিমের প্রথম সেঞ্চুরি। আর চলতি আসরের ষষ্ঠ। সবমিলিয়ে এটি বিপিএলের ১৮তম। তামিমের এই ইনিংস বিপিএলের ইতিহাসে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। এর আগে ২০১৭ সালের আসরে রংপুর রাইডার্সের হয়ে ঢাকা ডায়নামাইটসের বিপক্ষে অপরাজিত ১৪৬ রানের ইনিংস খেলেছিলেন ক্যারিবীয় তারকা ক্রিস গেইল।

তামিমের সঙ্গ দিয়ে শেষ পর্যন্ত ২১ বলে ১৭ রান নিয়ে মাঠ ছাড়েন কুমিল্লার অধিনায়ক ইমরুল কায়েস। তবে তামিমের সঙ্গে তার ১০০ রানের জুটি কুমিল্লাকে বড় সংগ্রহ এনে দিতে মূল ভূমিকা রাখে।

বল হাতে ঢাকার বোলারদের অবস্থা ছিল সঙ্গিন। ১ উইকেট পেতে সাকিব খরচ করেছেন ৪৫ রান আর ৪৮ রান খরচ করেছেন রুবেল হোসেন। একমাত্র ব্যতিক্রম ক্যারিবীয় স্পিনার সুনীল নারাইন। ৪ ওভার বল ঘুরিয়ে উইকেট না পেলেও মাত্র ১৮ রান খরচ করেছেন তিনি।