৪০০ পুরুষের লিঙ্গচ্ছেদ করে দাসীদের পাহারায় লাগিয়েছিলেন রাম রহিম

ধর্ষণের অভিযোগে ১০ বছরের জেল হয়েছে ডেরা সাচা সওদার প্রধান গুরমিত রাম রহিমের। ভারতীয় স্বঘোষিত এই ‘বাবা’র ডেরায় আরও কি ভয়ংকর ঘটনা ঘটতো সেই তথ্য ‍তুলে উঠে এসেছে দেশটির সংবাদমাধ্যমগুলোতে। নারী ধর্ষণ, হত্যাসহ পুরুষদের লিঙ্গচ্ছেদের অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে।

‘পিতাজি কি মাফি’ অর্থাৎ বাবার ক্ষমা নামে একটি সেশন করাতেন রাম রহিম। সেই অনুযায়ী একটি গোপন গুহাতে নিয়ে যাওয়া হতো অনুসারীদের। সেখানে অন্তত দুইজনের হত্যার কথা শোনা যায়। এমএসজি: মেসেঞ্জার অফ গড নামের বিতর্কিত ছবি মুক্তি পাওয়ার আগে অভিযোগ উঠে ডেরার আশ্রমে প্রায় ৪০০ পুরুষের জোর করে লিঙ্গচ্ছেদ করা হয়েছে।

এমন নির্যাতনের শিকার হান্সরাজ চৌহান নামে এক যুবক। তিনি বলেন, ২০০০ সালে ১৯ বছর বয়সে সেখানে নির্যাতনের শিকার হন তিনি। পেপসির সঙ্গে তাকে ড্রাগ দেওয়া হয়। দুইদিন ধরে অচেতন হয়ে ছিলেন তিনি। জেগে উঠার পর নিজের পুরুষাঙ্গে ব্যান্ডেজ পরিহিত দেখেন। এরপর বিগত ১৭ বছরে তিনি যেকোনও শারীরিক সম্পর্কে সক্ষম ছিলেন না।
আর এই বিষয়ে আরও শত শত অনুসারীর সঙ্গে হয়েছে। যাদের ওষুধ দিয়ে অচেতন করা হয়েছিলো। জেগে উঠার পর এমন পরিণতি দেখেছেন অনেকেই। তাদের বোঝানো হয়েছে এর মাধ্যমে ইশ্বরের আরও কাছে পৌঁছতে পারবেন তারা। বর্তমানে এসব অভিযোগ নিয়ে কাজ করছে সিবিআই।

ডেরায় এতকিছু হয়ে গেলেও কোনও অভিযোগ পাওয়া যায়নি। কোনও নারী ধর্ষণের শিকার হলে তাকে আবেগ দিয়ে চুপ থাকতে বাধ্য করা হয়েছে। পুরুষের নির্যাতনে ক্ষেত্রে নেওয়া হয়েছে অন্য ব্যবস্থা। মাদক ও ওষুধ প্রয়োগে বন্ধ করে রাখা হয়েছিলো তাদের মুখ। ওষুধের কারণে নিজেদের উপর কোনও নিয়ন্ত্রণ ছিলো না তাদের। হারিয়ে ফেলেছিলেন মানসিক ভারসাম্য।
আশ্রমে নারীরা কোনওরকম মোবাইল ফোন ব্যবহার করতে পারতেন না। ছিলো না কোনও সংবাদপত্রের ব্যবস্থাও। এমন কড়া ব্যবস্থা থাকলেও এখানে থাকা-খাওয়ার কোনও খরচ ছিলো না। আশ্রমে তৈরি সবজি ও দুধ বিক্রি করে তাদের খরচ যোগাড় করা হতো। কোটি কোটি টাকায় বিক্রি হতো সেখানকার ফুলকপি।

এছাড়া রাম রহিমের বিরুদ্ধে বেশকিছু অভিযোগ উঠেছে আগে। ২০০২ সালের নভেম্বরে রাম রহিমের বিরুদ্ধে ৫৩ বছরের এক সাংবাদিককে হত্যার অভিযোগ উঠে। পুরা সাচ (পুরোই সত্য) নামের একটি পত্রিকার সম্পাদক ছিলেন ওই সাংবাদিক। মামলাটি এখনও সিবিআই’র বিশেষ আদালতে রয়েছে। ২০০৭ সালের মে মাসে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের অভিযোগ ওঠে রাম রহিমের বিরুদ্ধে। পাঞ্জাবের গুরু গোবিন্দ সিংকে অনুকরণ করে পোশাক পরিধানের অভিযোগে এই মামলা দায়ের করা হয়।
২০১০ সালে ডেরার এক সাবেক কর্মীকে হত্যার অভিযোগ উঠে। সিবিআই-র প্রতিবেদনে এই অভিযোগের কোনও প্রমাণ পাওয়া যায়নি।

বাংলাদেশ সময়: ১০৪৮ ঘণ্টা, ২৯ আগস্ট ২০১৭

লেটেস্টবিডিনিউজ.কম/এসপি