ভারতের স্বঘোষিত ধর্মগুরু রাম রহিমের ২০ বছর কারাদণ্ডের পর তার স্ত্রী এখন চর্চার মধ্যমণি হয়ে দাঁড়িয়েছেন। স্বামী না হয় তাকে কোনদিন দেশ বা দশের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেননি। তবে আশ্রমে কী হচ্ছে, না হচ্ছে, তা নিশ্চয়ই তার কাছে অজানা ছিল না? সব জেনেও কি তাহলে তিনি চুপ ছিলেন? স্বামীর সঙ্গে তর্ক তো দূরের কথা টুঁ শব্দটিও করেননি?
স্ত্রী, ছেলে, মেয়ে নিয়ে ছিল রাম রহিমের সংসার। ঘর বেঁধেছিলেন মাত্র ১৭ বছর বয়সে। তবে হঠাৎ এমন কী হল? পাততাড়ি গুটিয়ে তিনি কেন ‘ভগবান’ বনে বসলেন?
স্বঘোষিত ভগবান রাম রহিম সিংয়ের ব্যক্তিগত জীবন রহস্যে মোড়া। আগে আজতকের সঙ্গে একটি সাক্ষাৎকারে তিনি সেই রহস্য থেকে খানিক পর্দান্মোচন করেছিলেন। তিনি জানিয়েছিলেন তার স্ত্রী, বাবা মায়ের কথা। নাবালক অবস্থায় হঠাৎ কেন বিয়ে করলেন রাম রহিম?
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এবেলাতে প্রকাশিত হয়েছে সেই আখ্যান।
প্রতিবেদন বলছে, রাম রহিমের বাবা মা বিয়ের ১৮ বছর পর্যন্ত অপুত্রক ছিলেন। হাজার চেষ্টা করেও তাদের কোন সন্তান সন্ততি হয়নি। শেষমেশ তারা ডেরা সচ সৌদার সাধু ত্রিবেণী দাসের স্মরণাপন্ন হন। ত্রিবেণী দাস তাদের বলেন, পুত্রসুখ তারা পাবেন। কিন্তু ভোগ করতে পারবেন না। ছেলের যখন ২৩ বছর হবে, তখন ভগবান তার ভাগ্যে যা লিখেছেন, তাই করতে হবে। তাতেই সম্মত হন রাম রহিমের বাবা মা। বাবা জানতেন ছেলে ২৩ বছরে গৃহস্থ্য ধর্ম ত্যাগ করবেন। তাই তড়িঘড়ি তিনি ছেলের বিয়ে দিয়ে দেন।
ক্লাস টেনের পরই স্কুলের পাঠ বন্ধ করে দেন রাম রহিম’। তারপরই তিনি গাঁটছড়া বাঁধেন। মেয়ের নাম ছিল হরজিৎ কউর। বিয়ের পর মন দিয়ে সংসারধর্ম পালন করেন তিনি। দুই মেয়ে ও এক ছেলে হয় তার। তাদের নাম অমরপ্রীত, চরণপ্রীত ও জসমীত সিং।
ডেরা সচ সৌদার অনুগামীদের দাবিকে উদ্ধৃত করে এইবেলার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যখন রাম রহিম সংস্থার জন্য নিজেকে উৎসর্গ করেন, তখন থেকেই হরজিৎ ডেরারই সদস্যা। সংগঠনের আশ্রমেই থাকেন তিনি। স্থানীয় কিছু সংবাদমাধ্যমেও এমন দাবি করা হয়।
স্বামী তার ‘ভগবান’। ‘ভগবান’-এর স্ত্রী হয়ে তো আর আয়েশে আরামে জীবন কাটানো যায় না। হরজিৎ তা করেনওনি। তিনি আশ্রমে থাকেন খুব সাধারণভাবে। সাধারণ জামাকাপড় পরেন। আশ্রমের সমস্ত নিয়মকানুন কঠোরভাবে পালন করেন তিনি। সবার সঙ্গে মিশে থাকাতেই তার আনন্দ।
মাঝেমধ্যে নাকি এমনও হতো, ডেরার সদস্যরা জানতেই পারতেন না তিনি তাদের ‘ভগবান’-এর স্ত্রী। স্পটলাইট তার মোটেও পছন্দ নয়। তাই রাম রহিম যখন ভক্তদের আশা-আকাঙ্খা পূরণ করতেন বা কোন অনুষ্ঠানে যেতেন, হরজিৎ সেখানে থাকতেন না। নিজেকে তিনি সম্প্রদায়ের কাজে ব্যস্ত রাখতেন। তবে হাজার হোক স্ত্রী তো। তাই কচিৎ কদাচিৎ কোনও অনুষ্ঠানে তাকে চোখে পড়ে যেত।
বাংলাদেশ সময়: ১৩৪১ ঘণ্টা, ২৯ আগস্ট ২০১৭
লেটেস্টবিডিনিউজ.কম/এসডিএম
