বিশ্বব্যাংকের পরবর্তী প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকন্যা?

বিশ্বব্যাংকের বর্তমান প্রেসিডেন্ট জিম ইয়াং কিম হঠাৎ নতুন বছরের প্রথমেই পদত্যাগের ঘোষণা দেন, সেই ঘোষণা অনুযায়ী আগামী ২ ফেব্রুয়ারি থেকে তিনি আর বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট থাকছেন না। তবে খবর এটা নয়, শুক্রবার দ্য ফিন্যান্সিয়াল টাইমস এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কন্যা ও জ্যেষ্ঠ উপদেষ্টা ইভানকা ট্রাম্প নাকি হতে যাচ্ছেন বিশ্বব্যাংকের নতুন প্রেসিডেন্ট!

দ্য ফিন্যান্সিয়াল টাইমস তাদের সেই রিপোর্টে লিখেছে, ওয়াশিংটন জুড়েই বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট হিসেবে ইভানকার নাম ভেসে বেড়াচ্ছে। বলা বাহুল্য ইভানকার বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট হওয়ার সম্ভবনা নিয়ে এরইমধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ হাসাহাসি হচ্ছে।

বাবা ডোনাল্ড ট্রাম্পের মতো ইভানকাও রাজনৈতিক কাজের চেয়ে ব্যক্তিগত কাজের জন্য বেশি আলোচিত। তার বাবা ট্রাম্প ২০১৭ মার্কিন যুক্তরাষ্টের ৪৫ প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার দৌড় শুরু করার পর থেকেই ইভানকা আছেন আলোচনায়, এমনকি কথিত এমনও আছে যে তার সৎ মা মেলানিয়ার ব্যস্ততার সুযোগ নিয়ে ইভানকাই আমেরিকার ফার্স্ট লেডির ভাবগতিক নিয়ে ঘুরতেন। এই সমলোচনা এতদূর গিয়েছিল যে ইভানকাকে বক্তব্য দিয়ে বলতে হয়েছে, ফার্স্ট লেডি হওয়ার কোনো মনোবাসনা তার নেই।

প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প তার প্রথমপক্ষের এই সন্তানকে ২০১৭ সালের ২৯ মার্চ প্রেসিডেন্টের উপদেষ্টা পদে নিয়োগ দেন। এটা যুক্তরাষ্ট্রের একটি সরকারি পদ। তবে ইভানকা এখান থেকে কোনো বেতন নেন না, তেমনি মানেন না কোনো নিয়ম-কানুনও। দিব্যি নিজের ব্যক্তিগত ইমেইল দিয়ে সরকারি কাজ সেরে ফেলেন।

এতসব নিয়মকানুনের তোয়াক্কা না করা একজনকে আমেরিকান রাজনীতির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট মানুষরা যে পছন্দ করবে না এ তো স্বাভাবিক বিষয়। হঠাৎ এখন আবার নতুন করে ইভানকার বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট হওয়ার খবর চাউর হওয়ায় সমালোচনা জেগে উঠেছে, খবর দ্য গার্ডিয়ানের।

ক্যালেফর্নিয়ার কংগ্রেসম্যান টেড লিউ ইভানকাকে নিয়ে উপহাস করে টুইটারে লিখেছেন, ‘আমেরিকার এত মানুষের মধ্যে কে বিশ্বব্যাংকের পরবর্তী প্রেসিডেন্ট হতে পারে?’ জবাবটাও দিয়েছেন নিজেই, ‘সবচেয়ে যোগ্য ইভানকা ট্রাম্প, যে নিজের ফ্যাশান ব্যবসাতেই মার খেয়েছে আর ঘটনাক্রমে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের কন্যা, আচ্ছা!’

কংগ্রেসম্যানরা যেখানে তোয়াক্কা করছে না বিপক্ষ দল ডেমোক্রেটদের ক্ষেত্রে তার প্রশ্নই উঠে না। ডেমোক্রেট দলের একজন ডোনার টম স্টেয়ার বলেছেন, এটা আমার শোনা সবচেয়ে বিরক্তিকর প্রস্তাব, স্বজনপ্রীতি দুর্নীতিরই আরেকরূপ। আমি মোটেই অবাক হইনি। তবে এটা অবিশ্বাস্য রকমের অযৌক্তিক।

তবে ঘটনা হচ্ছে, ইভানকার বাবা ডোনাল্ট ট্রাম্প কবেই বা কার কথায় কান দিয়েছিলেন? এই কন্যাকেই তিনি একবার নিজের কোম্পানির পরিচালকের পদ থেকে নামিয়ে দিয়েছিলেন। একেই আবার নিজের উপদেষ্টা করেছেন। এখন ইভানকার ইউনিভার্সিটি অব পেনসুলভেনিয়ার ওয়ারথন স্কুলের ইকনোমিক্সের ডিগ্রি আসলেই তাকে বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট করে দেয় কি-না তা এখন সময় বলে দিবে। তবে কথিত আছে, ডোনাল্ড ট্রাম্প মেয়ে ইভানকা এবং জামাই জারড কুশনারকে ঘুরিয়ে ফিরেয়ে এমন সব পদে কাজ করিয়েছেন যার অভিজ্ঞতা সচরাচর বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট প্রার্থীদের থাকে। যদিও বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ মতামত দিবে তবে ইতিহাস বলে এখানে মার্কিন প্রেসিডেন্টের পছন্দই চূড়ান্ত যোগ্যতা।

এইসব আলোচনার স্ফুলিঙ্গে বারুদ ঢেলেছে হোয়াইট হাউজের অভ্যন্তরীণ বিষয় নিয়ে লেখা বই, ফায়ার অ্যান্ড ফুরির লেখক মাইকেল উলফ। তিনি লিখেছেন, ইভানকা তার বাবার থেকে এই নিয়োগের চেয়েও বিশাল কিছুর প্রত্যাশা করছে, সেটা হলেও হতে পারে আমেরিকার প্রথম নারী প্রেসিডেন্টের পদ!

লেটেস্টবিডিনিউজ.কম/বিএনকে

Scroll to Top